হাওড়া , ২৮ মার্চ:- করোনা মোকাবিলায় দেশ জুড়ে লকডাউন পরিস্থিতিতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়া শিশুর প্রাণ সংশয় হতে বসেছিল। হাসপাতালে দ্রুত পৌঁছাতে যে গাড়ি দরকার তাও ছিল অমিল। চেষ্টা করে অ্যাম্বুলেন্সও মিলছিল না। তখনই যেন ঠিক দেবদূতের মতো সেখানে এসে পৌঁছান থানার বড়বাবু। বিষয়টি জানা মাত্রই তিনি নিজেই অসহায় ওই শিশু ও তার পরিবারকে রাস্তা থেকে তুলে নেন নিজের গাড়িতে। দ্রুত শিশুটিকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। এদিকে, সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছে যাওয়ায় শিশুটির দ্রুত চিকিৎসা শুরু হয় হাসপাতালে। প্রাণ সংশয় কেটে যায় তার। লকডাউনের শহরে এই ঘটনা হাওড়ার চ্যাটার্জিহাটে। পুলিশের মানবিকতায় প্রাণে বাঁচে আট বছরের ওই শিশু কন্যা। জানা গেছে, হাওড়ার মহেন্দ্র ভট্টাচার্য রোডের বাসিন্দা বাপ্পা দাসের শিশুকন্যা শুক্রবার হঠাৎই পেটের যন্ত্রণায় কাতরাতে শুরু করেছিল। যন্ত্রনায় মাঝে মাঝে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলছিল সে।
প্রথমে এগিয়ে আসেন পাড়ার লোকজন। অ্যাম্বুলেন্সের খোঁজ শুরু হয়। হন্যে হয়ে অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও মেলেনি অ্যাম্বুলেন্স। বিভিন্ন নার্সিংহোমের একটিও অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন শিশুটির পরিবার। ঠিক সেই সময় এলাকায় লকডাউনের পরিস্থিতি দেখতে আসেন চ্যাটার্জীহাট থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সুবীর কুমার ঢালী। ঘটনার কথা জানতে পেরে তিনি গাড়ি থেকে নেমে নিজের গাড়িতে তুলে দেন যন্ত্রনায় কাতর শিশুটিকে। শিশুটির পরিবারকে গাড়িতে তুলে পাঠানো হয় কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে। এরপর হাসপাতালে চিকিৎসকেরাও দ্রুত শিশুটির চিকিৎসা শুরু করেন। শিশুটির পরিবার সূত্রের খবর, চিকিৎসকেরা জানান শিশুটি অ্যাপেন্ডিসাইটিসের যন্ত্রনায় কাতর। হাসপাতালে আনতে দেরি করলে প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটতেও পারত। দ্রুত চিকিৎসা শুরু হয় শিশুটির। আজ শনিবার অস্ত্রোপচার হবে তার। শিশুটির বাবা বাপ্পা বাবু জানান, থানার বড়োবাবু এসে সাহায্য না করলে আমার একমাত্র মেয়েকে চিরজীবনের মতো হারিয়ে ফেলতাম। শুধু হাসপাতালে পাঠিয়েই ক্ষান্ত হননি ওই পুলিশ আধিকারিক। শিশুটির চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করে যেন ফেরেন সেই নির্দেশও দেন তাঁর গাড়ির চালককে। বড়োবাবুর কথামতো শিশুটির পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করে থানার বড়োবাবুর চালক সৌরভ। সৌরভবাবুর দাবি অনেকদিন ধরেই অনেক পুলিশ আধিকারিকের গাড়ি চালিয়েছি, তবে আজ যে মানবিক মানুষটিকে দেখলাম তাতে পুলিশের গাড়ির চালক হিসাবে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। সুবীরবাবু নিজেও খুব খুশি শিশুর পরিবারের পাশে সময়মতো দাঁড়াতে পেরে।