সুদীপ দাস , ১৮ অক্টোবর:- রাত পোহালেই কোজাগরীর আরাধনায় মাতবে আপামর বাঙালী মূলতঃ ঘরে শান্তি ও যশের কামনায় ঘরে ঘরে লক্ষ্মী পুজো আয়োজিত হয়। কিন্তু যারা লক্ষ্মী প্রতিমা তৈরী করে ঘরে লক্ষ্মী ফেরাতেন সৈইসমস্ত মৃৎশিল্পীরা আজ বড় অসহায়। বিগত বছরের পর বছর ধরে হুগলীর ২নম্বর কাপাসডাঙ্গার পাল পরিবারগুলি মৃৎশিল্পের সাথে যুক্ত। তাঁদের নামেই এই এলাকার নাম পালপাড়া। বেশীরভাগ পরিবারই ঠাকুর তৈরী করেন। এঁদের মধ্যে গৌতম পাল বংশ পরম্পরায় মূলতঃ ছোট সাঁঝের প্রতিমা তৈরী করে আসছেন। যার মধ্যে অন্যতম লক্ষ্মী প্রতিমা।
একটা সময় এই বাড়িতে অতিরিক্ত কারিগর কাজ করতেন। ঘর ভর্তি ছোট লক্ষ্মী প্রতিমা তৈরীতে ব্যাস্ত থাকতেন কারিগরেরা। নাওয়া-খাওয়ার সময় থাকত না গৌতমবাবুরও। কিন্ত মূল্যবৃদ্ধির জেরে বিগত কয়েকবছর ধরে লক্ষ্মী তৈরীতে ভাঁটা পরা শুরু হয়। একদিকে মাটির দাম বাড়া অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে রং-এর দামও। কিন্তু সেই তুলনায় প্রতিমার দাম মিলছিলো না। এরপর বাঙালীর ঘরে ঘরে ধাতু ও পাথরের প্রতিষ্ঠিত প্রতিমা ঢুকতে শুরু করার মাটির প্রতিমার চাহিদাও কমতে শুরু করে। তাই বিগত এক দশক ধরে গৌতম পালের ঘরে লক্ষ্মী প্রবেশ ক্রমশ বাঁধার সম্মুখীন হয়।
কফিনে শেষ পেরেকটি পোঁতে করোনা মহামারি। ফলে গতবছর থেকে পেটের টানে অন্য কাজে যেতে হয় গৌতমবাবুকে। বাদ পরে কারিগরেরাও। তবে পারিবারিক শিল্পের কথা ভেবে ফাঁকা সময় বাড়িতে বসে প্রতিমা তৈরী করছেন গৌতমবাবু। স্বামীর সাথে থেকে এখন এই কাজে সাবলম্বী হয়েছেন গৌতমবাবুর স্ত্রী সোনালী পালও। সোনালীদেবীও লক্ষ্মী লাভের আশায় এখন লক্ষ্মী তৈরী করে চলেছেন। তবে সংখ্যায় অনেক কম।