এই মুহূর্তে জেলা

কানাইপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ার দাবি।

হুগলি, ১১ আগস্ট:- হুগলি জেলার কানাইপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হিসাবে গড়ে তোলার দাবী। উত্তরপাড়া শ্রীরামপুর ব্লকের কানাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নৈটি রোডের উপরেই রয়েছে কানাইপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা প্রধান হাসপাতাল। হয়তো এর নাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র কিন্তু এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপর ভরসা মানুষের একটা বড় হাসপাতালের থেকেও বেশি। কারণ এই হাসপাতাল কানাইপুর এলাকায় অবস্থিত হলেও এই হাসপাতালের উপর চিকিৎসা নির্ভর মানুষের সংখ্যা কয়েক লক্ষ। এই হাসপাতালে যে শুধু কানাইপুর এলাকার মানুষ চিকিৎসা করাতে যায় সেটা নয়। এই হাসপাতালে নবগ্রাম, চাকুন্দি, ডানকুনি, রঘুনাথপুর, রিষড়া গ্রামীন এলাকা সহ আরো বিভিন্ন এলাকার মানুষ আসেন চিকিৎসা পরিষেবা নিতে। আর সেই হাসপাতালে আগের বাম যামানার থেকে উন্নত পরিষেবা পাওয়া গেলেও সব রকম পরিষেবা পাওয়া যায়না বলেই অভিযোগ।আর এলাকার মানুষের বিশেষ অভিযোগ এই হাসপাতালের রেফার রোগ। একটু বড় কিছু হলেই কোনো কিছু না দেখেই লিখে দেওয়া হয় রেফার। আর এই ব্লকে বড় হাসপাতাল বলতে রয়েছে শ্রীরামপুর ওয়ালস আর উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল। কিন্তু সেখানে রুগীকে নিয়ে যেতেও একটা বিশেষ সময় লাগে।আর এই সময় খরচের কারণে অনেকের মৃত্যু অবধি ঘটে। যেহেতু এই হাসপাতালের উপর কয়েক লক্ষ মানুষ নির্ভরশীল তাই এবার এই হাসপাতালকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল রূপে গড়ে তোলার দাবী জানালো সাধারণ মানুষ।

যাতে ছোট বড় সমস্ত রকম চিকিৎসা পরিষেবাই পাওয়া যায় এই হাসপাতালে। কিন্তু কবে মানুষের ভাগ্যের সিকে ছিঁড়বে সেটা নিয়ে তারাও সন্দিহান। কানাইপুর পঞ্চায়েত এলাকার এক বাসিন্দা তপন লাহা বলেন, এই হাসপাতাল শুধু কানাইপুর এলাকার মানুষের জন্য নয়। এখানে আসে পাশের এলাকার থেকেও বহু মানুষ আসেন চিকিৎসার জন্য। কিন্তু এখানে এখনো সেরকম বড় চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। অনেক পরিষেবা নেই এই হাসপাতালে। যে কারণে মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হয়।আর এই এলাকার মানুষ অত আর্থিক দিক দিয়ে এগিয়েও নেই তাই এই সরকারি হাসপাতাল এক মাত্র ভরসা। আর সেখানে এই হাসপাতালে একাধিক পরিষেবা পাওয়া যায়না।তাই যদি এই হাসপাতালকে আরো উন্নত করে তৈরি করে দেওয়া যায় তাহলে অনেক মানুষের ভালো চিকিৎসা হবে। নবগ্রাম এলাকার এক বাসিন্দা অসীম দাস বলেন, আমরা নবগ্রাম এলাকায় থাকলেও আমাদের চিকিৎসা করাতে যেতে হয় কানাইপুর হাসপাতালেই। আর সেখানে শুধু অল্প জর সর্দি কাশি বা পেট খারাপ এসবের চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া গেলেও একটু বড় কিছু হলে করে দেওয়া হয় রেফার। এত বড় জায়গায় এই হাসপাতাল কিন্তু সেই কবে কার বিল্ডিং আমরা দেখে আসছি কোনো উন্নতি নেই। যদি মানুষের স্বার্থে এই হাসপাতালকে আরো উন্নত করে দেওয়া যায় আর যাতে এখানে বড় ধরনের রোগ বা বড় এক্সিডেন্ট এর চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যায় তাহলে অনেক মানুষের প্রাণ বাঁচবে।

