হাওড়া, ২০ জুলাই:- ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ভারতীয় রেলওয়ে দেশের নাগরিকদের সাথে ‘আজাদী বা অমৃত মহোৎসব” উদযাপন করছে। এরই অঙ্গ হিসেবে বুধবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের তরফে হাওড়া স্টেশনের নিউ কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হাওড়া-মুম্বই ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস মেল ট্রেনের আধুনিক পরিষেবার শুভ সূচনা করেন বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী জ্যোতির্ময় ঘোষ। প্রাক-স্বাধীনতা যুগের স্মৃতিবিজড়িত এই ট্রেনটি বর্তমানে নতুন ও উন্নত এলএইচবি রেক সহ যাত্রা করলো। যার মধ্যে রয়েছে একটি ফার্স্ট এসি, দুটি এসি টু-টিয়ার, পাঁচটি এসি থ্রি টিয়ার, দুটি এসি ইকোনমি শ্রেণী, সাতটি স্লিপার শ্রেণী, দুটি অসংরক্ষিত সাধারন কামরা এবং দুটি পাওয়ার কার। ট্রেনটি আনুমানিক এক ঘণ্টায় ১৯৬৮ কিমি দূরত্ব যাত্রা করবে। দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রের খবর, এটি প্রাক-স্বাধীনতা যুগের ট্রেন। হাওড়া-মুম্বাই মেল ভায়া নাগপুর ১৮৯৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তার প্রথম যাত্রা শুরু করে।
ট্রেনটি ১২৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে পরিষেবা দিয়ে চলেছে এবং ভারতীয় রেলওয়ের নেটওয়ার্কে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন। এটি আনন্দনগরী’ কলকাতা-র সঙ্গে ‘ভারতের অর্থনৈতিক রাজধানী’ মুম্বাই (ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ টার্মিনাস)কে সংযুক্ত করেছে। এই ট্রেনটি পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়গণ্ড, ওড়িশা, ছত্তিশগড় এবং মহারাষ্ট্রের মধ্য দিয়ে যাত্রা করে, যা দেশের বৈচিত্র্যময় এবং সমৃদ্ধ সংস্কৃতির আভাস দেয়। প্রাথমিকভাবে, খড়গপুর-বিলাসপুর শাখার নির্মাণ কার্য শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত এই ট্রেনটি) আসানসোল (ইস্ট ইণ্ডিয়ান রেলওয়ে) এবং নাগপুর (বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ে)-এর মাধ্যমে হাওড়া ও মুম্বাই এর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছিল। কলকাতা এবং মুম্বাই এর সাথে সংযোগকারী ১৯৬৮ কিলোমিটার (১২২৩ মাইল) দীর্ঘ হাওড়া-নাগপুর-মুম্বাই লাইন ১৯০০ সালে চালু হয়। যদিও ব্রিটিশ সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সম্পদ শোষণের একটি হাতিয়ার হিসাবে রেলওয়ে যোগাযোগের প্রসার ঘটিয়েছিল কিন্তু এই রেলপথই ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামে এক আশীর্বাদ হিসাবে প্রমাণিত হয়েছিল। সমসাময়িক অন্যান্য ট্রেনের সঙ্গে এই ট্রেনটিও বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের সাথে সসংযোগস্থাপন করতে ব্যাপক অবদান রেখেছিল।