হাওড়া,১ ফেব্রুয়ারি:- কর্মীদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ায় শুক্র ও শনিবার সারা দেশ জুড়ে ব্যাঙ্ক ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এই ধর্মঘটের আওতায় রয়েছে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ছাড়াও বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাঙ্কগুলিও। ধর্মঘটী ইউনিয়নগুলি দাবি করেছে, এই দুদিনের ধর্মঘটে দেশের সমস্ত ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকবে। এমনকি এটিএম পরিষেবাও বন্ধ থাকবে। এর জেরে শুক্রবার সকাল থেকেই অসুবিধায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সরস্বতী পূজা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার এমনিতেই ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল। এরপর ধর্মঘটের জন্য শুক্র ও শনিবার ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকছে। রবিবার ছুটি। এরফলে টানা চারদিন ব্যাঙ্কে কোনও কাজ হবে না। এটিএম পরিষেবাও এর জেরে ব্যাহত হবে। ফলে চরম অসুবিধায় পড়েছেন ব্যাঙ্কের গ্রাহকরা। শুক্রবার ধর্মঘটের প্রথম দিনে হাওড়ায় ব্যাঙ্কের সামনে কর্মীরা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। স্লোগান দেন। সকালে ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক হাওড়ার আঞ্চলিক অফিসের সামনে কর্মীরা তাদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে স্লোগান দেন।
এদিন ধর্মঘট প্রসঙ্গে অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশনের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দাস বলেন, বেতন চুক্তি দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে। বিভিন্ন টালাবাহানার মধ্যে ২৭ মাস ধরে সেটা সম্পাদিত হচ্ছে না। অনেকগুলো বৈঠকের পরেও সেটা সম্পাদিত হচ্ছে না।বিভিন্ন ব্যাঙ্কে যে সংযুক্তিকরণ হচ্ছে আমরা চেয়েছিলাম পাঁচ দিনের সপ্তাহ। যাতে ব্যাঙ্কেরো লাভ হয়।সপ্তাহে একদিন ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকলে আমাদেরও খরচা কমবে এবং সাধারণ মানুষও সুবিধা পাবে। কিন্তু সরকারের তরফ থেকে এবং আইবিএ এর তরফ থেকে কোনওরকম সদুত্তর ভূমিকা পাচ্ছি না। ব্যাঙ্ক শিল্পে যারা কাজ করেন তাদের ব্যাঙ্কের পেনশনের অবস্থা খুবই খারাপ।ফ্যামিলি পেনশনের অবস্থাও ভাল নয়। নতুন যারা জয়েন্ট করেছে পেনশনের এনপিএস থেকে স্ট্রাপ করে পুরনো পেনশন ব্যবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। কারণ মার্কেটর অবস্থা খারাপ। পরবর্তীকালে ভাল হতেই পারে। এটা চেয়েছিলাম যাতে নতুনরা সুযোগ সুবিধা পায়। কিন্তু সরকারের তরফ থেকে এ ব্যাপারে কোনও সদুত্তর পাওয়া যাচ্ছে না।তাঁরা অত্যন্ত নেতিবাচক সুরে কথা বলছে। আমরা ব্যাঙ্কাররা যাঁরা নোট বাতিলের সময় বা অন্যান্য সরকারি প্রকল্পে সমস্ত কাজ মনের মতো করে ভালভাবে করেছিলাম। আমরা ভেবেছিলাম আমাদের বেতনটা একটা সম্মানজনকে জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা সেটা হয়নি। প্রথমে ২ শতাংশ দিয়ে শুরু হয়েছিল। এখন সেটা বেড়ে ১৫ শতাংশ হয়েছে। তাহলে একই সরকার ২ শতাংশ করেছিল তারাই ১৫ শতাংশ করল। তাহলে ২ শতাংশ দিয়ে শুরু হয়েছিল কেন ? তাহলে আমাদের সঙ্গে অবিচার হয়েছে। আমাদের এখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। ধর্মঘট করছি।এতে দুদিনের স্যালারি কাটবে। কেন্দ্রীয় সরকার যে পলিশি নিয়েছে যেটা বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বেসরকারি করে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাই দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো মজবুত করেছে। সেটাকে ভেঙে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। আমরা জানি ধর্মঘট করলে গ্রাহকদের অসুবিধা হয়।কিন্তু আমরা ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের কিছু ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ যাতে না কাটে তারজন্যও আন্দোলন করছি।