হুগলি,২৯ নভেম্বর:- টানা নয় বছর পর রজ্য সরকারের পুরাতত্ত্ব এবং সংরক্ষন, তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের উদ্যোগে আবারও সকলের দেখার জন্য প্রতিষ্ঠিত হল ব্যান্ডেল চার্চের ঐতিহাসিক মাস্তুল । কথিত আছে ১৬৫৫ খ্রীষ্টাব্দে বঙ্গোপসাগর থেকে যাওয়ার সময় এক পর্তুগিজ জাহাজ ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে । প্রচন্ড ঝড়ের মধ্যে সুবিশাল সেই জাহাজে থাকা সকলে যখন ভাবছে ডিয়ার বাঁচার কোন রকম উপায় নেই ঠিক তখনই জাহাজের ক্যাপ্টেন মাদার মারিয়ার শরণাপন্ন হন । প্রার্থনার সময় তিনি মারিয়াকে বলেন এই ঝড় থেকে যদি আমরা বাঁচতে পারি তাহলে যাত্রাপথে সবার প্রথম যে গির্জা পড়বে সেখানে জাহাজের একটি মাস্তুল আমি দান করবো । সেদিন প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে বাঁচার পর কথা রেখেছিলেন ক্যাপ্টেন । এবং সেই কথা মতন যাত্রাপথে প্রথম গীর্জা হিসাবে পড়া ব্যান্ডেল চার্চে জাহাজের একটি কাঠের মাস্তুল দান করেন । ১৬৫৫ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সেই মাস্তুলটি ব্যান্ডেল চার্চ এর সামনে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে ছিল। কিন্তু কালের নিয়মে বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছিল বছরের পর বছর রোদ, ঝড়, জল সহ্য করা মাস্তুলটি । ২০১০ সালের ৯ই মে এক ঝড় জলের সন্ধ্যায় মাস্তুলটির উপরে একটি গাছ ভেঙে পড়ায় মাস্তুলটি টুকরো টুকরো হয়ে যায় । ঐতিহাসিক সেই নিদর্শনকে আর কোনভাবেই মাথা তুলে হয়তো দাঁড় করানো যাবে না বলে ভেবেছিল ব্যান্ডেল চার্চ কর্তৃপক্ষ। মাঝের কয়েকটি বছর ব্যান্ডেল চার্চ আসা দর্শনার্থীরা ঐতিহাসিক এই মাস্তুলের স্বাদ পায়নি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই খবর শোনার পরই যোগাযোগ করেন চার্চ কর্তৃপক্ষের সাথে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার পরই বছর দুয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রীর নিজের হাতে থাকা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর এর আওতাভুক্ত রাজ্যের পুরাতত্ত্ব ও সংরক্ষণ দপ্তর উঠে পড়ে লাগে । রাজ্যের পূর্ত দপ্তরের সহযোগিতায় ঐতিহাসিক সেই মাস্তুলটির অংশগুলিকে একত্রিত করে সম্পূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত ভাবে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে পুনরায় আগের রূপে হল । তবে এবারে আর খোলা আকাশের নিচে নয় ব্যান্ডেল চার্চেই মাস্তুল এর জন্য আলাদা একটি কাচের ঘর করে তার ভিতর শায়িত ভাবে সংরক্ষণ করে রাখা মাস্তুলটিকে । আজ ফিতে কেটে সেই ঘরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রাজ্যের পুরাতত্ত্ব বিভাগের রসায়নবিদ দিলীপ দত্তগুপ্ত । সঙ্গে ছিলেন চার্চের ফাদার ফ্রান্সিস, হুগলি জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক মন্দাক্রান্তা মহলানবীশ এবং পূর্ত দপ্তরের আধিকারিকরা। শুধু করে দেওয়াই নয় এই ঘর এবং মাস্তুলের রক্ষণাবেক্ষণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব এবার থেকে রাজ্য সরকারের । দিলীপ বাবু বলেন আমরা সারা বছরই কোন না কোন কাজ করে থাকি কিন্তু কিছু কিছু কাজের আলাদা অনুভূতি হয়। ব্যান্ডেল চার্চে কাজ করতে পেরে সত্যিই আমরা গর্বিত । কয়েকশো বছরের ঐতিহ্য বহন করা মাস্তুলটি পুনরায় সংরক্ষিত হওয়ায় রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ দিতে ভুললেন না ফাদার ফ্রান্সিস ।
Related Articles
বিশেষ অভিযানে নেমে বাজেয়াপ্ত ৪৫ কেজি চিনা মাঞ্জা। গ্রেফতার ২।
হাওড়া, ২৫ আগস্ট:- চিনা মাঞ্জায় শহরে একের পর এক ঘটনা ঘটতে থাকায় এবার বিশেষ অভিযান চালালো হাওড়া সিটি পুলিশ। ওই অভিযানে ৪৫ কেজি চিনা মাঞ্জা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দুই জায়গায় পৃথক অভিযানে ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুধু মা উড়ালপুলেই নয়, চিনা মাঞ্জায় গত কয়েকদিনে দুর্ঘটনা ঘটেছে দ্বিতীয় হুগলী সেতু, হাওড়ার সাঁত্রাগাছি ব্রিজেও। চিনা মাঞ্জায় […]
ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বিধাননগরে মাদকদ্রব্য ছাড়ার কারণে আত্মহত্যা করল এক ব্যক্তি।
শিলিগুড়ি , ৫ সেপ্টেম্বর:- শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বিধাননগরের সাপটিগুড়ি এলাকায় মাদকদ্রব্য ছাড়ার কারণে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করল এক ব্যক্তি। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল। মৃত ব্যক্তির মুন্না কুজুর(৪০)। জানা গিয়েছে যে দীর্ঘদিন ধরে ওই ব্যক্তি নেশা করতো। এরপর বাড়ির লোকজন অনেক বোঝানোর পড় ওই ব্যক্তি মাদকদ্রব্য ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে মাদকদ্রব্য ছাড়ার পর থেকেই […]
ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু। থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ।
হাওড়া , ১৬ জানুয়ারি:- নিখোঁজ এক ছাত্রীর দেহ স্থানীয় একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হলো। এর জেরে হাওড়ার নাজিরগঞ্জ থানা ঘেরাও করেন ছাত্রীর আত্মীয়স্বজন ও এলাকার মানুষ। পাশাপাশি সত্যেন বসু রোড অবরোধ হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পোদড়ার আজাদনগর এলাকার বাসিন্দা কলেজ ছাত্রী রূকসার খাতুন(২২) চলতি মাসের ৫ তারিখ থেকে নিখোঁজ ছিলেন। স্থানীয় নাজিরগঞ্জ থানায় মিসিং […]






