এই মুহূর্তে জেলা

প্রতিবেশীর হুমকির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে কপালে জুটলো মার।

হাওড়া, ২৩ আগস্ট:- বাড়ির সামনে রাস্তার জমা জল পরিষ্কার করা নিয়ে প্রতিবেশীর অশালীন মন্তব্য এবং হুমকির প্রতিবাদ করায় হাওড়ার লিলুয়ায় অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলাকে পিটিয়ে তাঁর চার মাসের গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো। শুধু তাই নয়, পুলিশকে অভিযোগ যদি জানানো হয় তাহলে খুনের হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে নির্যাতিতার পরিবারকে। এমনকি, নির্যাতিতার স্বামীকে এবং শ্বশুরকেও আগ্নেয়াস্ত্র এনে মারধর করা হয়। অভিযুক্ত হামলাকারীরা শাসক দল আশ্রিত বলে অভিযোগ। লিলুয়ার ভট্টনগরের ওই ঘটনায় অন্তঃসত্ত্বা মহিলার পেটে লাথি মারা হয় বলে অভিযোগ। এতেই তাঁর চার মাসের গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। অন্তঃসত্ত্বা ওই মহিলাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। কিন্তু বাঁচানো যায়নি সন্তানকে। এই ঘটনায় লিলুয়া থানার পুলিশ সোমবার রাতে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে। আক্রান্ত মহিলার পরিবার আতঙ্কে রয়েছেন এই ঘটনায়। জানা গেছে, গত ১৪ আগস্ট দুপুরে লিলুয়ার ভট্টনগর আমবাগান এলাকার বাসিন্দা রামকরণ রায় বাড়ির সামনে বৃষ্টির জলে ভেসে আসা জঞ্জাল পরিষ্কার করছিলেন। এই নিয়ে তাঁদের প্রতিবেশী লক্ষ্মী তালুকদারের বচসা এবং ঝামেলা হয়। এরপর অশান্তি সাময়িকভাবে মিটলেও প্রতিবেশী রাতের দিকে ১০-১৫ জন সশস্ত্র দুষ্কৃতী নিয়ে রামকরণ রায়ের বাড়িতে চড়াও হয় বলে অভিযোগ।

সেই রাতে দুষ্কৃতীরা রামকরণের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ঊর্বশী রায়ের উপর চড়াও হয়ে তাকে বেধড়ক মারধর এবং পেটে লাথি মারলে চার মাসের নষ্ট হয়ে যায়। আক্রান্ত পরিবারের অভিযোগ হামলার নেতৃত্ব দেয় স্থানীয় এক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। আহত ঊর্বশী রায়কে প্রথমে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসার পর তাকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়। বাড়িতেই তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত ১৮ই আগস্ট লিলুয়া থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করে ওই পরিবার। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। সোমবার রাতে পুলিশ এই ঘটনায় সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগে প্রেম তালুকদার এবং তার ছেলে প্রকাশ তালুকদারকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের মঙ্গলবার হাওড়া আদালতে তোলা হবে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান পারিবারিক ঝামেলার জেরে এই ঘটনা। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। পুলিশ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা শুরু করেছে। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত কেশব হালদার তাঁর বিরুদ্ধে ওটা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন সেদিন সন্ধেবেলায় তিনি ওখানে ছিলেন না। এই ঘটনার বিন্দুবিসর্গ তিনি জানেনও না। এদিকে, এই ঘটনায় আসল অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও ঘটনার সুবিচার দাবি করেছেন অন্তঃসত্ত্বার পরিবার।