এই মুহূর্তে জেলা

প্রায় সাড়ে চারশো বছরের প্রাচীন কড়োলা কালীবাড়ি ভক্তদের কাছে আজও শ্রদ্ধার স্থান।

হুগলি, ১৯ অক্টোবর:- হুগলির আনুমানিক সাড়ে চারশো বছরের প্রাচীন কোড়লা কালীবাড়ি আজও ভক্তদের কাছে সমান শ্রদ্ধার স্থান। কথিত আছে, মন্দির সংলগ্ন পুকুর থেকে পাওয়া যায় মূল প্রস্তর মূর্তিটি। পরে এক কুমোরটুলির শিল্পী সেই মূর্তির আদলে আরও একটি বড় পাথরের মূর্তি তৈরি করে দেন। বর্তমানে দুটি মূর্তিতেই নিয়মিত পুজো হয়। কার্তিক মাসে অনুষ্ঠিত হয় বার্ষিক কালীপুজো, তবে নিত্যদিনও পূজা-অর্চনা চলে মন্দিরে। ঘোষাল পরিবারের দুই শাখা—ছোট ও বড় বাড়ি—পালা করে পুজোর দায়িত্ব পালন করেন। বড় বাড়ির গৃহবধূ জানান, সোমবার গভীর রাতে শুরু হবে মায়ের আরাধনা, যা চলবে ভোর পর্যন্ত।

ছোট বাড়ির গৃহবধূ প্রিয়ম ভট্টাচার্য বলেন, “রাতভর জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার ভক্ত মন্দির প্রাঙ্গণে ভিড় জমান। পুজোকে ঘিরে বসে এক বিশাল মেলা।” এই মন্দির শুধু আধ্যাত্মিক কেন্দ্র নয়, সম্প্রীতির প্রতীকও বটে। স্বাধীনোত্তর দাঙ্গার সময়ে তৎকালীন সেবাইত কানাইলাল ঘোষাল শতাধিক মুসলিম পরিবারকে আশ্রয় দিয়েছিলেন মন্দির সংলগ্ন বাড়িতে। তাঁদের সমস্ত মূল্যবান জিনিস মন্দিরে নিরাপদে রাখেন তিনি। দাঙ্গা থামলে সেগুলি ফিরিয়ে দেন সকলকে। প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মইনুল হক বলেন, “সেই সময় থেকেই আমাদের গ্রামে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি অটুট রয়েছে। দুই সম্প্রদায়ের মানুষের উপস্থিতিতেই আজও সিদ্ধেশ্বরী মাতার পুজো অনুষ্ঠিত হয়।” প্রাচীন ঐতিহ্য, ভক্তির আবেশ ও ধর্মীয় সম্প্রীতির বার্তায় প্রতি বছর নতুন করে প্রাণ পায় কোড়লার এই কালীবাড়ির পুজো।