এই মুহূর্তে জেলা

৪০০ বছরের প্রাচীন কামারপুকুরের বদ্দ্যিদের কালীপুজো।


হুগলি, ১২ নভেম্বর:- কামারপুকুরের প্রায় ৪০০ বছরের প্রাচীন গুপ্ত পরিবারের কালী পুজো ‘বদ্যিদের পুজো’ নামে খ্যাত। পূর্বপুরুষেরা পেশায় অনেকে ছিলেন বৈদ্য বা চিকিৎসক। সেই থেকেই পুজোর এই নাম। গল্পগাথায় জড়িয়ে থাকা এই পুজোয় ঘট তোলার আগেই প্রতিমা পা লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়। দেবীর রূপ ভয়ঙ্কর। রক্তঝরা জিভ, ঠোঁটের দু’দিকে থাকে রক্তে ভেজা শাড়ির আঁচলের অংশবিশেষ। তন্ত্র বিধিতে পূজিত দেবীর অঙ্গ সজ্জায় থাকে তির। কালীর রূপ ‘বামা কালী’ জানিয়ে পরিবারের ১৩ তম প্রজন্মের প্রৌঢ় অপূর্ব গুপ্ত বলেন, “বংশানুক্রমে শুনে আসছি, এটা রণক্ষেত্রের মায়ের পুজো। পুজোর আড়ম্বর নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা থাকে না। কিন্তু আচার, নিষ্ঠা-ভক্তির ত্রুটি থাকা চলবে না।

ভয়-ভীতির জন্যই মাকে লোহার শিকল বেঁধে রাখার রীতি চলে আসছে।’’ কথিত আছে, পূর্বপুরুষের কোনও মহিলা খোলা চুলে সন্ধ্যা দিতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান। রাতে তাঁর খোঁজ মেলেনি। বাড়ির এক সদস্যের কথায়,‘‘ পর দিন সকালে সেই মহিলার শাড়ির অংশ প্রতিমার ঠোঁটে আটকে থাকতে দেখে বোঝা যায়, আচারে ত্রুটি হওয়ায় দেবী তাঁকে খেয়ে ফেলেছেন। তাই এই দেবীর পুজোয় নিষ্ঠাই সব।’’ পুজো হয় একাসনে। ঘট তুলে পুরোহিত সেই যে পুজোয় বসেন, পুজো সেরে সুতো কেটে তবেই উঠতে পারেন। বংশানুক্রমে মূর্তি গড়েন শিল্পী। মূর্তি গড়ায় কোথাও ছাঁচ ব্যবহার করা যাবে না। পুরোটাই হাতে গড়তে হয়। সাজও সব মাটির। প্রাচীন খড়ের চালের মন্দিরে এখন তাল কাঁড়ির উপরে অ্যাসবেস্টসের ছাউনি। কথিত আছে, প্রাচীন কাল থেকেই মন্দিরের ভিতরে আছে পঞ্চমুণ্ডের আসন।