এই মুহূর্তে কলকাতা

ঊর্ধ্বমুখী করোনাকে লাগাম টানতে আগামী ১৫ই জানুয়ারি পর্যন্ত কড়া বিধিনিষেধ রাজ্যে।

কলকাতা, ২ জানুয়ারি:- করোনা সংক্রমণ লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকায় ফের কড়া বিধিনিষেধ জারি করল রাজ্য। আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে রাজ্যে। রবিবার নবান্ন সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জানান, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পঠন-পাঠন বন্ধ থাকবে। শিক্ষাকর্মীদের ৫০% উপস্থিতি থাকবে রোটেশন অনুযায়ী। তবে পরীক্ষার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে। সরকারি অফিস পুরসভা গুলিতে কর্মীদের ৫০% হাজিরা থাকবে রোটেশন অনুযায়ী। বেসরকারি অফিস গুলিতেও অর্ধেক কর্মী নিয়ে কাজ করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। বাড়ি থেকে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছে সরকার লোকাল ট্রেন সন্ধ্যে সাতটা পর্যন্ত চলবে। মোট আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে লোকাল ট্রেন চালাতে হবে। কোভিড বিধি যাতে ঠিকমত মানা হয় সে ব্যাপারেও রেলকে বলেছে নবান্ন। তবে দূরপাল্লার ট্রেন চলবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। তবে মেট্রো চলাচলের ক্ষেত্রে সময়ের বিধিনিষেধ নেই। ৫০% যাত্রী নিয়ে রাত দশটা পর্যন্ত মেট্রো চলবে।

দিল্লি ও মুম্বাই থেকে সরাসরি বিমান কলকাতায় ওঠানামার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ জারি করেছে সরকার। মুখ্যসচিব জানান, সপ্তাহে দুদিন সোমবারও শুক্রবার এই দুই শহর থেকে কলকাতা বিমান ওঠানামা করবে। রাত ১০ টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত কঠোর নিয়ন্ত্রণ বলবত থাকবে। জরুরি পরিষেবা ছাড়া যান চলাচল, জমায়েত ও অন্যান্য সবই বন্ধ রাখতে হবে। চালু থাকবে হোম ডেলিভারি। পার্ক চিড়িয়াখানা টুরিস্ট স্পট বন্ধ থাকবে। এছাড়াও জিম স্পা বিউটি পার্লার, সুইমিং পুল সেলুন ওয়েলনেস সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শপিংমল মার্কেট কমপ্লেক্স রেস্তোরাঁ বারে একই সময় একসঙ্গে ৫০ শতাংশের বেশি লোক ঢোকানো যাবে না। দশটা পর্যন্ত এগুলি খোলা থাকবে। সিনেমা হল ওর থিয়েটার হলগুলিতেও মোট আসন সংখ্যা অর্ধেক নিয়ে চালাতে হবে। হলে মিটিং এর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০০ জন অথবা আসন সংখ্যার ৫০% যেটা কম হবে কতজন লোক থাকবে। বিয়ে বাড়ি ছাড়াও সামাজিক ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ৫০ জন লোক নিয়ে করতে হবে। শেষকৃত্যের ক্ষেত্রে কুড়ি জন লোক থাকতে পারবে। পাবলিক প্লেসে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব‌।

তিনি বলেন দোকান বাজার মার্কেট কমপ্লেক্স শপিং মল-সহ পাবলিক প্লেসে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। মাস্ক না পড়লে সরকার ব্যবস্থা নেবে। বণিকসভা গুলিকে সরকার আহ্বান করেছে, প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো এবারও এক একটি বাজারের দায়িত্ব নিয়ে জীবাণুমুক্ত করা ও সচেতনতা প্রচার চালানোর জন্য। বেসরকারি কল-কারখানা চা বাগান গুলিতে কর্মীদের টিকাকরণ ও কোভিড বিধি মেনে কাজ চালানোর নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। মুখ্যসচিব বলেন,’সংক্রমণ বাড়ছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমাদের পরিকাঠামো তৈরি আছে। হাসপাতালের বেড, অক্সিজেন পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। যদিও হাসপাতালে মাত্র ১.৫% বিডি এখন করোনা রোগী আছে। ৯৫% আক্রান্ত রোগীর কোন উপসর্গ নেই।’ সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। দুয়ারে সরকার কর্মসূচি এক মাসের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে সরকার। মুখ্য সচিব জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দুয়ারের সরকার কর্মসূচি শুরু হবে।