এই মুহূর্তে জেলা

চন্দননগরে কাজ হয়নি ; হাতিয়ার বিরোধীদের , দিদির উন্নয়নেই বৈতরনী পার হবে ; আশা শাসকের !

সুদীপ দাস , ২৮ ডিসেম্বর:- অবশেষ চন্দননগর পুর-নিগমের ভোটের ঢাকে কাঠি পরলো। আগামী ২২শে জানুয়ারি কোলকাতা বাদে রাজ্যের অন্যান্য পুরনিগমগুলিতে নির্বাচন। ফলাফল ঘোষনা ২৫শে জানুয়ারি। একটা সময়ে বামেদের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত চন্দননগরে আজ তৃণমূলের রমরমা। তবে শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দলও এখানেই বারংবার প্রকাশ্যে এসেছে। নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ের জেরে এই পুরনিগমের নির্বাচিত ভোট ভেঙে দিতে হয় রাজ্য সরকারকে। সম্প্রতি প্রশাসক মন্ডলি বসানো হলেও বিগত ৫বছরে দু’বছরের বেশী সময় এই পুরনিগমে কোন বোর্ড ছিলো না। ফলে পুরনিগমের কাজ দেখাশোনা করেছেন সরকারী আধিকারিক পদে থাকা পুর-কমিশনার।

ফলে বহু মানুষই নিজেদের স্বার্থে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সহযোগীতা পাননি। বহু কাজও থমকে গেছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। রাস্তা-ঘাট থেকে শুরু করে পানীয় জল, বিশেষ করে এলাকা পরিষ্কারের মত নিত্যদিনের বহু কাজ নিয়ে সাধারন মানুষের ভুড়ি ভুড়ি অভিযোগ। তবে বেশকিছু মানুষ চন্দননগরের জনপ্রিয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের কাজে খুশি। যদিও বিরোধীরা কিন্তু সাধারনের অভিযোগকে হাতিয়ার করেই ভোট ময়দানে নেমে পরেছে। কোনদলই প্রার্থী তালিকা ঘোষনা না করলেও সকলেই মঙ্গলবার সকাল থেকে দেওয়াল দখলে নেমে পরেছে। শেষবার ২০০৫ সালে চন্দননগর পুরনিগম ছিলো বামেদের দখলে। মোট ৩৩টি ওয়ার্ডের মদস্যে সেবার সিপিএমের দখলে ছিলো ২০টি আসন, তৃণমূল কংগ্রেসের ভাগ্যে ১০টি এবং অন্যান্যরা ৩টি আসন দখল করেছিলো।

সিঙ্গুর আন্দোলনের পর ২০১০ সালে সমগ্র রাজ্য রাজনীতিতে সবুজ বিপ্লব ঘটার সাথে সাথে চন্দননগরও সেদিকেই মোড় নেয়। তৃণমূল কংগ্রেস একাই ২৩টি আসন দখল করে চন্দননগর পুরনিগম দখল করে। সেবার সিপিএমের ৭এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের ১টি আসন মিলিয়ে বামেদের মোট ৮টি আসন নিয়ে শান্ত থাকতে হয়। অন্যান্যরা ২টি আসন পায়। আর ২০১৫ সালে চন্দননগর পুর-নিগমের শেষ নির্বাচনে তৃণমূল আসন সংখ্যা ২৩থেকে কমে ২১-এ দাঁড়ায়। এবারও সিপিএম ৭এবং শরিক দল ফরওয়ার্ড ব্লকের ১টি নিয়ে বামেরা পায় ৮টি আসন। আর জাতীয় কংগ্রেস পায় ৩টি আসন। ২০১৫ তেই চন্দননগরে ১টি আসন নিয়ে বিজেপি খাতা খোলে। তবে ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে চন্দননগর পুরনিগমের বেশকিছু ওয়ার্ডে জয়ী ছিলো বিজেপি।

তবে সেই জয় ধরে রাখতে পারেনি বিজেপিও। ফলে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে চন্দননগর পুরনিগমে ভরাডুবি ঘটে বিজেপিরও। আবারও তৃণমূল নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক দখল করে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলকে বেগ দিতে যথেষ্ট তৎপর হতে হবে বিরোধী শিবিরকেও। বিরোধীরা যেখানে চন্দননগর পুরনিগমে কাজ না হওয়াকেই হাতিয়ার করে ভোট ময়দানে নামছেন সেখানে তৃণমূল কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নকেই হাতিয়ার করে এবারের নির্বাচনে মানুষের রায়ে চন্দননগর পুরনিগম ৩৩/০ আসনে জয়লাভ করবে বলেই দাবী করছে। বিরোধী না রাজ্যের শাসক চন্দননগর পুরনিগম ভোটে কাদের ভাগ্যে শিঁকে ছেঁড়ে তার জন্য ২৫শে জানুয়ারী পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে!

https://youtu.be/pIj9hRaOSVw