হুগলি, ১৩ আগস্ট:- মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণামতো ১৫ টাকা কেজি দরে ২ কোটি ২০ লক্ষ বস্তা আলু কেনেনি রাজ্য সরকার—এই অভিযোগে লাগাতার আন্দোলনের ডাক দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার সিঙ্গুরের রতনপূরে বিজেপির কিষাণ মোর্চার অবস্থান-বিক্ষোভে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি। সভা থেকে কৃষকদের ন্যায্য মূল্যের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ারও পরামর্শ দেন শুভেন্দু। অবস্থানের শেষে কৃষকরা শুভেন্দুর সামনে রাস্তায় আলু ফেলে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান। এরপর বিজেপি কর্মীরা আলুর উপর দিয়ে হেঁটে যান, যা ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, এ বছর সারা দেশেই আলুর উৎপাদন বেশি হওয়ায় চাষিদের স্বার্থ রক্ষায় কেন্দ্র সরকারকে অতিরিক্ত আলু বিদেশে রপ্তানির উদ্যোগ নিতে হবে। সভায় সিঙ্গুর শিল্পভূমি প্রসঙ্গেও আক্রমণ শানান শুভেন্দু। তাঁর দাবি, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিনামাইট দিয়ে টাটার কারখানা ধ্বংস করেছেন, রাজ্যের অর্থনীতিকে খুন করেছেন।”
টাটাকে দেওয়া ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নিয়েও কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “মাত্র ৭৬৬ কোটিতে ফয়সালা! আমি রতন টাটার কর্মচারী হলে ২০০০ কোটি আদায় করতাম।” সভামঞ্চ থেকে বেচারাম মান্নাকে ‘সিঙ্গুরের ডাকাত’ বলে আক্রমণ করেন শুভেন্দু এবং জানান, বৃহস্পতিবার শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ভোট মন্ত্র’ নিয়েও তোপ দাগেন তিনি—“মুসলিমদের ঠিক রাখো, রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি মুসলিমদের ঢোকাও, ভোট এলেই ভাতা দিয়ে দাও।” আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির অগ্রাধিকারের তালিকা উল্লেখ করে শুভেন্দু জানান, নারী সুরক্ষা পয়লা নম্বরে থাকলেও কৃষকদের ভবিষ্যতও যথাযোগ্য গুরুত্ব পাবে। বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যে সরকারি অনুদান ও দান-খয়রাতির ফিরিস্তিও তুলে ধরেন তিনি। সভা জুড়ে ‘২৬-এ আমার পাড়া, তৃণমূল ছাড়া’, ‘টাটা কোম্পানি জিন্দাবাদ’ এবং ‘মমতা হঠাও, তৃণমূল হঠাও’—এই স্লোগান ওঠে। সবশেষে আলু ছড়িয়ে তার উপর দিয়ে হাঁটা নিয়েই সিঙ্গুর থেকে রাজ্যজুড়ে নতুন রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে।