এই মুহূর্তে কলকাতা

ষষ্ঠ বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে বিনিয়োগ প্রস্তাবের মোট অঙ্ক ৩ লক্ষ ৪২ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা।

কলকাতা, ২৩ এপ্রিল:- বিগত ৫টি বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনকে ছাপিয়ে এবারের সম্মেলনে সর্বাধিক বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে রাজ্য সরকার। ষষ্ঠ বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে বিনিয়োগ প্রস্তাবের মোট অঙ্ক ৩ লক্ষ ৪২ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা। এই সব প্রস্তাবের যাতে দ্রুত ও যথার্থ বাস্তবায়ন ঘটে তার জন্য এবার কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে রাজ্য সরকার। যার মূল কেন্দ্রে রয়েছে রাজ্যের ১২ টি জেলা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা ৩টি পণ্য করিডর। এই ৩টি পণ্য করিডরের আশেপাশে এলাকাতেই সম্মেলনে আসা বিনিয়োগ প্রস্তাবগুলির রূপায়নের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। যে ৩টি পণ্য করিডর ঘিরে রাজ্য সরকার শিল্প নির্মাণের জন্য কোমর বাঁধছে সেই ৩টি পণ্য করিডর হল তাজপুর-রঘুনাথপুর, ডানকুনি-কল্যাণী এবং ডানকুনি-ঝাড়গ্রাম।

এই ৩টি করিডরের মোট ৬০৩ কিলোমিটার রাস্তা ও সহযোগী রাজ্য সড়কগুলি ছড়িয়ে রয়েছে যে ১২টি জেলায় সেগুলি হল দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান, নদিয়া, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলায়। পাশাপাশি উপকৃত হবে বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ জেলাও। অর্থাৎ সামগ্রিক ভাবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি এই ৩টি পণ্য করিডর ও তার আশেপাশে আগামী দিনে গড়ে উঠতে চলা শিল্পতালুক, শিল্পপার্ক, শিল্প কারখানার হাত ধরে সব থেকে বেশি উপকৃত হতে চলেছে। নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী শিল্প দফতরকে বিশেষ ভাবে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে যে সব শিল্পপতিরা রাজ্যে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন তা যেন এই ৩টি পণ্য করিডর ও তার হাত ধরে উপকৃত হতে চলা ১২টি জেলাতে দ্রুত বাস্তবায়িত করা হয়।

মুখ্যমন্ত্রীর সেই নির্দেশের পরেই রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক স্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গের প্রতিটি জেলাতে যাচ্ছে কড়া নির্দেশ। যেই নির্দেশে বলে দেওয়া হচ্ছে, বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেওয়া শিল্পপতিরা যাতে তাঁদের বিনিয়োগ বাস্তবায়িত করার সুযোগ পান, সেই পরিবেশ-পরিকাঠামো দ্রুত নিশ্চিত করতে পারেন তা দেখতে হবে জেলা প্রশাসনগুলিকে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে দেশে প্রথম হওয়ার পরেই মুখ্যমন্ত্রী এখন চাইছেন বৃহৎ শিল্পেও যেন বাংলা এবার দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে উঠে আসে আগামী ১০ বছরের মধ্যে। তাই বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন ধরনের শিল্প-সম্ভাবনাকে একত্রিত করার চেষ্টা চলছে। পণ্য করিডর-পরিকাঠামোর আওতায় ধাতু-পণ্য ও ফ্যাব্রিকেশন, বৈদ্যুতিন যন্ত্রাংশ, বস্ত্র, রাসায়নিক, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ,

খনিজ, প্লাস্টিক ও রবারের সামগ্রী এবং পণ্য মজুত ও পরিবহণের মতো ক্ষেত্রের উপরে নজর রাখা হচ্ছে। ওই ৩টি পণ্য করিডর এবং তার আশেপাশে ছড়িয়ে থাকা রেল-বিমান-জলপথ যোগাযোগ, উন্নত রাজ্য সড়ক এবং জাতীয় সড়ক ১৯,৬,৪১ এবং ৩৪ এর উপস্থিতি যাতে শিল্পপতিদের শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে অনুঘটক হয়ে ওঠে সেটা দেখছে রাজ্য সরকার। এমনিতেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, এ রাজ্যে সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের আর পুনঃরাবৃত্তি না হলেও শিল্প গড়তে জমি কোথাও সমস্যা হয়ে উঠবে না। ওই ৩টি পণ্য করিডরের আশেপাশে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই ৩১ হাজার একর জমি চিহ্নিত করে রেখেছে যেখানে শিল্পপতিরা যে সব বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন সেই সবের বাস্তবায়ন ঘটনানো যাবে। তাই মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন দ্রুত প্রস্তাবের বাস্তবায়ন ঘটানো হোক।