হুগলি, ১৭ নভেম্বর:- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই হুগলি জেলার তারকেশ্বর থেকে আরামবাগ পযন্ত প্রথম রেল চলাচল শুরু হয়। তারপর তারকেশ্বর থেকে গোঘাট পযন্ত রেল চলায় খুশি হয় আরামবাগবাসী। তাদের কাছে স্বপ্নের রেল স্টেশন হলো আরামবাগ রেল স্টেশন। কিন্তু এই স্টেশনে যাত্রীরা কোনও বিপদে পড়লে আরপিএফের কাছে অভিযোগ জানাতে ভয় পাচ্ছেন। না না কোনও অফিসারের জন্য অথবা রেল দপ্তর বা প্রশাসনিক গাফিলতির জন্য নয়। স্থায়ী অফিসের অভাবেই রেল যাত্রীরা তথা মহিলা রেল যাত্রীরা আরপিএফ অফিসে সরকারি অভিযোগ জানাতে ভয় পাচ্ছেন। কারন একটাই। এই অস্থায়ী অফিসের মধ্যে আরপিএফ কর্মী ও অফিসাররা যেমন অফিসের কাজ করেন তেমনি একই ভাবে চলে খাওয়া দাওয়া এবং বেডে শুয়ে ঘুমানো। একেবারে ছাত্রাবস্থার মেসবাড়ির মতো চলছে অফিস। এমনটাই অভিযোগ স্থানীয় মানুষদের। তাদের দাবী, পৃথক এবং স্থায়ী অফিস হলে মহিলা রেল যাত্রী বা সাধারণ যাত্রীরা সরাসরি আরপিএফ অফিসে গিয়ে অভিযোগ জানাতে পারবে।
কিন্তু অফিসের ভিতরেই কিচেন থেকে শুরু করে বেডরুম হলে কিভাবে অভিযোগ জানানো যাবে। উঠছে প্রশ্ন। আরামবাগ রেল স্টেশনের আরপিএফ অফিসে গেলেই দেখা যাবে চেয়ার টেবিল নিয়ে অফিসার বসে থাকলেও ঠিক তারই পাশে চলছে রান্না এবং ঘরের মধ্যে সারি দিয়ে বেড লাগানো আছে। একজন মহিলা রেল যাত্রী যদি অসুবিধার মধ্যে পড়েন তাহলে তিনি কিভাবে এই রখম এক পরিস্থিতিতে অফিসের মধ্যে ঢুকে তার সমস্যার কথা তুলে ধরবেন? এই বিষয়ে আরামবাগের গৌরহাটি থেকে আসা এক গৃহবধু বলেন, আরামবাগ স্টেশনে নামার সঙ্গে সঙ্গেই বুঝতে পারি আমার মানিব্যাগ খোয়া গেছে। মানিব্যাগ পড়ে গেছে তা না হলে চুরি হয়ে গেছে।আমি আরপিএফ অফিসে জানানোর জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু অফিসের সামনে গিয়ে দেখি দুই জনলোক হাফপ্যান্ট পড়ে শুয়ে আছে। ডিউটির ফাঁকে হয়তো বিশ্রাম নিচ্ছেন। আমি বিব্রতবোধ করি। স্বামীর কথা মতো অভিযোগ না জানিয়েই ফিরে আসতে হয়েছিলো। মানিব্যাগে সামান্য টাকা থাকায় ফিরে এসেছিলাম। যদি বৃহৎ ক্ষতি হত তাহলে আমাকে বাধ্য হয়ে ডাকাডাকি করে আরপিএফ অফিসে অভিযোগ জানাতে হত।
এই রখম বেহাল অফিস দেখে খারাপ লাগছে। রেলযাত্রীদের স্বার্থে স্থায়ী ও কোয়ার্টারের বাইরে অফিস করা প্রয়োজন। অপরদিকে আরামবাগ থেকে হাওড়াগামী এক নিত্য ট্রেনযাত্রী বলেন, আরামবাগের আরপিএফ অফিস পৃথক করা দরকার।বহুক্ষেত্রে আমাদেরও অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়।পুরুষ হয়েও দুপুরে খাওয়ার সময় অফিসে ঢুকতে কুন্ঠাবোধ করি। তাই আমাদের দাবী আরামবাগ রেলস্টেশনে পৃথক আরপিএফ অফিস করা হোক।যাতে করে সাধারণ রেলযাত্রীরা সঠিক পরিসেবা পায়। এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেল দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, পৃথক অফিস নির্ধারিত না হওয়ায় আরামবাগ রেলস্টেশনে কোয়াটারেই অফিস করা হয়েছে। সমস্যাটির যাতে দ্রত সমাধান হয় তার জন্য রেলের উচ্চ পদাধিকারীকে জানানো হয়েছে। অফিস নির্ধারিত হলেই নাকি অস্থায়ী এই আরপিএফ অফিসটিকে স্থানান্তরিত করা হবে। এখন দেখার রেল যাত্রীদের স্বার্থে রেল দপ্তর কবে আরামবাগ রেল স্টেশনে স্থায়ী আরপিএফ অফিস তৈরি করে।