ঋসভ,২৮ নভেম্বর:- একদিকে যখন বৃহস্পতিবার বিকেলে মুম্বাইয়ের শিবাজী পার্কে শুরু হতে চলেছে সেনারাজ সেদিন সকালেই বাংলায় উপনির্বাচনে বড় ধাক্কা খেলেন মোদি-শাহ জুটি।২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর ভারতীয় জনতা পার্টি নেতৃত্ব হুঙ্কার দিয়েছিলেন “বাংলায় এনআরসি হবেই”।কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লোকসভায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন “অসমের মতো বাংলাতেও এনআরসি হবে”। ৩৪ থেকে 22 আসনে নেমে যাওয়া তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের পায়ের তলায় মাটি ফিরে পেতে অস্ত্র হিসেবে বেছে নেয় এই এনআরসি ইস্যুকেই।একাধিক মিছিল,প্রতিবাদ সভা,ব্লকে ব্লকে প্রচার চালানো এই এনআরসি নিয়ে,আর তাতেই বাজিমাত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচন যা ছিল তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের মনোবল ফেরানোর লড়াই,যা ছিল আগামী দিনে বিজেপিকে জবাব দেওয়ার লড়াই তাতে সফল তৃণমূল সুপ্রিম।শুধু সফল নন পেয়েছেন দুটি নতুন আসন।উত্তরবঙ্গের কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা ও পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর সদর কেন্দ্রে এই প্রথম ফুটল ঘাসফুল।লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে দুই কেন্দ্রেই এগিয়ে ছিল বিজেপি,উপনির্বাচনের দুই কেন্দ্র জিতবেন বলে আশাবাদী ছিলেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।সেখানে কালিয়াগঞ্জে তিন থেকে একে উঠে আসা তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ী প্রার্থী তপন দেব সিনহার দাবি “মানুষের আশীর্বাদের ফল এই জয়”।মাত্র ২,৪০৫ ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী।খড়গপুর সদর কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী প্রদীপ সরকারের জয় রাজ্য বিজেপির ক্ষেত্রে বড় ধাক্কা।দিলীপ ঘোষের গড় হিসেবে পরিচিত খড়গপুর সদর কেন্দ্রেও এই প্রথম খাতা খুলল তৃণমূল কংগ্রেস।সুচতুর মমতা এই কেন্দ্রে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার জন্য দায়িত্ব দিয়েছিলেন তার বিশ্বস্ত সেনাপতি শুভেন্দু অধিকারীকে।রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু লোকসভায় মালদহ থেকে একটিও আসন জিততে না পারলেও পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষেত্রে এতটুকুও ভুল করেননি।সীমান্তবর্তী এলাকায় এই এনআরসি কি ভাবে মন্ত্রের মতো কাজ করেছে তৃণমূলের পক্ষে তা করিমপুর কেন্দ্রের ফলাফলেই স্পষ্ট।নির্বাচনের দিন একাধিক এলাকায় গিয়ে বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাস মজুমদার।”গো ব্যাক” ধনী যে এনআরসির প্রতিফলন তা বুঝতে অসুবিধে হয়নি রাজনৈতিক বোদ্ধাদের।ফলাফলেও স্পষ্ট।তৃণমূলের বিমলেন্দু সিংহ রায় জয় পেলেন বিপুল ভোটে। ফলাফল পরবর্তী সময়ে বিজেপি নেতৃত্ব সরাসরি না বললেও হাবেভাবে ববুঝিয়ে দিচ্ছেন বুমেরাং হয়েছে
এন আর সি তত্ব।তার সঙ্গে যোগ হয়েছে পুরোন ও নব্য বিজেপির গোষ্ঠীদদ্ব। অর্থাৎ আগামী ২০২০ পুরভোট ও ২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে কিছুটা হলেও যে ব্যাকফুটে গেল বিজেপি এমনটা স্পষ্ট।