হুগলি, ৯ নভেম্বর:- তার গ্রেফতারী রাজ্য রাজনীতিতে তোলপার ফেলেছিল। সিঙ্গুর জমি আন্দোলন অন্য মাত্রা পেয়েছিল সুহৃদ দত্ত সিবিআই এর হাতে গ্রেফতার হওয়ায়। সিঙ্গুরের সেই সিপিএম নেতা সুহৃদ দত্ত প্রয়াত হলেন।বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। সিঙ্গুরের অপূর্বপুরের বাড়িতে বৃহস্পতিবার সকাল সারে এগারোটা নাগাদ মৃত্যু হয় তার। অকৃতদার সুহৃদ দত্ত আজীবন সিপিএম সদস্য ছিলেন। সিঙ্গুরে টাটাদের ন্যানো কারখানা জমি থেকে বাজেমেলিয়ার তরুনী তাপসী মালিকের অর্ধদগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার হয় ২০০৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর। সিঙ্গুরের জমি আন্দলোনে থাকা তাপসীকে ধর্ষন করে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে।যদিও সিবিআই চার্জশিটে ধর্ষনের ধারা ছিলনা।
সেসময় বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্মতলায় অনশন আন্দোলন করছেন কৃষকদের পক্ষে।সিবিআই সেই মামলার তদন্তভার নেওয়ার পর সিপিএম কর্মি দেবু মালিককে ১৯ জুন দিল্লীতে গ্রেফতার করে। পাটিয়ালা আদালতে পেশ করে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে আসে।দেবু মালিককে জেরা করে তৎকালীন সিপিএম সিঙ্গুর জোনাল কমিটির সম্পাদক সুহৃদ দত্তকে জেরা করে।২৭ জুন ২০০৭ সালে সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে গ্রেফতার করে। তাদের দুজনেরই পলিগ্রাফ টেস্ট হয়।চন্দননগর আদালতে মামলা চলতে থাকে। ২০০৮ সালের ১১ই নভেম্বর সুহৃদ দেবু দুজনেরই যাবজ্জীবন সাজা হয় নিম্ন আদালতে। পরে কোলকাতা হাইকোর্ট থেকে জামিন পান তারা। সেই মামলার এত বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি।
সিপিএম নেতৃত্ব বারবার অভিযোগ করেছেন সুহৃদ দত্ত ষড়যন্ত্রের শিকার। যে মামলায় নিম্ন আদালত তাকে সাজা দিয়েছিল হাইকোর্ট সেই মামলায় জামিন পেয়েছিলেন অথচ সেই মামলা এত বছর পরেও নিষ্পত্তি হলনা। সুহৃদ দত্ত ১৯৬৭ সালে সিপিএম পার্টির সদস্য পদ পান। কৃষক সভার হুগলি জেলা সম্পাদক ছিলেন ১৯৮২-৮৩ সালে। সিঙ্গুর জোলান কমিটির সদস্য ছিলেন ১৯৭৩ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত। সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন ১৯৮৩ থেকে ২০০৩ সাল তিন বার। মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর সিপিএম নেতৃত্ব তার বাড়িতে যান। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, হুগলি জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ শ্রদ্ধা জানান।সুহৃদ দত্তর চোক্ষু দান করার পর বৈদ্যবাটি হাতিশালা ঘাটে দেহ সৎকার হবে।