কলকাতা, ১৩ জুন:- রাজ্যপালের পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের ৩১ টি সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বা চ্যান্সেলর পদে রাজ্যপালের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীকে বসাতে রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় আইনগুলির একটি সম্মিলিত সংশোধনী সোমবার বিধানসভায় গৃহীত হয়েছে। এই বিল আইনে পরিনত হলে কলকাতা, যাদবপুর, বর্ধমান সহ ৩১ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হবেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধানসভায় বিলের ওপর বিতর্ক শেষে জবাবী ভাষণে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, পুঞ্চি কমিশনের সুপারিশেও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে অপসারণের কথা বলা হয়েছে।নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালেকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বসাতে উদ্যোগী হন বলে ব্রাত্য বাবু দাবি করেন।তিনি অভিযোগ করেন,বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্যপাল এক্তিয়ার বহির্ভূত ভাবে হস্তক্ষেপ করায় জটিলতা তৈরি হয়েছে।
এই সংক্রান্ত ১৬ টি ফাইল রাজ্যপাল ফেরত পাঠিয়ে দিযেছেন। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যলয়ের আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে সরিয়ে দেওয়ার ভাবনা এরাজ্যেই প্রথম নয়। এর আগে তেলেঙ্গানা, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, পাঞ্জাবের মতো রাজ্য একই পদক্ষেপ করেছে।তৃণমূল কংগ্রেসের পার্থ ভৌমিক, রফিকূল ইসলাম মন্ডল, মানিক ভট্টাচার্য্য প্রমূখ বিলের সমর্থনে বক্তব্য রাখেন। অন্যদিকে বিশ্বনাথ কারক, অগ্নিমিত্রা পাল, বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মার মতো বিজেপি সদস্যরা বিলের বিরোধিতা করে বলেন, শিক্ষাব্যবস্থাকে মুখ্যমন্ত্রীর কুক্ষিগত করার উদ্দেশ্যেই এই বিল আনা হচ্ছে।এতে শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনীতিকরণের পথ আরও প্রসারিত হবে। আলোচনার শেষে ভোটাভুটিতে বিলটি বিধানসভা পাশ হয়ে যায়।
বিলের পক্ষে ১৮২ এবং বিপক্ষে ৪০ টি ভোট পরে।আইএসএফের একমাত্র সদস্য ভোটদানে বিরত ছিলেন। এদিকে বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, এই বিল পাশ নিয়ে তিনি আদালতে যাবেন। এদিন তিনি ভোটাভুটিতে উপস্থিত থাকতে পারেননি। কারণ বাজেট অধিবেশনেই শুভেন্দু সহ সাত বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করেছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তাঁরা বিধানসভা চত্বরে উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই তাঁদের গিয়ে বিল পাশের খবর দেন বাকি বিজেপি বিধায়করা। সেখান থেকেই শুভেন্দু বলেন, সময় পেরিয়ে গেলেও মুখ্যমন্ত্রী আচার্য হতে পারবেন না। কারণ এই বিল এখন রাজ্যপালের কাছে যাবে। তার পর তা যাবে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদনের জন্য। সেখানে ইতিমধ্যে বিধান পরিষদ বিল, রাজ্যের নাম বদল করে বঙ্গ করার বিল পড়ে রয়েছে। আজও পাশ হয়নি।