এই মুহূর্তে জেলা

বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে চোখে জল নিয়ে মঙ্গলবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিল বড় মেয়ে।

 

মালদা,২৫ ফেব্রুয়ারি:-  এক লহমায় সব যেন পাল্টে গেল। মঙ্গলবার ভোর পর্যন্তও বাড়ির সকলে অন্য দিনের মতোই আনন্দে ছিল। বেশি আনন্দে ছিল বড় মেয়ে রিঙ্কি রায়। বুধবার মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হচ্ছে। কিন্তু দুর্ঘটনায় বাবার মৃত্যুর খবর সব আনন্দ মাটিতে মিশে গেল। আকাশ ভেঙে পড়ল বাড়িতে। বুকফাটা কান্নার রোল তখন। এই অবস্থায় বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে চোখে জল নিয়ে মঙ্গলবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিল বড় মেয়ে। এই ঘটনায় হতবাক স্কুলের শিক্ষক-‌শিক্ষিকারাও। পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতে ফিরে বাবাকে শেষ শ্রদ্ধা জানায় মেয়ে রিঙ্কি রায়। এই অবস্থায় বুধবার শেষ পরীক্ষার জন্য কতটা প্রস্তুতি নিতে পারবে, তা ভেবেই পাচ্ছে না কেউ।

There is no slider selected or the slider was deleted.

                                                                                                                                                                                                                                            মৃত বাবার নাম অখিল রায়(‌৪৬)‌। গাজোল থানার আলাল গ্রাম পঞ্চায়েতের আহোরা গ্রামে বাড়ি তাঁর। পেশায় তিনি চাষি। স্ত্রী রীণা ও ২ মেয়ে রিঙ্কি ও পিঙ্কিকে নিয়ে ছিল তাঁর সংসার। এদিন সকালে নিজের জমির ঢ্যাঁড়শ নিয়ে বাজারে যাচ্ছিলেন। আহোরা মোড়ের কাছে তিনি গাড়ি ধরবেন বলে ঢ্যাঁড়শের ঝুড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই সময় একটি ভারী গাড়ি তাঁকে ধাক্কা মেরে পালায়। এদিন সকাল ৭টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিকে মৃত্যুর খবর পাওয়া মাত্রই বাড়িতে আকাশ ভেঙে পড়ে। জানা গেছে ২ মেয়ের মধ্যে বড় রিঙ্কি, ছোট পিঙ্কি। পিঙ্কি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। রিঙ্কি আহোরা বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠ থেকে এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। তার পরীক্ষা কেন্দ্র শিউচাঁদ পরমেশ্বরী বিদ্যা মন্দির।

There is no slider selected or the slider was deleted.

                                                                                                                                                                                                                                               সব পরীক্ষা মোটামুটি ভালই দিয়েছে সে। এদিন যদিও বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে পরীক্ষা দেবে না বলে একরকম বেঁকে বসেছিল। পরে পরিবারের সদস্যারা বুঝিয়ে তাকে রাজি করানো হয়। পরীক্ষা কেন্দ্রে সঙ্গে করে নিয়ে যান জ্যেঠতুতো দাদা জীবন রায়। পরীক্ষা শেষে তিনি তাঁর মোটর বাইকে করে আবার বাড়ি নিয়ে আসেন। এদিন ছিল ভৌত পরীক্ষা। পরীক্ষা এররকম দিয়েছে বলে জানিয়েছে রিঙ্কি। তার এক আত্মীয় নরেশ সরকার বলেন,‘‌বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে সবাই মিলে রিঙ্কিকে রাজি করিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এর আগের পরীক্ষাগুলি মোটামুটি ভালই দিয়েছে সে। সবই দুর্ঘটনা। ভোর পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। তারপর মুহুর্তে সব পাল্টে যায় কেমন যেন। যাই হোস সবাই ওদের পাশে রয়েছি আমরা।’‌

There is no slider selected or the slider was deleted.