কলকাতা, ২২ সেপ্টেম্বর:- লাগাতার বৃষ্টি এবার পিছনে ছাড়ছে না। বর্ষার জমা জলে থৈথৈ কলকাতা থেকে জেলা। আর এই জমা জলের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে প্রাণঘাতী ডেঙ্গু ম্যালেরিয়া মশার। রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্র এই একই ছবিতে উদ্বেগে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। করোনা কালে মশাবাহিত এইসব রোগ সংক্রমণ যাতে হাতের বাইরে না চলে যায় সে জন্য আগাম পদক্ষেপ নিল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। ডেঙ্গু ম্যালেরিয়া মশা বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে জেলা গুলিকে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। কোন কোন জেলা থেকে ডেঙ্গু রোগীর খোঁজ মিলছে তা নিয়মিত খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আগাম পরিকল্পনা করে রাখতে হবে। কোথায় জল জমছে, মশার উপদ্রব বাড়ছে তা দেখতে হবে, এলাকা পরিদর্শন করে নিয়মিত রিপোর্ট জমা দিতে।
গোটা রাজ্য জুড়েই জ্বরের সঙ্গে ডেঙ্গুর প্রকোপও বেড়েছে।তবে পরিসংখ্যাণ বলছে গতবছর ডেঙ্গু সংক্রমণের সংখ্যা ছিল বিগত বছরগুলোর তুলনায় অনেকটাই কম। আক্রান্তের সংখ্যার মাপকাঠিতে কলকাতাও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এগিয়ে ছিল। কমেছিল ম্যালেরিয়াও। ২০১৯ সালে যেমন হাজার তিনেকের বেশি ডেঙ্গু কেস ধরা পড়েছিল রাজ্যে। গত বছর সেখানে সংখ্যাটা ছিল একশোর কিছু বেশি। কিন্তু এ বছর আবার বর্ষার জমা জলে মাথাচাড়া দিচ্ছে ডেঙ্গু। উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় জ্বরে ভোগা রোগীদের শরীরে ডেঙ্গুর ভাইরাসও মিলেছে। সূত্রের খবর, কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা থেকে ডেঙ্গু আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় দেশের অন্য কয়েকটি রাজ্যে ডেঙ্গুর প্রভাব মারাত্মকভাবে বেড়েছে।
এ রাজ্যে ডেঙ্গুর সঙ্গে বাড়ছে ম্যালেরিয়ার প্রকোপও। বাংলাদেশে আবার ডেঙ্গুর অতি সংক্রামক প্রজাতি ‘ডেনভি-৩’ ছড়িয়ে পড়েছে, সেখানেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। কাজেই করোনার মধ্যে যদি ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া আরও আছড়ে পড়ে তাহলে কী হবে সে নিয়ে চিন্তা বেড়েছে স্বাস্থ্য ভবনের। স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, ডেঙ্গুর মরসুম চলছে। তাই অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের খেয়াল রাখতে হবে, কী লক্ষণ নিয়ে রোগী হাসপাতালে আসছে। ডেঙ্গু জ্বর আর কোভিডের জ্বর কিন্তু এক নয়। কিছুটা ফারাক আছে, সেটা ধরতে হবে। রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। পাশাপাশি ডেঙ্গু ম্যালেরিয়া জ্বর নিয়ে লাগাতার সচেতনতা প্রচারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।