কলকাতা, ২৮ এপ্রিল:- যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে ফিরে আসা পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের স্বার্থে রাজ্য সরকার তাদের পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। নবান্নে আজ এক সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জানান, ওই পড়ুয়ারা যাতে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন করে পড়াশোনা শুরু করতে পারেন সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে মাস দেড়েক আগে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রের কাছ থেকে কোনরকম সাড়া না পাওয়ায় রাজ্য সরকার নিজস্ব উদ্যোগে তাদের ভর্তির ব্যবস্থা করেছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকারের তৎপরতায় এরাজ্যের মোট ৪২২ জন বাসিন্দাকে রাজ্যে ফিরিয়ে আনা হয়। এদের মধ্যে ৪১২জন ডাক্তারি, ৬ জন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১ জন পশু চিকিৎসা বিষয়ের পড়ুয়া এবং তিনজন শ্রমিক। হঠাৎ ইউক্রেন থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হওয়ায় তারা ভবিষ্যত নিয়ে তুমুল অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছিলেন। রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তরের সচিব এবং সরকারি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিকেল কলেজ গুলির সঙ্গে আলোচনার পর তাদের ভবিষ্যত সুরক্ষিত করতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান।
তিনি বলেন, মেডিকেলের পড়ুয়াদের মধ্যে ইউক্রেনের নিয়মে ষষ্ঠ তথা চূড়ান্ত বর্ষের ২৩ জন ছাত্রছাত্রীকে বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজে ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ দেওয়া হবে। চতুর্থ ও পঞ্চম বর্ষের ১৩৫ জন পড়ুয়াকে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে অবজার্ভিং সিটে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতি কলেজে ১৫ থেকে ২০ জন পড়ুয়াকে ভর্তির ব্যবস্থা করা হবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়ারা বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজে ভাগ করে প্রাক্টিক্যাল ক্লাস করার সুযোগ পাবেন। প্রথম বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়ারা রাজ্যের বিভিন্ন বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ম্যানেজমেন্ট কোটায় নতুন করে ভর্তির সুযোগ পাবেন। রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে বেসরকারি কলেজ গুলির সঙ্গে কথা বলেছে এবং তাদের কোর্স ফিতে কিছু ছাড় দেওয়ার ব্যাপারে অনুরোধ জানিয়েছে বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।
পশু চিকিৎসা বিষয়ের পড়ুয়াটিকে রাজ্য প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। দন্ত চিকিৎসা বিভাগের তিনজন পড়ুয়াকে সরকারি কলেজে ইন্টার্নশিপ এবং প্র্যাকটিকাল ক্লাসের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। একইরকমভাবে ইউক্রেন ফেরত ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ৬ জন পড়ুয়ার প্রত্যেককেই জিআইএস পরিচালিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে তিনি জানান। ইউক্রেন ফেরত শ্রমিকদেরও রাজ্য সরকার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার এই পড়ুয়াদের জন্য কিছুই করেনি। আমাদের অনেক ছেলেমেয়েরাই পড়তে বাইরে যায়। আমরা তাদের না দেখলে কে দেখবে?