এই মুহূর্তে জেলা

৩৫০ বছর আগে স্বপ্নাদেশে এক তান্ত্রিক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সিঙ্গুরের আনন্দময়ী কালী।


হুগলি, ৩ নভেম্বর:- গ্রামের কন্যা কে ‘মা আনন্দময়ী’ কালী নামে পুজো করে সিঙ্গুরের জগৎনগর গ্রামের মানুষজন। একদিকে দক্ষিণেশ্বরে রয়েছেন মা ভবতারিণী। ঠিক তার উল্টোদিকে গঙ্গার এপারে রয়েছেন ‘মা আনন্দময়ী’। হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লাইন শাখায় মীর্জাপুর-বাঁকীপুর স্টেশনে নেমে দশ মিনিটের হাঁটা পথে গেলেই এই মা আনন্দময়ী মন্দির। কথিত আছে, ৩৫০ বছর আগে এক তান্ত্রিক মাকে স্বপ্নাদেশ পেয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পড়ে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ভক্তদের দানের টাকায় তৈরী হয়েছে দক্ষিণেশ্বরে আদলে এই মন্দির। আগে এই গ্রামে কানা নদীর পাশে ছিল জঙ্গলে ভরা নির্জন শ্মশান এলাকা। জানা যায়, গ্রামের বাসিন্দা সুবল চন্দ্র রায়ের আনন্দময়ী ওরফে আন্দি নামে নয় বছর বয়সী এক ব্রাম্ভ্রণ কন্যার মৃতদেহ সৎকার করতে শ্মশানে নিয়ে আসে। সৎকার করার সময় তুমুল ঝড়বৃষ্টি শুরু হতেই শবদাহকারীরা ঐ কন্যা সন্তানের জলন্ত মৃতদেহ ফেলে পালিয়ে যায়। সেই সময় এক তন্ত্রসাধক আনন্দময়ী কন্যাকে আধপোড়া মৃতদেহ কে কবর দিয়ে তার উপর পাথরের শীলা মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করে।

আগে জঙ্গলের গাছের ডালপালা দিয়ে ঘর তৈরি করে পুজো শুরু করে। এরপর বাংলার ১২৯৪ সালে গ্রামের ব্যাবসায়ী কৈলাস দত্ত মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে একটা ছোট মন্দির তৈরী করে বেনারস থেকে অষ্টধাতুর মূর্তি এনে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পুজো করার জন্য কাশী থেকে দীগম্বর চক্রবর্তী নামে এক পুরোহিত কে আনিয়ে শুরু হয় মায়ের পুজো। সেই থেকে তাদের বংশধরেরা পুজো করে আসছে মা আনন্দময়ী কালীর। পরে বাংলার ১৪১২ (ইং ২০০৬) সালে ভক্তদের দানে ৬৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ৬৫ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট মন্দির তৈরি করা হয়েছে। প্রাচীন রীতি মেনে মন্দিরের গর্ভগৃহে পূজারীর বংশধরেরা ছাড়া আর কেউ প্রবেশ করতে পারে না। কালীপুজোর দিন চার প্রহরে চারবার পুজো হয়। লুচি, খিচুড়ি, পায়েস ও ফল দিয়ে মায়ের নৈবিদ্যে দেওয়া হয়। প্রথা মেনে ছাগলী ও ফল বলী হয় কালীপুজোর দিনে। তবে মাঘ মাসের ২৭, ২৮, ২৯ তারিখে হয় অন্নকূট উৎসবে লক্ষ লক্ষ ভক্তদের সমাগম হয় মা আনন্দময়ীর মন্দিরে।