আর এখন হাসপাতালে অল্প বৃষ্টিতে অনেক জল জমেও যায় অল্পেই। তাই এই হাসপাতালের যত দ্রুত সম্ভব সব দিক থেকে আরো উন্নতি করা দরকার। অপরদিকে চাকুন্দি এলাকার এক বাসিন্দা শেখ মহম্মদ বলেন, আমাদের এলাকার থেকেও বহু মানুষ কানাইপুর হাসপাতালে যায় চিকিৎসা করাতে। বহু মানুষের কাছে ওই হাসপাতাল ভরসা। কিন্তু সেখানে অনেক পরিষেবা পাওয়া যায়না। এটা সরকারি হাসপাতাল তাই সরকার যদি এই হাসপাতালকে নিয়ে একটু ভাবনা চিন্তা করে এখানে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা চালু করে সেখানে অনেক মানুষের উপকার হবে। আর এই হাসপাতালকে সুপার স্পেশালিটি বা উন্নত ভাবে গড়ে তোলার মানুষের যে দাবী সেই দাবি নিয়ে হুগলি জেলা পরিষদের মেন্টর সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, এটা সাধারণ মানুষের দাবী নয় এটা মানবিক সরকারের কাছে প্রত্যাশা।আমাদের তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে সব দিকেই বিশেষ উন্নয়ন করে চলেছেন। আর সেই উন্নয়ন দেখে কানাইপুর হাসপাতাল নিয়েও মানুষের একটা বড় প্রত্যাশা রয়েছে সেটা স্বাভাবিক। আর আমাদের মানবিক সরকার নিশ্চই এই বিষয়টা গুরুত্ব দিয়েই দেখবে। কিন্তু বাম আমলে চিকিৎসা পরিষেবা তলানিতে নেবে গেছিল সেখান থেকে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী এখন অনেক মেডিকেল কলেজ তৈরি করেছেন বিভিন্ন হাসপাতালকে সুপার স্পেশালিটি করেছেন।আর শুধু এই হাসপাতালে পরিকাঠামো উন্নত করলেই তো হবে না পর্যাপ্ত চিকিৎসকের প্রয়োজন থাকবে।

আর এখন মেডিকেল কলেজ গুলো থেকে পড়াশোনা করে অনেক ভালো চিকিৎসক উঠেও আসছে আর আগামী দিনেও আসবে সেটা একটু শুধু সময়ের বিষয়। তবে হ্যা এই কানাইপুর হাসপাতাল বহু মানুষের কাছে ভরসার জায়গা। আর মানুষ যখন চাইছে তাহলে আমরাও এই বিষয়টা সরকারের কাছে মানুষের এই দাবী নিশ্চই জানাবো আর আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মানুষের পরিষেবা ব্যবস্থা নিয়ে কোনোদিন কোনো জায়গায় আপোস করেনা। আর একটু সময় লাগলেও মানুষের এই প্রত্যাশা নিশ্চই পূরণ হবে।আর এই হাসপাতালের যেহেতু পর্যাপ্ত জমিও আছে সেখানে কাজের আরো নিশ্চই সুবিধা হবে। এই বিষয়ে কানাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান ভবেশ ঘোষ বলেন, আমার বাড়ি এই হাসপাতালের উল্টো দিকেই। আর এই হাসপাতাল বাম জামানায় যা ছিল এখন তার থেকে অনেক উন্নত হয়েছে। এখন বহু মানুষ এখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন। আর হ্যা মানুষ চাইছে যেহেতু এই হাসপাতাল কয়েক লক্ষ্য মানুষের ভরসা সেখানে এই হাসপাতালকে আরো উন্নত করা হোক। আর আমাদের তৃণমূলের সরকার সমস্ত ক্ষেত্রেই ব্যাপক উন্নতি করেছে আর এই হাসপাতালও আগামী দিনে আরো উন্নত হয়ে যাবে। আর মানুষের প্রত্যাশা নিশ্চই পূরণ হবে। তবে সাধারণ মানুষ এখন তাকিয়ে রাজ্যের মানবিক সরকারের দিকেই। যে কবে সরকার এই কানাইপুর হাসপাতালকে বিশেষ ভাবে গড়ে তুলবে আর মানুষের সব সমস্যা মিটবে।