সুদীপ দাস, ১৯ সেপ্টেম্বর:- লাল পোশাকে ফুলের টোপর-মালায় খুশির আজ বড়ই খুশির দিন। জীবনের প্রথম ছ’মাস হাসপাতালেই কাটিয়ে ফেলেছে খুশি। ৪মাস বয়সে গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে জেলা হাসপাতালে স্থানান্তর। টানা দু’মাস জেলা হাসপাতালে কাটিয়ে আগামীকাল সরকারি হোমে পাড়ি দেবে খুশি। বাকিটা জীবন হয়তো সেখানেই কাটাতে হবে। অর্থাৎ ছোট্ট খুশির আগামী ভবিষ্যত অনেকটাই তার ভাগ্যের উপর নির্ভর করছে। হোমে যাওয়ার আগের দিন খুশির মুখে প্রথমবাবু ভাত তুলে দিল তার দুই মামা। বিগত দু’মাস ধরে মাতৃস্নেহ পাওয়া মাসীদের কোলে কোলেই আজকের দিনটা কাটিয়ে দিল খুশি। জন্ম থেকে সিঙ্গুর গ্রামীণ হাসপাতাল পরে চুঁচুড়া সদর হাসপাতালের সিস্টারদের স্নেহেই খুশি বড় হয়েছে। আজ সেই সিস্টাররাই সদর হাসপাতালে নব-যাতকদের স্থিতিস্থাপক কেন্দ্রে খুশির মামাভাতের আয়োজন করে। হাসপাতালের দুই কর্মী অপরূপ রায় ও অতনু সাহা খুশির মুখে ভাত তুলে দিতে পেরে আপ্লুত হয়ে পরেন।
গত মার্চ মাসে সিঙ্গুর হাসপাতালে ভবঘুরে এক মহিলা খুশির জন্ম দেয়। সেখানে চারমাস থাকার পর গত জুলাই মাসের ২২তারিখ চুঁচুড়া সদর হাসপাতালের এসএনসিইউ ওয়ার্ডে মা ও শিশুকে পাঠানো হয়। গত ৩০শে আগষ্ট হাসপাতাল থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান মা। এরপর ছোট্ট শিশুটি সেই ওয়ার্ডের সিস্টারদের কোলে-কোলেই বড় হতে থাকে। সর্বদা হাসিখুশি শিশুটিকে সিস্টারাই খুশি নামে ডাকতে শুরু করে। আজ খুশির অন্নপ্রাশনের দায়ভারও গ্রহন করেন সিস্টাররাই। এই ওয়ার্ডের সিস্টার ইনচার্জ শম্পা নন্দী বলেন আজ আমাদের কাছে বড়ই খুশির দিন। খুশির আজ অন্নপ্রাশন। এই অন্নপ্রাশনের অনুভূতিটা সত্যিই আলাদা। তবে আগামীকাল খুশি হোমে চলে যাবে। তাই মন তো খারাপ লাগছেই। এদিনের অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে এখানে উপস্থিত হয়েছিলেন হাসপাতালে ডিপুটি সুপার কমলিকা রায় বলেন এখানকার সিস্টার ইন চার্জ এবং সমস্ত কর্মীদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ না জানিয়ে পারলাম না। আসলে এখানকার সিস্টারদের কোলে কোলেই খুশি বড় হয়েছে। তাই একটা পরিবারিক অনুভূতি তৈরী হয়ে গেছে।