হুগলী,১৬ ডিসেম্বর:- এনআরসির আতঙ্কে ঘুম ছুটেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সাধারন মানুষের।আসাম ছাড়িয়ে যার রেশ এসে পড়েছে বাংলাতেও। দিনকয়েক ধরে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে অবরোধ – বিক্ষোভ। চলন্ত ট্রেনে পাথর ছোঁড়া থেকে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মত হিংসাত্মক ঘটনাও ঘটছে। মূলত মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাতেই এই ধরনের ঘটনা বেশী ঘটছে। আর ঠিক এই কারনেই এনআরসির প্রভাব পড়েছে বেকারি শিল্পেও। হুগলি জেলার ব্যান্ডেল, ত্রিবেনী, চুঁচুড়া, চন্দননগর, ভদ্রেশ্বর, চাঁপদানী প্রভৃতি এলাকায় গড়ে উঠেছে বেকারী শিল্প। সারা বছর যারা বিস্কুট, রুটি ইত্যাদি তৈরী করলেও বড়দিনের প্রাক্কালে যারা প্রায় একমাস কেক তৈরীতেই নজর দেয়। হুগলীতে তৈরী এইসমস্ত কেক জেলা তথা জেলার বাইরের বাজারও বড়দিন উপলক্ষে মাত করে রাখে।
নভেম্বরের শেষ থেকেই যার তোড়জোর করে দেয় বেকারি মালিকরা। ডিসেম্বরের শুরু থেকেই বড়দিনের কেক তৈরীর কাজ শুরু হয়ে যায়। এই উপলক্ষে প্রত্যেকবছর ডিসেম্বর মাসে জেলার বেকারি কারখানা গুলিতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে অতিরিক্ত শ্রমিকদের কাজে নেওয়া হয়। যরা মূলত মুসলীম সম্প্রদায়ের। হাওড়া, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান প্রভৃতি জেলা থেকে আসা সেইসমস্ত শ্রমিকরা একটু বেশী রোজগারের আশায় জেলার বেকারি কারখানাগুলিতে চলে এলেও দিনকয়েক ধরে শুরু হওয়া এনআরসির তান্ডবে তারা বাড়ি ফিরে যেতে চাইছেন। মন বসছে না কাজে। হুগলির রাজহাটের বেঙ্গল বেকারিতে বাইরের জেলা থেকে কাজে আসা রিঙ্কু মনসুরি, লালকিরন মন্ডলরা এখন দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন। তাঁদের বক্তৃব্য বাড়িতে মন পরে থাকলেও বড়দিনের কাজের চাপে যেতে পারছি না। এনআরসি নিয়ে রোজই কোথাও না কোথাও আগুন জ্জ্বলছে। কাজের ফাঁকেই আমরা টিভির দিকে নজর রাখছি। এখন কাজ শেষ হলে বাড়িতে যেতে পারলে বাঁচি। অন্যদিকে এই কারখানার পক্ষে নবাব আলি মোল্লা এনআরসির প্রভাব শ্রমিকদের মধ্যে পরার কথা স্বীকার করে নেন। যদিও তিনি বলেন সবকিছুকে উপেক্ষা করেই বাঙালিদের পাতে বড়দিনের কেক আমরা তুলবই। অন্যদিকে এই কারখানায় মালিকপক্ষের নবীন প্রজন্ম নুরুল সরকার বলেন বিগত বছর গুলিতে ঠিক এইসময় নোট বাতিল, খুচরো পয়সা, জিএসটির মত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি আমরা। আর এবারে এনআরসি ও ক্যাবের জোড়া ফালায় বিঁধলো বেকারী শিল্প। জানিনা সামনের বছরের জন্য আবার কি অপেক্ষা করে আছে ?