এই মুহূর্তে কলকাতা

লাগাতার ভার্চুয়াল বৈঠক সরকারি কাজের গতি ব্যাহত হচ্ছে বলে দাবি প্রশাসন কর্তাদের।


কলকাতা, ২৬ ডিসেম্বর:- ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বা সতীর্থদের সঙ্গে সমন্বয় হোক বা নিয়মিত কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা, সরকারি প্রকল্পের গতি মসৃণ ও দ্রুত করতে অভ্যন্তরীণ বৈঠকের গুরুত্ব অপরিসীম। করোনাকালে সরকারি কাজে অনলাইন এবং ভার্চুয়াল বৈঠকের গুরুত্ব বেড়েছে দ্রুত গতিতে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই লাগাতার বৈঠক সরকারি কাজের গতি ব্যাহত করছে বলে দাবি প্রশাসনের কর্তাদের। বিশেষ করে জেলাশাসকের মত কর্মব্যস্ত আমলাদের জন্য উপর্যপরি বৈঠক দৈনন্দিন কাজের গতিকে রুদ্ধ করছে বলে প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় উঠে এসেছে। এমত অবস্থায় জেলাশাসকদের ওপর থেকে এই বৈঠকের বোঝা কমিয়ে প্রশাসনিক কাজের গতি বাড়াতে সচেষ্ট হল রাজ্য প্রশাসন। জানা গিয়েছে, জেলাশাসকদের ওপর থেকে বৈঠকের বোঝা কমাতে নবান্ন থেকে রীতিমত প্রতিটি দফতরের সচিবদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

এরপরেও যদি বৈঠকের সংখ্যা না কমে তাহলে সুনির্দিষ্ট আদেশনামাও আগামী দিনে প্রকাশ করতে পারে নবান্ন, এমনই ইঙ্গিত মিলেছে রাজ্যের শীর্ষ প্রশাসনিক মহল থেকে। কেননা তাঁরা জানতে পেরেছেন নিত্যদিনের বৈঠকের চাপে রীতিমতো হাসফাঁস করছেন জেলাশাসকেরা। জানা যাচ্ছে, মুখ্যসচিব নিজে সপ্তাহে বা দু’সপ্তাহে একবার জেলার কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেন। তা বাদ দিয়ে প্রতি দিনই গড়ে ২-৩টি করে বিভিন্ন দফতরের সচিবের সঙ্গে বৈঠকে থাকতেই হয় জেলাশাসক বা জেলা প্রশাসনের অন্য কর্তাদের। সব মিলিয়ে মাসে অন্তত ৬০-৭০টি এমন বৈঠক হয়। রাজ্য স্তর থেকে যে নির্দেশ আসে, তা মহকুমা-ব্লক স্তরে পৌঁছে দিতে সেখানকার আধিকারিকদের সঙ্গেও কথা বলা দরকার। ফলে দৈনিক আরও একটি বা দু’টি অতিরিক্ত বৈঠক করতেই হয়। একেকটি বৈঠকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গড়ে এক ঘণ্টা সময় ধরলেও দিনে চার-পাঁচ ঘন্টা সময় বৈঠকেই কেটে যায়।

প্রশাসনের শীর্ষ মহলের পর্যবেক্ষণ, এ ভাবে বৈঠকে সময় কাটলে অন্যান্য প্রশাসনিক কাজের ক্ষতি হবেই হবে জেলা শাসকদের কার্যালয় সূত্রে জানা জ্ঞিয়েছে, দুয়ারে সরকার এবং পাড়ায় সমাধান কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর থেকে জেলা প্রশাসনগুলির কাজ এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এর ওপরে কোভিড পরিস্থিতিতে চিকিৎসা এবং টিকাকরণেও বাড়তি লোকবল নিয়োগ করতে হচ্ছে জেলাশাসকদের। তাই কাজের চাপ যেমন বেড়েছে, তেমনই কমেছে লোকবলও। প্রশাসনের খবর, এই পরিস্থিতিতে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী নিজেও চাইছেন, কাজের স্বার্থেই বৈঠকের আওতা থেকে জেলা-কর্তাদের যতটা সম্ভব মুক্ত রাখা হোক।দু’সপ্তাহে একবার বৈঠক করার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করা হোক। ই-মেল, হোয়াটসঅ্যাপ, ফোন এবং সরকারি চিঠিপত্র সমন্বয় এবং নজরদারি এবং নির্দেশ আদানপ্রদানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। ফলে বৈঠকের সংখ্যা কিছুটা কমলেও সমন্বয়ের প্রশ্নে সমস্যা তৈরি হবে না। সেই মনোভাবই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন দফতরের সচিবের কাছে।