এই মুহূর্তে কলকাতা

জল বণ্টনে পাশাপাশি রাজ্য গুলির মধ্যে বিরোধ রুখতে যৌথ কমিটি গঠনের প্রস্তাব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।

কলকাতা , ১৭ ডিসেম্বর:- পূর্বাঞ্চলের প্রতিবেশি রাজ্য গুলোর মধ্যে বিভিন্ন নদ নদীর জল বণ্টন সমস্যার সমাধানে আন্তঃরাজ্য কমিটি গঠন করার প্রস্তাব দিল কেন্দ্রীয় সরকার। জল বন্টনে নিজেদের মধ্যে বিরোধ রুখতে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খন্ড ও বিহারকে নিয়ে তিনি একটি যৌথ কমিটি গঠন করার কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর পৌরহিত্যে শনিবার নবান্ন লাগোয়া সভাঘরে এরাজ্য সহ পূর্বের মোট চার রাজ্যকে নিয় পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠক বসে। সেখানে রাজ্যগুলির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা জল বিবাদ নিয়ে আলোচনা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতেই কেন্দ্রের তরফে এই প্রস্তাব বলে জানা গেচে।বৈঠক নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও তরফেই কিছু জানানো হয়নি।তবে সূত্রের খবর গঙ্গা পদ্মার ভাঙ্গন সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দ্রুত একটি মাস্টার প্ল্যান গ্রহণের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে দাবি জানান। সীমান্ত এলাকার সুরক্ষা, বিএসএফ ও রাজ্য প্রশাসনের সমন্বয়ের বিষয়টিও বৈঠকে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে বলে জানা গেছে।

সীমান্ত নিরাপত্তা মজবুত করতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিএসএফের সঙ্গে রাজ্য পুলিশের সম্বয় বৃদ্ধির ওপর জোর দেন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর অমিত শাহ বৈঠকে বসলেন সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব কেবল মাত্র সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নয়। দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্য সরকারকেও। সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিভিন্ন রাজ্যের সীমান্তে ফেন্সিং ও সেক্টর অফিস তৈরি করার জন্য মাত্রাতিরিক্ত জমি চাইছে বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে অভিযোগ করেন। শাহ বিএসএফকে বিষয়টি নিয়ে নমনীয় হওয়ার নির্দেশ দেন বলে খবর। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্যে রেলের অনেক জমি জবরদখল হয়ে যাওয়ায় প্রকল্প তৈরিতে সমস্যা হচ্ছে বলে বৈঠকে উপস্থিত রেল বোর্ডের সদস্য বৃজেশ কুমার অভিযোগ জানান। রাজ্য গুলোর তরফে পাল্টা জানানো হয় উপযুক্ত পুনর্বাসন ছাড়া কাউকে উচ্ছেদ করা যাবে না।রেলের অব্যবহৃত জমি কিভাবে গঠনমূলক কাজে ব্যবহার করা যায় রাজ্যগুলিকে সেই বিষয়েও ভেবে দেখার কথা বলা হয়। বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি ও সমন্বয় বৃদ্ধির উপরে জোর দেন।

শনিবার নবান্নের বৈঠকে শাহ ও মমতার পাশাপাশি ছিলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব এবং ওড়িশার নবীন পট্টনায়কের মন্ত্রিসভার প্রবীণ মুখ প্রদীপ আমাত উপস্থিত ছিলেন। শাহের সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা। পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে সমন্বয়, নিরাপত্তা, সমস্যা সমাধানের কৌশল ইত্যাদি বিষয় সামনে রেখে গত ৫ নভেম্বর নবান্ন সভাঘরে পূর্বাঞ্চল পরিষদের ওই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা পিছিয়ে যায়। বৈঠকের শুরুতে আয়োজক রাজ্য হিসাবে পশ্চিমবঙ্গের তরফে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সহ অন্যান্য রাজ্য থেকে আসা অতিথিদের হাতে ডোকরার দুর্গা প্রতিমা, বাঁকুড়ার ঘোড়া, কাঁথা স্টিচের উত্তরীয় ও হলুদ গোলাপের স্তবক তুলে দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সুন্দর ব্যবস্থাপনার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।