সুদীপ দাস, ৮ ডিসেম্বর:- একটা সময় জাতীয় কবি অরুন চক্রবর্তীর লেখা “লাল পাহাড়ির দেশে যা” গানটি চুরির স্বাক্ষী থেকেছে সঙ্গীত প্রেমী বাঙালী। এবারে এক আম বাঙালীর জনপ্রিয় লোকগীতি চুরি করে লক্ষ লক্ষ টাকা কামিয়ে নিলো সাইবারপ্রেমী বাঙালীরা। শ্রীরামপুর স্টেশনে মহুয়া গাছটির প্রেম ভরা তিরে বিদ্ধ হয়েছিলেন অরুনবাবু। এরপরই অরুনবাবুর হৃদয়ের রং দিয়ে ৫০ বছর পূর্বের সেই চিরগাঁথা “লাল পাহাড়ির দেশে যা” বেড়িয়ে আসে। গানটি জন্মানোর বহু বছর পরও অনেকেই নিজেদের গান বলে দাবী করেছিলেন। কিন্তু আজ সবই মিথ্যা বলে প্রমানিত। এবারে সেই “লাল পাহাড়ির দেশে যা” গানের ৫০ বছরের মুহুর্তে আবারও এক লোকগীতি চুরি নিয়ে তোলপাড় বাংলা। তবে এবারে গানের স্রষ্টা একেবারে সাদামাটা গ্রাম বাংলার “ভূবন।”
হ্যাঁ একেবারে প্রখ্যাত পরিচালক আশুতোষ গোওয়ারিকাররের সারা জাগানো ছবি লগানের “ভুবন”। আমির খানের নিপুন দক্ষতায় সাদামাটা ভুবনের চরিত্র ছিলো অনবদ্য। ভুবন সাদামাটা হলেও তাঁর মধ্যে ছিল ঐশ্বরিক কোন ক্ষমতা। ভুবনের সেই ক্ষমতার জোড়েই ম্যাচ হেরে কর মুকুব করতে বাধ্য হয়েছিল ফিরিঙ্গিরা। আর বীরভূমের ভুবনের মধ্যেও হয়তো আছে কোন ঐশ্বরিক ক্ষমতা। যে ক্ষমতার জোড়ে নিছক বাদাম বিক্রি করতে করতেই তাঁর কন্ঠেই রচিত হলো “বাদাম বাদাম” গান। এবারেও চুরি হলো ভুবনের গান। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে সেই গান সুপার ভাইরাল। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে চোরেদের টাকা কামানোর হিড়িকে ভুবনবাবুর এই গান আজ বিশ্ববাসীর সামনে সমাদৃত। কিন্তু ভুবনবাবু! তিনি আছেন তিমিরেই! প্রতিদিন কিছু মানুষ কিছু খাদ্য সামগ্রী আর সম্বর্ধনা দিয়ে যাচ্ছেন ঠিকই।
কিন্তু যে গান চুরি করে চোরেরা লক্ষ লক্ষ টাকা কামালো তার সিকিভাগও জুটলো না ভুবনের কপালে। তবে “সত্যমেব জয়তে”। ভুবন জিতেছে। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতেই মানুষ জানতে পেরেছে “বাদাম বাদাম” গানের স্রষ্টা আসলে ভুবনই। তাই আপাতত সম্বর্ধনা নিয়েই থেমে থাকতে হচ্ছে ভুবনকে। আসলে “এ কপালের দোষ দিয়ে, তুই নিজে লুকাস না রে”! তাই নিজের আবিস্কারের গুরুত্ব বুঝতে না পারাটা যে ভুবনেরই ভূল, সেটাও তো সত্য! সেই ভূলের মাসুল দিচ্ছে ভুবন। প্রতিদিন ভুবনের গলায় উঠছে উত্তরীয়। আর ভুবনের ভূলকে পাথেয় করে সাইবারপ্রেমীরা প্রতিদিন পকেট ভরছে! আপাতত ভুবন তাই ভুবন পানে চেয়ে! কখন সেই অজানা শক্তির দয়ায় আবার নিজের কন্ঠ থেকে বেড়িয়ে আসে এক অনবদ্য কোন গানের কলি!!!