এই মুহূর্তে কলকাতা

পেঁয়াজের ঝাঁজে চোখ জ্বলছে বাংলার মানুষের।

কলকাতা, ৩১ অক্টোবর:- পেঁয়াজের দামের ঝাঁঝে চোখে জল বাংলার মানুষের। প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছুঁয়েছে ৮০ টাকা। মানুষ পেঁয়াজ কিনবে নাকি অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনবে কপালে চিন্তার ভাঁজ। সাধের পেঁয়াজ যেন নিলামে বিকোচ্ছে। তবে এত দাম কি করে বাড়ল প্রশ্ন উঠছে। এই পরিস্থিতিতে দামে ফাটকাবাজি রুখতে বাজারে অভিযানে নামছে টাস্ক ফোর্স। একই সঙ্গে কয়েকদিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম কমবে বলে আশ্বস্ত করছেন ব্যবসায়ীরা। মহালয়ার আগে পেঁয়াজের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৭০ টাকা প্রতি কেজি। পুজোর সময় দাম কিছুটা আয়ত্তে আসলেও লক্ষ্মীপুজো মিটতেই ফের দাম বেড়েছে। সোমবার পেঁয়াজের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি কেজি ৮০ টাকা। মজুত থাকা পেঁয়াজ শেষ হতে চলেছে। নতুন করে মজুত থাকা পেঁয়াজ বাজারে আসলে বেশি দামেই কিনতে হবে বলে আশঙ্কা। কেন এই দাম বেড়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছেই। মহারাষ্ট্রে রবি মরশুমে উৎপন্ন পেঁয়াজের মজুত শেষ হতে চলেছে। খারিজ মরশুমের পেঁয়াজ এখনও বাজারে আসেনি। পশ্চিমবঙ্গে পেঁয়াজের চাহিদার ৩৩ শতাংশ মেটায় সুখ সাগর পেঁয়াজ।

তাও এখনও রাজ্যের রাজ্যের কিষাণ মান্ডিতে পৌঁছায়নি। অন্যদিকে নাসিকের পেঁয়াজের যোগানে সংকট তৈরি হয়েছে। তাই কে বা কারা ফাটকাবাজি করে দাম বাড়াচ্ছে তা দেখতে কলকাতার বাজারে অভিযান শুরু করছে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের টাস্ক ফোর্স। একই সঙ্গে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের পরে পেঁয়াজের দাম পাইকারি বাজারে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমতে পারে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরাও। রাজ্যের বাজার দর নিয়ন্ত্রণে গঠিত টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল কুমার দের আশ্বাস, কালীপুজোর আগে কলকাতা ও জেলার খুচরো বাজারে কমতে পারে পেঁয়াজের দাম।রবি মরশুমে উৎপন্ন ও সংরক্ষিত পেঁয়াজই এখন বাজারে আসছে। তার মজুত ভাণ্ডার কমে গিয়েছে। ফলে সরবরাহে কিছুটা ভাটা পড়েছে বলে ব্যবসায়ী মহলের বক্তব্য। মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ প্রভৃতি রাজ্যে বর্ষাকালে যে পেঁয়াজের চাষ হয়, তা এইসময় মাঠ থেকে বাজারে আসতে শুরু করে। কিন্তু এবার নতুন পেঁয়াজ আসতে দেরি হচ্ছে।

সেগুলি বাজারে আসার পরই পেঁয়াজের দাম কমবে বলে ব্যবসায়ীরা মনে করছেন। কলকাতা ও শহরতলি এলাকায় এখন পেঁয়াজের জোগান আসছে মূলত ভিন রাজ্য, বিশেষত মহারাষ্ট্র থেকে। গত রবি মরশুমের ফেব্রুয়ারি-মার্চে রাজ্যে যে পেঁয়াজ হয়েছিল, তার একাংশ এখনও সংরক্ষিত আছে। ওই পেঁয়াজ বিভিন্ন জেলায় খুচরো বাজারে চাহিদার অনেকটাই মেটাচ্ছে বলে জানান রাজ্যের সংশ্লিষ্ট টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে। কয়েকটি জেলায় বর্ষাকালে কিছুটা পেঁয়াজের চাষ হয়। তার জোগান মূলত জেলাগুলির বাজারেই সীমাবদ্ধ থাকে। কলকাতার পাইকারি বাজারে কয়েকদিন আগেও মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজ ৩০ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছিল। শুক্রবার তা ৪০ টাকা ছাড়িয়েছে। কৃষি বিপণন দপ্তরের সুফল বাংলার স্টলেও এদিন পেঁয়াজ খুচরো বিক্রি হয়েছে ৫৫ টাকায়। ৪৯ টাকা দরে পাইকারি বাজার থেকে সুফল বাংলার জন্য পেঁয়াজ কেনা হয়েছে। পুজোর জন্য গত কয়েকদিন শহরে লরির চলাচল নিয়ন্ত্রিত ছিল। লরি ঢুকতে শুরু করলে পেঁয়াজের জোগান কিছুটা বাড়বে। কমলবাবু মনে করেন, এতে দাম কিছুটা কমতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা নাফেড, এনসিসিএফ প্রভৃতির মজুত পেঁয়াজ কয়েক মাস যাবৎ ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। দিল্লিসহ বিভিন্ন শহরে নির্দিষ্ট জায়গা থেকে ওই পেঁয়াজ কিনেছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা কলকাতায় পেঁয়াজ বিক্রি করছে না কেন? সেই প্রশ্ন উঠছে।