হাওড়া, ১৫ সেপ্টেম্বর:- সাম্প্রতিক সময়ে হাওড়া পুরনিগম অঞ্চলে ডেঙ্গু সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যা ১২০-১৩০তে পৌঁছে যাওয়ায় কপালে যথেষ্ট চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল পুর কর্তৃপক্ষের। সেই অবস্থায় বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয় পুরনিগমের তরফ থেকে। পুরনিগমের দাবি, বৃহস্পতিবারের সরকারী তথ্য থেকে জানা গেছে পুরনিগম অঞ্চলে সেই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমে ৩৬ হয়েছে। এখন লক্ষ্য লাগাতার কর্মসূচির মাধ্যমে অবিলম্বে আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যতে নামিয়ে আনা। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই বিষয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে পুর প্রশাসকমন্ডলীর প্রধান ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী জানান, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে হাওড়া পুরনিগম এলাকায় ডেঙ্গু কেসের সংখ্যা ছিল ১০০র বেশি। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী এই সপ্তাহ ডেঙ্গু সংক্রমণের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ছত্রিশে। ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যে কারণে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমেছে বলে দাবি পুরপ্রধানের। তিনি জানিয়েছেন, আগামী নভেম্বর পর্যন্ত একজন সিনিয়র মেডিকেল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি কাজ করছেন হেলথ অফিসার হিসেবে। তিনি ডেঙ্গু সংক্রান্ত ব্যাপারে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর এবং হাওড়া পুরনিগমের সঙ্গে সমন্বয়সাধন সহ ডেঙ্গু সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় দেখাশোনা করবেন। এর পাশাপাশি প্রথমে সিদ্ধান্ত হয়েছে স্বাস্থ্য কর্মী, কনজারভেন্সি, স্প্রে ম্যান বিশেষ করে ডেঙ্গু মোকাবিলায় যারা যুক্ত আছেন তাদের পুজোয় ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
ডেঙ্গু মোকাবিলায় জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর এবং পুরনিগমের সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য তিনি জানিয়েছেন ডেঙ্গু প্রতিরোধে কোনও আলগা দেওয়ার কোন জায়গা নেই। তারা ডেঙ্গুমুক্ত হাওড়া করতে চান। সেই কারণে নভেম্বর পর্যন্ত ছুটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এবার থেকে রেল, পোর্ট ট্রাস্ট এর জায়গাগুলোতে ডেঙ্গু মোকাবিলায় হাওড়া পুরনিগম কাজ করবে বলে জানিয়েছেন পুরপ্রধান। তিনি জানিয়েছেন, পোর্ট ট্রাস্ট, রেলের অনেক জায়গা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে যেগুলি হাওড়া পুরনিগম এলাকার মধ্যে পড়ে। সেই সব জায়গায় ডেঙ্গু রোগের মশার প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছে। এই নিয়ে দুই কেন্দ্রীয় দপ্তরের সঙ্গে কথা হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে ওইসব এলাকায় ঢুকে ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য ব্যবস্থা নিতে পারবে হাওড়া পুরনিগম। তিনি জানিয়েছেন ডেঙ্গু রোগী চিহ্নিতকরণের জন্য ফিভার ক্লিনিক খোলা হয়েছে পুরনিগমের পক্ষ থেকে। এখনও পর্যন্ত পুরনিগমের ১৫টা ইউপিএসসি সহ পুরনিগম এলাকার মোট ২২টি জায়গায় ফিভার ক্লিনিক খোলা হয়েছে। ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের জন্য মানুষকে সচেতন করার জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডের ৩০ থেকে ৫০ টা ফ্লেক্স লাগান হবে। এখন মোট ডেঙ্গু কেস প্রায় ৪১৭। পুরনিগমে আসা লার্ভিসাইড তেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে। এই ব্যাপারে পুর প্রশাসকমন্ডলীর প্রধান জানিয়েছেন র্যানডম টেস্ট করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। অভিযোগ পেলে এজেন্সিকে বাতিলও করা হতে পারে।