এই মুহূর্তে কলকাতা

আজ থেকে শুরু হলো বাঘ সুমারীর কাজ।


কলকাতা, ৭ ডিসেম্বর:- ঘূর্ণিঝড় আমফন ও ইয়াসের দাপটে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবনের। তবে জাওয়াদ আগেই শক্তি হারিয়ে ফেলায় ততটা ক্ষতি হয়নি। তবুও সাবধানের মার নেই, তাই বাঘ শুমারি পিছিয়ে দিয়েছিল রাজ্যের বন দফতর। আগে ঠিক ছিল ৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে সুন্দরবনে বাঘ গণনার কাজ। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের আশঙ্কায় তা পিছিয়ে ৭ ডিসেম্বর করা হয়। সেইমতো মঙ্গলবার থেকে শুরু হল বাঘ সুমারির কাজে লেগে পড়েছেন বনকর্মীরা। এবার এক অনন্য পদ্ধতিতে হচ্ছে সুন্দরবনের বাঘ গণনার কাজ। অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় জিপিএস ও ইনফ্রারেড প্রযুক্তি সম্বলিত হাই রেজুলেশান নাইট ভিসন ক্যামেরার সাহায্যে গোনা হবে বাঘের সংখ্যা। যার কাজ শুরু হল মঙ্গলবার থেকে। রাজ্যের বন দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, শেষ ব্যাঘ্র সুমারি অনুযায়ী সুন্দরবনে ৯৬ টির মতো বাঘ রয়েছে। তবে বেশ কিছুদিন ধরে যেভাবে লোকালয়ে বাঘের হামলার ঘটনা ঘটছে এবং পর্যটকরা সুন্দরবনে বেড়াতে এসে বারে বারে যেভাবে বাঘের দর্শন পেয়েছেন তাতে সুন্দরবনের জঙ্গলে বাঘের সংখ্যা আগের থেকে বেশ খানিকটা বেড়েছে বলেই অনুমান করছেন বন আধিকারিকরা।

তাই এবারের বাঘ গণনা নিয়ে উৎসাহ আরও বেড়েছে বনকর্মীদের। জানা যাচ্ছে, সুন্দরবনের কোর এরিয়ার মোট ৭৪৮টি জায়গায় ক্যামেরা বসানো হবে। এক একটি জায়গায় দুটি করে ক্যামেরা লাগানো হবে, যাতে সেই ক্যামেরার সামনে কোনও বাঘ এলে তাঁর সামনে ও পিছনের দিকের ছবি তাতে ধরা পড়ে। এছাড়া ওই জায়গায় পচা মাংস আর পচা ডিমের সংমিশ্রণে তৈরি তরল একটি বাঁশের টুকরোয় লাগিয়ে দেওয়া হবে। যাতে বাঘ ওই বিশেষ তরলের গন্ধে আকৃষ্ট হয়। আর কোনও বাঘ সেই ক্যামেরার সামনে এলেই স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা তাঁর ছবি তুলবে। ৩০ থেকে ৩৬ দিন পরে সেই ক্যামেরাগুলি খুলে নিয়ে তাতে ওঠা ছবি বিশ্লেষণ করে সুন্দরবনের সঠিক বাঘের সংখ্যা নির্ধারণ করবেন বিশেষজ্ঞরা। বন বিভাগের কর্তারা জানিয়েছেন, বনকর্মীদের ১০টি বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছে বাঘ গণনার জন্য। যারা জঙ্গলের মধ্যে ক্যামেরা বসানোর কাজ করবেন। এক একটি দলে অন্তত ১২ থেকে ১৫ জন করে বনকর্মীরা রয়েছেন। সব মিলিয়ে প্রায় ৪০০ বনকর্মী এই কাজে নিয়োজিত থাকবেন।