মালদা,১৭ ফেব্রুয়ারি:- ১০০ দিনের কাজ সমব্যাথী প্রকল্পের টাকা এন এফ বি এস প্রকল্পের টাকা ইন্দ্রা আবাসন এর টাকা প্রবৃত্তি না পেয়ে এবং কাঠ মানি নেওয়ার অভিযোগে চাচোল ১ নম্বর ব্লকের মহানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা। এদিন প্রায় এই গ্রাম পঞ্চায়েতের হাজারখানেক বাসিন্দা সকাল থেকেই বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে পঞ্চায়েত অফিস ঘেরাও করে। তাদের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে তারা পঞ্চায়েতের কোন প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন না। ১০০ দিনের কাজের গ্রামবাসীদের যুক্ত করা হচ্ছে না। এন এফ বি এস প্রকল্প সমব্যথী প্রকল্প প্রভৃতি সুযোগ-সুবিধা কিছুই মিলছে না দীর্ঘদিন যাবত। ইন্দিরা আবাস যোজনায় পাকা বাড়ি করে দেওয়ার নাম করে কাটমানি তোলা হচ্ছে কিন্তু টাকা দিয়েও বাড়ি মিলছেনা এলাকাবাসীদের। এমনই সব অভিযোগের তুলে আর সকাল থেকেই মহানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে বাসিন্দারা। এলাকার বাসিন্দা লক্ষীবালাদাস জানালেন তার স্বামী মারা যাওয়া তিন বছর হয়ে গেছে কিন্তু এখনো তিনি পঞ্চায়েত থেকে সমব্যাথী প্রকল্পের টাকা পাননি। মেলেনি ১০০ দিনের কোন কাজের টাকা। তার জব কার্ড রয়েছে। এলাকার বাসিন্দা জুলেখা বেওয়া জানালেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তার কাছে থেকে ইন্দিরা আবাস এর পাকা ঘর দেওয়ার নাম করে ১০ হাজার টাকা নিয়ে নিয়েছে। কিন্তু বছর গড়িয়ে গেল এখনো পর্যন্ত তিনি ঘর পাননি। এখন ওই বাবুল প্রধান নামে ওই সদস্যের কাছে টাকা চাইতে গেলে তিনি টাকা ফেরত পাচ্ছেন না উল্টে খারাপ ব্যবহার করে পঞ্চায়েত থেকে তাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুললেন বৃদ্ধা। ঘরের আশায় টাকা খুইয়ে এখন ভাঙ্গা ঘরে দিন কাটাচ্ছেন ঐ মহিলা।
মহানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঠানপাড়া এলাকার মজনুন বিবি ও পসিনা বিবি রা অভিযোগ করেন তারা দীর্ঘদিন ধরে এই পঞ্চায়েত থেকে কোন ১০০ দিনের কাজ পাচ্ছেন না কোন ভাতাও মিলছে না। তাদের স্বামী অসুস্থ হয়ে বিছানায় কর্মক্ষম হয়ে পড়ে আছেন। পঞ্চায়েত থেকে বহুবার কাজের জন্য আবেদন করেছেন কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। উল্টে ভাতা ১০০ দিনের কাজের টাকা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে কাটমানি চাওয়া হচ্ছে তাদের কাছ থেকে। এমত অবস্থায় প্রায় না খেয়ে দিন গুজরান করতে হচ্ছে। তাই তারা এ সমস্ত অভিযোগের সুরাহা করতে আজ পঞ্চায়েত ঘেরাও করেছেন। যতক্ষণ তাদের সমস্যার সমাধান হবে না তারা তাদের বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন। পঞ্চায়েত তালা ঝুলানো থাকবে। এদিন মহানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বিক্ষোভের জেরে কর্মীদের উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়নি। এরপর চাচল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন।তাদের মধ্যস্থতায় মহানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণ আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে মহানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গোপাল চৌধুরী জানান অভিযোগকারীরা যে সমস্ত অভিযোগ করছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তিনি জানান এলাকার ১৫ টি বুথে তিনি ১০০ দিনের মাটিকাটা কাজের প্রস্তাব দিয়ে দেখেছেন কিন্তু স্থানীয়ভাবেই সেই কাজের জন্য কোন উৎসাহ দেখা যাচ্ছে না তাই কাজ গুলি করা যাচ্ছে না। এছাড়াও বিধবা ভাতা বার্ধক্য ভাতা ইন্দিরা আবাস যোজনার টাকা নিয়ে যে সমস্ত অভিযোগ বিক্ষোভকারীরা করছেন তা নিয়েও কোন লিখিত অভিযোগ তিনি পাননি। এছাড়াও আবাস যোজনায় ৪৪৬ জনের টাকা এসেছিল তাদের সবাইকেই টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সেই টাকা দিয়ে তারা মাটি ভরাটের কাজও করে নিয়েছেন। এলাকার তৃণমূলের সদস্যরাই এই কংগ্রেসের বডির উপর বদনাম করার জন্য এই সমস্ত অভিযোগ নিয়ে আসছেন এগুলো সমস্ত ভিত্তিহীন অভিযোগ। আজ বিক্ষোভকারীরা তালা ঝুলিয়ে পঞ্চায়েতের কাজের দেখা যাচ্ছে তা সম্পূর্ণ বিরোধী বলে জানালেন পঞ্চায়েত প্রধান গোপাল চৌধুরী। এদিকে আরও অভিযোগ ছিল বেনিফিশিয়ারি জমিতে কোন কলা গাছ না লাগিয়ে সম্পূর্ণ প্রকল্পের টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগের উত্তরে পঞ্চায়েত প্রধান জানান বিগত দিনের পঞ্চায়েত বডির পাস করা প্রকল্পের উপরই তিনি ওই কলাবাগান প্রকল্পের টাকা মঞ্জুর করেছিলেন। এ বিষয়ে সেই বেনিফিসিয়ারি কোন অভিযোগ তোলেননি বলে জানান মহানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান।