এই মুহূর্তে জেলা

নাট বল্টুকে ধরে কি হবে ? আসল যন্ত্রটাকে বিকল করতে হবে, হাওড়ায় বিস্ফোরক সেলিম।

হাওড়া, ১৭ ফেব্রুয়ারি:- হিন্দুত্ববাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, অচ্ছে দিন, সাধারণ বাজেট নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ দাগলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। পাশাপাশি ডিএ, পঞ্চায়েতে দুর্নীতি সহ বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্যকে তুলোধোনা করলেন মহ: সেলিম। শুক্রবার মধ্য হাওড়ায় বিজয়ানন্দ পার্কে আয়োজিত সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের প্রকাশ্য সমাবেশে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক ভিত্তি হলো ধর্মনিরপেক্ষতা, সার্বভৌমত্ব এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো। দেশের পক্ষে এই তিনটি ভিত্তি সবথেকে প্রয়োজন। অথচ কেন্দ্রের বিজেপি সরকার চাইছে আমাদের দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে ভেঙে দিতে। এদিন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কার্যত চাঁচাছোলা আক্রমণ করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো ভেঙে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ করতে চাইছে বিজেপি। তাই সংবিধানের প্রাথমিক তিনটি কথা, ধর্মনির্পেক্ষিতা, সার্বভৌমত্ব এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর ওরা অবমাননা করছে। বিরোধী শাসন থাকা রাজ্যগুলিতে রাজ্যপাল পদটিকে ব্যবহার করা হচ্ছে সেখানের সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলার জন্য। প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে অ-বিজেপি রাজ্যগুলিকে।

ওয়ান নেশন থিওরি সামনে রেখে স্বৈরাচারী শাসন চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাঠামো ভাঙার চেষ্টা হচ্ছে। যারা গান্ধীজিকে হত্যা করেছে তারাই আজ ভারতকে দেশভক্তি শেখাচ্ছে। হিন্দুত্ব শেখাচ্ছে। অথচ তাদের পূর্বপুরুষরাই ব্রিটিশদের কাছে আনুগত্য দেখিয়েছে। অন্যদিকে, এদিন পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের ঝান্ডার পাশাপাশি ডান্ডাকে মোটা আর মজবুত করার নিদান দেন সমাবেশের আরেক বক্তা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহ: সেলিম। হাওড়ার বিজয়ানন্দ পার্কের প্রকাশ্য সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেলিম আরও বলেন, গত পঞ্চায়েত ভোটে আমরা দেখেছি সেখানে ভোট লুট হয়েছে। ভোট করতে দেয়নি। পঞ্চায়েতে দুর্নীতি হয়েছে। যাহাই ছাপ্পান্ন, তাহাই নবান্ন। তাই আগামী দিনে ছাপ্পান্ন আর নবান্ন দিয়ে কিছু হবেনা। রাজ্যপালরা কেন্দ্রীয় সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন। সেলিম বলেন, আগে ওরা স্লোগান দিত লাল হটাও দেশ বাঁচাও। লাল হটেছে। দেশ কিন্তু বাঁচেনি। তাই দেশ বাঁচাতে লাল ঝান্ডাকে মজবুত করতে হবে। এদিন সেলিম বলেন, আমরা হাওড়াতেও পুরভোটের দাবি জানাচ্ছি। আমাদের দাবি চ্যালেঞ্জ নাও, নির্বাচনের ডাক দাও।

এদিন হাওড়ার বিজয়ানন্দ পার্কে আয়োজিত এই প্রকাশ্য সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহ: সেলিম, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের সভাপতি এ বিজয়রাঘবন, সাধারণ সম্পাদক বি ভেঙ্কট, সহ সভাপতি অমিয় পাত্র, সহ সম্পাদক তুষার ঘোষ, অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি শ্রীদীপ ভট্টাচার্য সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। প্রসঙ্গত, সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের সর্বভারতীয় ১০ম সম্মেলন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে। সম্মেলন চলবে আগামীকাল ১৮ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। হাওড়ার শরৎ সদনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই সম্মেলন। সম্মেলনের প্রথম দিনে উপস্থিত ছিলেন বিমান বসু সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সম্মেলনের সমাপ্তি দিবসের আগের দিন আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি হাওড়ার বিজয়ানন্দ পার্কে হলো প্রকাশ্য সমাবেশ। এই প্রথমবার পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের জাতীয় সম্মেলন হাওড়ায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে।