হুগলী, ৩১ ডিসেম্বর:- সময়ের হাত ধরে পৃথিবী এগিয়েছে। আধুনিক থেকে অত্যাধুনিক হয়েছে। ছোট ছোট অণু-পরমাণুর মতো এক একটা করে বদলাচ্ছে নিয়ম। সেই ভাবে একান্নবর্তী পরিবারগুলি ছোট ছোট আকার নিয়েছে। আর সম্পর্ক গুলো আস্তে আস্তে আমাদের মানব সভ্যতা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। আর যেমন করে হারিয়ে যাচ্ছে মা, বাবার ভালোবাসা। এক প্রকার ব্যাঙের ছাতার মত প্রতিটি অঞ্চলে গজিয়ে উঠেছে বৃদ্ধাশ্রম। আর সেখানে আশ্রয় পাচ্ছেন রুগ্ন, হতাশাগ্রস্ত একদল পিতা মাতা। যারা প্রত্যাশা করেন এই সন্তানের ভালোবাসা পাবে, যারা প্রত্যাশা করেন তাদের সন্তান তাদের দেখবে।
যারা প্রত্যাশা করেনি জীবনের শেষ টুকু ঠাঁই হবে বৃদ্ধাশ্রমে। এটাও ঠিক সবার জন্য বৃদ্ধাশ্রম নয়। পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে বিষয়টা। হ্যাঁ আজ এই কথাগুলি বলতে হচ্ছে। কারন কান পাতলেই শোনা যায় তাদের কান্না, চোখ ভরা জল। কিন্তু এর মধ্যেও এমন কিছু মানুষ আছে যারা দৃষ্টান্তর। সন্তান বলতে তারাই দৃষ্টান্ত রেখে যাচ্ছেন। যেমনটা শেওড়াফুলি জিআরপি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ বিকাশ মুখোপাধ্যায়। মায়ের বয়স প্রায় ষাট ছুঁই ছুঁই। বৃদ্ধা মা শরিরের শক্তি হারিয়েছে অনেকটা পাশাপাশি রোগ ধরেছে বার্ধক্যের। এই মাকে তিনি ছেড়ে দিয়ে আসতে পারিনি বৃদ্ধাশ্রমে। তিনি ভুলতে পারেনি তার অতীতটাকে।
যে মা, তার রূপ, রস নিংড়ে দিয়েছিল তাকে। ভালোবেসে, পরম যত্নে মানুষ করে ছিল তাঁর খোকাকে। তাই তিনি মায়ের কথা ভোলেনি। সন্তানের দায় থেকে এড়িয়ে যেতে পারেননি বলে আজ অদ্ভুতভাবে মাতৃ সেবায় কখনো মায়ের পায়ে তেল মাখিয়ে দিতে, কখনো মায়ের পিঠে তেল মাখিয়ে দিতে, স্নান করিয়ে দেওয়া থেকে খাইয়ে দেওয়া সবই করেন তিনি নিজের হাতে। লোকে বলে পুলিশের হাজার দোষ, কিন্তু হাজার দোষের মধ্যেও গুনি মানুষকে খুঁজে পাওয়া যায়। যে আজও মাতৃ সেবায় নিজেকে অটুট রেখেছে। এমন দেখে খবর করতে চাওয়াটা শুধু নয় কারণ বিকাশবাবুকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে আরো মানুষ যাতে বদতালে পারে। আর তাদের হাত ধরে অন্তত বৃদ্ধাশ্রমের বৃদ্ধ মা-বাবা ঠাঁই কম হোক।