এই মুহূর্তে জেলা

চায়ের দোকান চালিয়েই পড়াশুনা , সুফিয়ার স্বপ্ন ডাক্তার হবার।

হুগলি,৪ মার্চ:-  ছোট্ট বেলাতেই চা বানানো শিখেছিল দিদার কাছ থেকে। বলতে গেলে গোটা শৈশব কেটেছে ওই চায়ের দোকানেই। তার পর থেকে ধীরে ধীরে গোটা চায়ের দোকানের দ্বায়িত্ব একাই সামলে চলেছে সুফিয়া সামিম। শুধু চায়ের দোকান চালানো নয় একইসঙ্গে সমান তালে চালাচ্ছে পড়াশুনাও। মগড়াতেই একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ক্লাস সিক্সের ছাত্রী সুফিয়া।  লড়াই শুরু হয়েছিলো জন্মের পর থেকেই। মানসিক ভারসাম্যহীন মাকে রাখতে চায়নি বাবা। মাত্র ছয় মাস বয়সেই ঠাঁই নিতে হয়েছিল দিদার কাছে। সেই থেকেই লড়াই শুরু। মগড়া জিটি রোড সংলগ্ন ছোট্ট চায়ের দোকানটাই হয়ে উঠেছিল তাঁর কাছে সবকিছু। 

There is no slider selected or the slider was deleted.

স্বপ্ন পড়াশুনা করে ডাক্তার হতে চায় সে। দিদা রেহানা বিবির বয়স হয়েছে, তাই নানান রোগ বাসা বেঁধেছে শরীরে। তাই প্রায়ই শরীর খারাপ থাকে। মা মানসিক রোগি। দিদা মায়ের জন্য তো বটেই একইসঙ্গে গরীব মানুষ যারা ভালো চিকিৎসা পায় না, তাদের সেবা করার জন্যও ডাক্তার হতে চায় সুফিয়া। তাই চায়ের দোকানে খরিদ্দার সামলানোর ফাঁকেই আবার মন দিয়ে চালিয়ে যায় পড়াশুনা। মগড়া ভেরিকুঠি এলাকায় জিটি রোডের পাশে বছর পঁচিশের চায়ের দোকান রেহানা বিবির। বড় মেয়ে রাবিয়া খাতুনের বিয়ে দেন কাঁকিনাড়ায় মহঃ সামিমের সঙ্গে। বিয়ের দুই বছরের মধ্যেই নানান অশান্তি, মেয়েকে তাড়িয়ে দেওযা হয় শ্বশুরবাড়ি থেকে। তার পর থেকে মেয়ের সঙ্গে নানতির দ্বায়িত্বও কাঁধে এসে পরে। চায়ের দোকান চালিয়ে আরো তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন রেহানা বিবি।

There is no slider selected or the slider was deleted.

কখনও দারিদ্র পিছু ছাড়েনি, তবু নাতনিকে পড়াশুনার বিষয়ে উৎসাহ দিতে কখনও পিছপা হননি। তিনি চান, সুফিয়া অনেক পড়ুক, বড় মানুষ হয়ে উঠুক। তাই যতদূর পড়তে চায় পড়াবেন নানতির লক্ষ পূরনে চেষ্টা করবেন। তাই সংসারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে লড়াই করে চলেছে বছর এগারোর সুফিয়া। আর এই জীবন যুদ্ধের খবর ছড়িয়ে পড়তেই তাঁর পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন স্থানীয় অনেকেই। স্থানীয় সন্দীপ সাধুখান জানিয়েছেন, সুফিয়ার পড়াশুনা যাতে কোনও ভাবেই বন্ধ না হয়, তাই সব রকম সাহায্য করতে তিনি প্রুস্তুত।

There is no slider selected or the slider was deleted.