সুদীপ দাস, ২৫ মার্চ:- অভিজ্ঞানের মুকুটে আবার সেরার শিরোপা। হুগলি-চুঁচুড়ার অভিজ্ঞান কিশোর দাস পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের বারোটি রাজ্যের মধ্যে আঠার বছরের কম বয়সী শ্রেষ্ঠ “প্রযুক্তি উদ্ভাবক হিসাবে স্বীকৃতি পেল। আয়োজক দ্য টেলিগ্রাফ-এডুগ্রাফ এবং অনলাইন এবিপি গোষ্ঠী। গত ডিসেম্বরে আয়োজক কর্তৃপক্ষ মনোনয়ন চেয়েছিল পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের ১২টি রাজ্যের সমস্ত বিদ্যালয় থেকে। প্রায় দেড়মাস চলা এই মনোনয়ন পর্বে এক হাজারেরও বেশি মনোনয়ন জমা পড়েছিল। কেউ সংগীতে পারদর্শী তো কেউ ভাস্কর্যে। কেউ ভারত নাট্যম নৃত্যে ভারত সেরা, তো কেউ গণিতে বিশারদ। হুগলি কলিজিয়েটের দশম শ্রেণির অভিজ্ঞানও এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। ধাপে ধাপে চলে মনোনয়ন বাছাই প্রক্রিয়া। চূড়ান্তভাবে সেরা পঞ্চাশ মনোনীত কিশোর-কিশোরীদের বেছে নেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর চলে ভারত বিখ্যাত স্বনামধন্য বিচারকদের চুলচেরা বাছাইপর্ব ও বিশ্লেষণ।
বিচারকদের মধ্যে ছিলেন অভিনেত্রী পাওলি দাম, গায়ক ও সংগীত পরিচালক অনুপম রায়, গ্রান্ডমাস্টার দাবারু দিব্যেন্দু বড়ুয়া, অলিম্পিক শুটার জয়দীপ কর্মকার প্রমুখ। অভিজ্ঞানের অনলাইন ইন্টারভিউ নেন আরেক বিচারক খড়্গপুর আই আই টির প্রাক্তন ডিরেক্টর অধ্যাপক পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী। প্রায় আধঘন্টা ধরে চলে অভিজ্ঞানের উদ্ভাবন পারদর্শীতার বিশ্লেষণ পর্ব। অভিজ্ঞানের কথায়, “স্যার এমন ভাবে প্রশ্ন করছিলেন যেন মনে হচ্ছে এখুনি আমাকে কিছু আবিষ্কার করে দেখাতে হবে। আমিও চেষ্টা করে গেছি সাধ্যমত বিশ্লেষণাতক ব্যাখ্যা দেওয়ার”। জি ডি বিড়লা সভাঘরে গত মঙ্গলবার তারকাখচিত এক জাঁকজমক সন্ধ্যায় অভিজ্ঞানের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বিশিষ্ট শিল্পপতি রোহিত কাপুর ও ম্যাকাউটের ভাইস চান্সলার অধ্যাপক সৈকত মৈত্র।
এমন নজরকারা সাফল্য পেয়ে কেমন লাগছে — এই উত্তরে অভিজ্ঞান জানায়, “যেকোনও সাফল্যই পরবর্তী কাজে অনুপ্রেরণা যোগায়। তবে, এক্ষেত্রে ১২টি রাজ্যের মধ্যে প্রথম হওয়ায় বেশ আনন্দিত হয়েছি। আমি চাই মানুষ আরও বেশি করে বিজ্ঞানমনস্ক হোক, আমার উদ্ভাবনগুলো মানুষের কাজে লাগুক”। সম্প্রতি, বিশেষ এক টাচ ফ্রি হ্যান্ড স্যানিটাইজার সিস্টেম বানিয়ে অভিজ্ঞান ভারত সরকারের থেকে পেটেন্ট পেয়েছে। স্বীকৃতি এসেছে নীতি অযোগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমাররে কাছ থেকেও। অভিজ্ঞানের পরিচালিত পন্ডিত মধুসূদন গুপ্তর উপরে বিজ্ঞাননির্ভর ডকুড্রামা ভারতের আন্তর্জাতিক সায়েন্স ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল। এমন গুণী কিশোরের কদরে মেতেছে হুগলি-চুঁচুড়াসহ রাজ্যবাসী। সোশ্যাল মিডিয়াতে অভিজ্ঞানের প্রশংসায় ঝড় তুলেছে নেটিজেনেরা। বিভিন্নমহল থেকে ফোনেও আসছে অভিনন্দনবার্তা।