এই মুহূর্তে জেলা

নতুন করে নিম্নচাপে সিঁদুরে মেঘ দেখছে আরামবাগের বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ।

মহেশ্বর চক্রবর্তী, ১৯ অক্টোবর:- আবারও নিম্ন চাপ। টানা বৃষ্টি দক্ষিনবঙ্গ জুড়ে। আর এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন আরামবাগ মহকুমার বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ। এই দুর্যোগঘন পরিস্থিতিতে এবং উৎসবের মরসুমে মানুষ যখন আনন্দে মতোহারা তখন এই সমস্ত বন্যা দুর্গত মানুষের মনে মন খারাপের সুর। মেঘ ঘন আকাশের দিকে অসহায় ভবে তাকিয়ে তারা। ২০২১ সালের টানা তিনবারের সর্বগ্রাসী বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় আরামবাগ মহকুমার ছয়টি ব্লকেই। কয়েক হাজার মাটির বাড়ি থেকে শুরু করে পাকার বাড়ি ভেঙে পড়েছে। আর এই জন্য এখনও কয়েক হাজার মানুষ নদীবাঁধে ও রাস্তার উপর আশ্রয় নিয়ে রয়েছে।হুগলি জেলার আরামবাগ শহরের দ্বারকেশ্বর নদীবাঁধের পল্লীশ্রী এলাকার মানুষ অসহায় ভাবে নদীবাঁধ ও রাস্তার ওপর ত্রিপল খাঁটিয়ে বসবাস করছেন। উল্লেখ্য কয়েক দিন আগেই দ্বারকেশ্বর নদীর জল বাঁধ ভেঙে আরামবাগ শহর ও পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড প্লাবিত করে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় দৌলতপুর, পল্লীশ্রী, মনসাতলা, বৃন্দাবনপুর, কালিপুরসহ বেশ কয়েকটি জায়গা। আবার নিম্নচাপের জেড়ে বৃষ্টি হওয়ায় এই সমস্ত মানুষেরা আবারও আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এই পল্লীশ্রী এলাকার দ্বারকেশ্বর নদীর বাঁধ সংলগ্ন একটা বিশাল আকৃতিরও নদী গর্ভের মধ্যে শতাধিক পরিবার বসবাত করতো।

দ্বারকেশ্বর নদীর বাঁধ ভেঙে পড়তেই এই গর্তের মধ্যে জল প্রবেশ করে।নিমিষের মধ্যে এই শতাধিক পরিবার জলবন্দী হয়ে পড়ে। তবে আরামবাগ থানার আইসি ও পৌরসভার প্রশাসক স্বপন নন্দী ও পৌর প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য অতনু কুন্ডু দাঁড়ায়ে থেকে দ্রুত তাদের উদ্ধার করে।তা না হলে বড়ো বিপদ ঘটে যেত।প্রান হানি না ঘটলেও বন্যার জলে সব ভেসে যায়।বাড়ি ঘর সব ভেঙে পড়ে। চারিদিকে হা হাকারের ছবি দেখা যায়। এই বিষয়ে নদীবাঁধে বসবাসকারী এক মহিলা সুমিত্রা খান বলেন, বন্যার জলে সব ভেসে গেছে।বাড়ি পড়ে গেছে। আবারও নিম্নচাপ হচ্ছে। বৃষ্টি হলে কি করবো খুঁজে পাচ্ছি না।পৌরসভার প্রশাসক আমাদের সাহায্য করছেন। তবে আমাদের একটাই দাবী ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক। অন্যদিকে রাধা দোলুই জানান, আমাদের ঘর বন্যার জলে ধ্বংস হয়ে গেছে।বসবাসের জায়গা নেই। তাই বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। তবে এই বিষয়ে পৌরসভার প্রশাসক স্বপন নন্দী জানান, দ্বারকেশ্বর নদীর বাঁধ ভেঙে গোটা আরামবাগকে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। আমরা বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে আছি। বর্তমানে আরামবাগ পৌরসভার পক্ষ থেকে এই সব দুর্গত মানুষদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে এই সমস্ত অসহায় মানুষের বর্তমান পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। মেঘ দেখলেই অস্থির হয়ে উঠছেন তারা। মাথার ওপর সামান্য ত্রিপল। আবার যদি প্রবল বৃষ্টি হয় আর নদীর হানা দিয়ে জল প্রবেশ করে তাহলে কি করবে তারা। দিশাহারা মানুষগুলোর কাতর আবেদন একটা ছোট বাড়ীর ব্যবস্থা করুক সরকার। এখন দেখার এই সমস্ত নদী বাঁধে বসবাসকারী মানুষের অসহায় অবস্থার কথা ভেবে কি পদক্ষেপ নেয় প্রশাসন।