এই মুহূর্তে জেলা

কোন্নগরে রাজরাজেশ্বরী মঠে নবরাত্রি উৎসব।


হুগলি ১৭ অক্টোবর:- রবিবার থেকে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে শারদীয়া নবরাত্রি উৎসব শঙ্করাচার্য স্বামী স্বরূপানন্দ সরস্বতী প্রতিষ্ঠিত কোন্নগর রাজরাজেশ্বরী মঠে ও একই নিয়মে চলছে নবরাত্রি উৎসব। দুই বছর করোনার জন্য বহু ভক্তই মা রাজেশ্বরী ত্রিপুরা সুন্দরীর এই নবরাত্রি উৎসবে অংশ নিতে পারেননি। এবছর তাই ভক্তরা মন্দিরে মায়ের পূজোয় অংশ নিচ্ছেন। প্রতিবছর মহালয়ার পরের দিন শুক্লপক্ষের প্রতিপদ তিথি থেকে শুরু হয় নবরাত্রি উৎসব। এই উপলক্ষে কোন্নগরের রাজরাজেশ্বরী মঠে জ্বালানো হয়েছে ১৮০১ একটি অখন্ড ঘি এর প্রদীপ। যা অখন্ড জ্যোতি নামে প্রচলিত। একটানা নয় দিন ধরেই প্রদীপ জ্বালানো থাকবে মায়ের গর্ভ মন্দির এর নিচে। এছাড়া অষ্টমীর দিন নবদুর্গা রূপে নয় জন কুমারী ও একজন বালকে শিব রূপে পূজো করা হয়, পাশাপাশি ১০০১ কুমারীকে উপহারসহ ভোজন ও বিশেষভাবে পূজা করা হয়। এই নবরাত্রি উৎসব উপলক্ষে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার ভক্ত মঠে পূজো দিতে আসেন প্রতিদিন ভজন কীর্তন সহ মা জগদম্বা রাজরাজেশ্বরীকে নয় দিন ধরে নবদুর্গা রূপে পূজা করা হয়।

মঠের প্রধান পুরোহিত ব্রহ্মচারী সচ্চিৎ স্বরূপ এবং ব্রহ্মচারী শ্রীধর দ্বিবেদী বলেন আজ মায়ের পূজার স্থাপন করা হয় দেশ এবং বিশ্ববাসী সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রার্থনা জানান মা জগদম্বার কাছে। উপপ্রধান পুরোহিত শ্রীধর দ্বিবেদী বলেন যত বেশি মায়ের আরাধনা করবেন ততই মায়ের কৃপা লাভ করা যাবে। এই বছরে পূজোর আয়োজনে থাকবেন সন্ন্যাসী ও ব্রহ্মচারীরাই। কুমারীদের পরিবারের সদস্যরাই তাদেরকে নিয়ে আসবেন। মূল মন্দিরের পশ্চিম দিকে হবে কুমারী পূজো, দুঃস্থ মানুষদের হাতে বস্ত্র তুলে দেওয়া হয়। সংস্কৃতে “নবরাত্রি” নয় রাত। এই নয়টি রাতে লোকেরা উপবাস পালন করে এবং মা দুর্গার নয়টি রূপের উদ্দেশ্যে বিশেষ প্রার্থনা করে। দেবী দূর্গা দেবী পার্বতীর অবতার, তিনি মহিষাসুরকে ধ্বংস করার জন্য দেবী দুর্গার অবতার গ্রহণ করেছিলেন। শারদীয়া নবরাত্রি প্রথম দিনে দেবী দুর্গার নামে ঘট স্থাপন করা হয়। এই দিন থেকেই শুরু হয় নবরাত্রি পূজো, প্রথম দিনে দেবী দুর্গার প্রথম রূপ শৈল পুত্রীর পূজা করা হয়।

তামার একটি বড় ঘট স্থাপন করা হয়, প্রথমে ঘটের উপর হলুদ লাগানো হয়, গঙ্গা থেকে জল এনে তারপরে ঘটে জল ভরে দেওয়া হয়, রুপোর টাকা ঘটের মধ্যে রাখা হয়, ঘটের মুখে আমের পল্লব রাখা হয়, এরপর একটি লাল রঙের নতুন কাপড়ে নারকেলটি জড়িয়ে ঘট এর উপর রাখা হয়। হলুদও কুমকুম দিয়ে ঘটে স্বস্তিক চিহ্ন আঁকা হয়, নরম মাটি দিয়ে একটি বৃত্তের আকার তৈরি করে তার উপর তামার ঘটটি বসানো হয়। মাটির ৪০০ টি সরায় শস্য গুলি পুতে এবং মাটি দিয়ে তাদের ঢেকে দেওয়া হয়, মাটির উপর কিছুটা জল ছিটিয়ে তার উপর ঘট রাখা হয়, ঘটে ফুলের মালা দেওয়া হয়, প্রদীপ জ্বালানো হয় এবং ঘটের পূজা করা হয়। পান পাতা ফুল কিছু শস্য ফল এবং দুধ দেওয়া হয়। ভোগে ছিল পায়েস, খিচুড়ি, পোলাও, সবজির তরকারি, পনির বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি এবং দেবী দুর্গার আরতি করা হয়।