এই মুহূর্তে জেলা

শ্রীরামপুর শহরের উন্নতিকল্পে সুধীজনদের মুখোমুখি বিধায়ক সুদীপ্ত রায়।

তরুণ মুখোপাধ্যায়, ২৮ মে:- ঐতিহ্যমন্ডিত শ্রীরামপুর টাউনহলে এক মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানে শহর শ্রীরামপুর কে কি করে আরও সুন্দর এবং মনোরম করা যায়, সেই সমস্ত বিষয়গুলি নিয়ে নগরের সুধীজনদের সঙ্গে কথা বললেন শ্রীরামপুরের বিধায়ক ডাক্তার সুদীপ্ত রায়। তার সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। ছশো বছরের প্রাচীন এই শহরে আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন। সেই সমস্ত নিদর্শনগুলোকে কি করে রক্ষা করা যায় তার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। ডেনমার্ক শাসনাধীন শ্রীরামপুরের বহু ইতিহাস প্রসিদ্ধ সৌধ এবং ভবন গুলিকে আবার সংস্কার করে পুরনো রূপ দেওয়া শুরু হয়েছে। এর বাইরেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বহু নিদর্শন। এর সঙ্গে সঙ্গে রয়েছে প্রাচীন এই শহরের বহু সমস্যা। যেহেতু এত পুরনো শহর এখানকার রাস্তা ঘাট সমস্তটাই তৈরি হয়েছিল তখনকার জনসংখ্যার ভিত্তিতে। কয়েক যুগ ধরে এই শহরের নানা বিবর্তন ঘটেছে। পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম ব্যস্ততম শহর হিসেবে শ্রীরামপুর আজ পরিণত। কিন্তু জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তাঘাটের পরিসর না বাড়ায় প্রচুর সমস্যা রয়েছে এখানে। এই সমস্ত সমস্যা গুলো যেমন এদিনের অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন সুধীজনেরা, তার সঙ্গে সঙ্গে এই শহরের শিক্ষা খেলাধুলা সাংস্কৃতিক চর্চার কেন্দ্র গুলি যাতে আরো উন্নত হয় সে ব্যাপারেও তারা নানা মত বিধায়কের সামনে তুলে ধরেন। শ্রীরামপুর শহরের সু সন্তান এবং দান বীর হিসেবে পরিচিত তুলসী চরণ গোস্বামী কে আজ ভুলে যেতে বসেছে এই শহর। এত বড় একজন বিদগ্ধ মানুষ, ইংরেজ শাসনে ভারতীয় রাজনীতির অন্যতম স্তম্ভ ছিলেন তুলশী গোস্বামী, অথচ দুঃখের বিষয় এই শহরে তার একটি মূর্তি পর্যন্ত নেই। যাতে সম্মানের সঙ্গে তার একটি মূর্তি শহরের প্রাণকেন্দ্রে বসানো যায় সে ব্যাপারেও ব্ সুধীজনেরা ডক্টর সুদীপ্ত এর কাছে তুলে ধরে।

এই শহরের প্রচুর দেব দেউল আছে যেগুলো ইতিহাস প্রসিদ্ধ কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেগুলো নষ্ট হতে বসেছে।। এই ব্যাপার গুলোও আজকের এই সুধীজনদের মুখোমুখি অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়। এই শহরে জন্ম নিয়েছেন বহু পন্ডিত গুণী জ্ঞানী মানুষেরা। যাতে তাদের নামে শ্রীরামপুরের কিছু রাস্তার নামকরণ করা যায় সেই বিষয় টাও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে তুলে ধরা হয়। শ্রীরামপুর শহর এক কালে বাংলার ফুটবল মানচিত্রে অন্যতম খেলোয়াড় জোগান বা সাপ্লাই দেবার কেন্দ্রবিন্দু ছিল। খেলাধুলার উন্নতি কল্পে প্রয়াত জননেতা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ডাক্তার গোপাল দাস নাগের উদ্যোগে একটি স্টেডিয়াম গড়ে উঠেছিল কিন্তু মাহেসের জন নগর রোডের প্রফুল্ল চন্দ্র স্টেডিয়ামটি আজকে ভগ্নদশায় পরিণত। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা সত্বেও কোনো রকম কোনো সুরাহা হয়নি আজকের এই বৈঠকের বিষয়টি উঠে আসে। এর সঙ্গে উঠে আসে হুগলি জেলার প্রথম প্ রবীন্দ্রভবনটি জীর্ণ হয়ে পড়েছে। এটিকে আবার পুনর্নির্মাণ করে সুন্দর রূপ দেওয়া যায় কিনা সে বার্তাও এখানকার সংস্কৃতি প্রিয় সুধীজনরা ডক্টর সুদীপ্ত রায় গোচরে আনেন। সব মিলিয়ে এদিনে সন্ধ্যা শহরের বিদ্বজনদের উপস্থিতিতে মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল। শুধুমাত্র সমস্যার আলোচনা নয় অভাব-অভিযোগ নয় তার মাঝেও মাঝে রবীন্দ্র সংগীত নজরুল গীতি আবৃত্তির মধ্য দিয়ে সন্ধ্যাটি হয়ে আরও রঙিন হয়ে ওঠে। এদিনের এই মুখোমুখি অনুষ্ঠানে ডাক্তার সুদীপ্তর রায়ের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন শ্রীরামপুরের পুর প্রধান গিরিধারী সাহা, উপ পুর প্রধান উত্তম নাগ, চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল সন্তোষ সিং প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল গৌরমোহন দে কাউন্সিলর মিলন মুখার্জি এবং সমাজসেবী কাবুল মুখার্জি সহ অন্যান্য বিশিষ্ট জনেরা