কলকাতা, ১৭ নভেম্বর:- সুস্বাস্থ্য এবং রোগ নিরাময়ে প্রাণিজ প্রোটিনের অপরিহার্যতার কথা দেশে-বিদেশে স্বীকৃত।এদেশের মানুষকে সুলভে প্রাণিজ পুষ্টির যোগান দিতে বড় ভূমিকা নিয়েছে পোল্ট্রি মুরগির মাংস এবং ডিম।বাংলার বুকে আমজনতার খাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত মুরগির যোগান ছিল না বাম জমানায়। পরিবর্তনের পরে সেই ঘাটতি মেটাতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার ওয়েস্ট বেঙ্গল পোলট্রি ফেডারেশন গঠন করেন। এক দশক আগে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে তৈরি ওই সংগঠনের উদ্দেশ্য অনেকটাই সফল। রাজ্য পোলট্রির মুরগি ও ডিম উৎপাদনে ক্রমশই দেশের মধ্যে প্রথম সারিতে উঠে আসছে। ২০১১ সালে যখন ফেডারেশন গঠিত হয়েছিল তখন রাজ্যে বার্ষিক মুরগীর মাংসের উৎপাদন ছিল মাত্র ০.৩৬ মিলিয়ন টন। ডিমের উৎপাদন ছিল ৬২০ মিলিয়ন। কিন্তু রাজ্য সরকারের সহযোগীতায় ফেডারেশন সেই উৎপাদনের মাত্রা বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। এখন রাজ্যে বার্ষিক মুরগীর মাংসের উৎপাদন বেড়ে হয়েছে ২.৫ মিলিয়ান টন ও ডিমের উৎপাদন বেড়ে হয়েছে ৩৫০০ মিলিয়ন টন। জাতীয় মুরগী দিবসে এটাই ওয়েস্ট বেঙ্গল পোলট্রী ফেডেরেশনের সব থেকে বড় প্রাপ্তি।
মুরগীর মাংসে শুধুমাত্র প্রোটিনের উৎস তাই নয়, অনান্য প্রাণীজ প্রোটিনের তুলনায় সহজপাচ্যও। মুরগির মাংসে কোলোজেনের মাত্রা যেমন কম থাকে তেমনি এই মাংসে থাকা ট্রিপ্টোফ্যান যা আমাদের মস্তিষ্কে সেরোটিনের মাত্রা বাড়ায়। এছাড়াও মুরগির মাংসে ভিটামিন বি ১২, কোলিন, নানা ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ রয়েছে যা শিশুদের মস্তিষ্ক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। পাশাপাশি তা হাড়ের স্বাস্থ্য ও বেশি বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও উপকারী হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে। সবজি সমৃদ্ধ খাদ্যের অংশ হিসাবে মুরগির মাংস খেলে ওজন যেমন কমে তেমনি কার্ডিওভাসকুলার রোগ ও টাইপ ২ ডায়াবেটিস মেলিটাস হওয়ার ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে। এছাড়াও সাদা মাংস ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে। এইসব কারনেই বাংলায় আমজনতার মধ্যে যাতে মুরগির মাংস খাওয়ার চল বাড়ে তার জন্য ও বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য রাজ্যে ক্রমশ মুরগি প্রতিপালন ও তার বিক্রির ওপর জোর দিচ্ছে ফেডেরেশন।