এই মুহূর্তে জেলা

প্রাক্তন রঞ্জি ক্রিকেটারের ছেলের হাতে তৈরি দুর্গায় ভাস্কর্যের নৈপুন্যতা !

সুদীপ দাস , ৩০ সেপ্টেম্বর:- প্রাতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা নেই। ছোটবেলা থেকে কাদা মাটির প্রতি ভালোবাসাই নিজের শিল্পসত্ত্বাকে প্রকাশ করেছে। ৫ বছর বয়স থেকেই দেবী দুর্গার মুর্তি তৈরি করা শুরু চুঁচুড়ার পিপুলপাতি মহেন্দ্র মিত্র রোডের বাসিন্দা সত্যজিৎ শীলের। বছর তিরিশের সত্যজিতের বাবা সঞ্জিত শীল বাংলা দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার। একটি রঞ্জি ম্যাচও খেলেছেন। মা শেলি শীল গৃহবধু। হাটতে শেখার পর থেকেই শুভ কাদা মাটি ঘাটতে ভালোবাসত। হয়তো কিছু বুঝতে পেরেই ছেলেকে ছোটবেলায় আঁকার স্কুলে ভর্তি করে দেয় বাবা-মা। আঁকার মাস্টারের হাতে সাদা কাগজে সুশৃঙ্খলভাবে লাইন টানা শেখার পর বাড়িতে এসে কাদা মাটির মধ্যেই চলতো আঁকিবুকি। মনের ভাবনা থেকেই মাত্র ৫ বছর বয়সে সত্যজিতের হাতে তৈরি হয় মাটির দুর্গা মূর্তি।

তারপর থেকে প্রতি বছর পুজোর আগেই দেবী মুর্তি তৈরি করার প্রয়াস শুরু। প্রত্যেকবারই সেই মূর্তিতে নতুন নতুন শিল্পের নিদর্শন ফুটে উঠতো। তবে বছর দশেক আগে থেকে সত্যজিত নিজেই দুর্গা মুর্তি তৈরী করে নিজেই পুজো দিতে শুরু করেন। সত্যজিতের মনের আলোয় তৈরী সেই দুর্গা মূর্তিতে প্রবেশ করে ভাস্কর্যের নৈপুন্যতা। এবছর দৈর্ঘ্য-প্রস্থে প্রায় সমান ৩ ফুটের সেই মুর্তি বিগত ৩ মাস ধরে নিজের হাতের ছোঁয়ায় তৈরি করছেন সত্যজিৎ। সম্পূর্ণ মাটির তৈরী এই মুর্তির প্রতি ইঞ্চিতে অপরূপ শিল্পকলার নিদর্শন। সত্যজিতবাবু বলেন বিগত দশ বছরের ন্যায় এবারেও এই মুর্তি আমিই পুজো দেবো। তবে মন্ত্র আমি জানি না। পুজো দেওয়ার জন্য দরকার মনের। তাই আমি মন থেকে নিজের মত করেই পুজো দেবো। আসাধারন এই মুর্তি সংরক্ষনের জায়গার অভাব।

তাই বিসর্জনও নিজ হাতে দেন সত্যজিৎ। সত্যজিতের বাবা-মা দুজনেই ছেলের কাজে খুশি। মা শেলিদেবী বলেন ছোট থেকেই ছেলে কাদা ঘাটতো। আমাদের ধর্মীয় গুরু আমাকে বলেছিলো ও হাতেই সৃষ্টি করবে। গুরুর ভবিষ্যদ্বাণী মিলে গেছে। বাবার বক্তব্য আমি খেলোয়ার ছিলাম বলে ছেলেকেও খেলোয়ার হওয়ার জন্য কোনদিনই চাপ দিইনি। ও নিজের পছন্দমতই শিল্পকে বেছে নিয়েছে। সত্যজিতের মনের আলোয় তৈরী শিল্পকলায় সমৃদ্ধ অপরূপ এই প্রতিমা বিসর্জনের সময় যারা দেখেন তাঁদের কষ্ট হয়। কিন্তু সত্যজিতের হয় না। যার কারন হিসাবে সত্যজিতের বক্তব্য আমি তো তৈরি করতে জানি। তাই বিসর্জন হলেই তো আবার নতুন সৃষ্টি তৈরি হবে সত্যজিতের হাতে!