এই মুহূর্তে কলকাতা

বন্যা নিয়ন্ত্রণে জল ধারণ ক্ষমতা খতিয়ে দেখার কাজ শুরু রাজ্যের।

কলকাতা, ২৭ এপ্রিল:- হাওড়া, হুগলি ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একাংশের বন্যা নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকার রূপনারায়ণ ও দামোদরের জলধারণ ক্ষমতা খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছে। রূপনারায়ন অ্যান্ড দামোদর মডেল রিসার্চ প্রজেক্টের আওতায় এই পরিদর্শনের কাজ শুরু হয়েছে। সেচ দফতরের আধিকারিকদের পাশাপাশি এক দল বিশেষজ্ঞ এই পরিদর্শনের কাজ করছেন। এই দলে আছেন রাজ্যের সেচ দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রঘুনাথ চক্রবর্তী, রিভার রিসার্চ বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর বিভাস বর্মন, অভিজিৎ রায়, ডব্লুবিএমআইএমপি’র অ্যাডিশনাল প্রজেক্ট ডিরেক্টর নিলয় চৌধুরী, ডেপুটি ডিরেক্টর দিগন্ত মাইতি সহ সেচ দফতরের কর্তারা।ইতিমধ্যেই এই দল হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া মহকুমার শ্যামপুরের গাদিয়াড়া থেকে পরিদর্শনের কাজ শুরু করে শশাটি, ডিহিমণ্ডলঘাট, বাগনানের বাকসিহাট অবধি পরিদর্শন করে ফেলেছেন। পরে মানকুরের সেচ বাংলোয় একটি বৈঠকও করেন তাঁরা।সেচ দফতর সূত্রে জানা গেছে আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, এই প্রকল্পে দামোদর, মুণ্ডেশ্বরী, হুড়হুড়া খাল সংস্কারের ফলে বর্ষায় রূপনারায়ণে অনেক বেশি জল আসবে। তাই রূপনারায়ণের বর্তমান অবস্থা কী, তা খতিয়ে দেখতেই এই পরিদর্শন। এর ভিত্তিতেই রূপনারায়ণের খাত সংস্কার করা হবে, যাতে বর্ষার সময় মানুষ বিপদে না পড়েন। কিন্তু যদি দেখা যায় রূপনারায়ণ বাড়তি জল টানতে পারছে না তখন নতুন করে কোনও খাল কাটতে হবে।

হাওড়া-হুগলির মাটিকে পৃথক করেছে যে নদ তার নাম রূপনারায়ণ। দামোদরের শাখা নদী মুণ্ডেশ্বরী এবং দ্বারকেশ্বরের মিলিত প্রবাহই রূপনারায়ণ নামে পরিচিত যা গঙ্গায় গিয়ে মিশেছে। সেই নদের মাধ্যমেই ডিভিসি’র দূর্গাপুর জলাধার থেকে ছাড়া জলের বড় অংশই নীচে নেমে আসে ও গঙ্গার সঙ্গে মিশে সাগরে গিয়ে পতিত হয়। কিন্তু পূর্ব বর্ধমান জেলায় বেগুয়াহানায় যেখান দামোদর থেকে মুণ্ডেশ্বরী নদীর জন্ম হচ্ছে সেই উৎসমুখ সেভাবে চওড়া ছিল না। ফলে দামোদর দিয়ে বেশি পরিমাণে জল প্রবাহিত হতে গিয়ে ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছিল হুগলি জেলার আরামবাগ ও হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া মহকুমা এলাকায়। সেই সমস্যার সমাধানের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজ্যের সেচ দফতর বেগুয়াহানা মুণ্ডেশ্বরী নদীর উৎস মুখ সংস্কারের কাজে হাত দেয়। তার জেরে এবার থেকে ডিভিসি’র দূর্গাপুর জলাধার থেকে ছাড়া জলের বড় অংশই মুণ্ডেশ্বরী দিয়েই নীচে নেমে এসে রূপ্নারায়ণে পড়বে। ফলে দামোদরের ওপর সেভাবে কোনও চাপ পড়বে না। কিন্তু এই বাড়তি জলধারণের ক্ষমতা রূপনারায়ণের রয়েছে কিনা সেটাই এখন খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করে দিল রাজ্যের সেচ দফতর।