সুদীপ দাস , ২৩ জুলাই:- দীর্ঘ ১৭বছর পর প্রয়াত তৃণমূল নেতা তথা একদা কংগ্রেসের বিধায়ক রবীন মুখার্জীর মূর্তি স্থাপনের অনুষ্ঠানকে ঘিরে সরগরম হুগলি জেলার রাজনীতি। নিমন্ত্রন না পেয়ে বৃহস্পতিবার প্রয়াত নেতার সহধর্মীনি তথা বিজেপি নেত্রী সুমা মুখার্জীর আক্ষেপ প্রকাশের পর শুক্রবার নিমন্ত্রন না পাওয়ার অভিযোগ তুললেন খোদ তৃণমূলের বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত। প্রসঙ্গত ১৯৯৬ সালে তৎকালীন বাঁশবেড়িয়া বিধানসভার কংগ্রেস বিধায়ক ছিলেন রবীন মুখার্জী। রাজনীতিতে মমতা ব্যানার্জী ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রবীনবাবু মমতার হাত ধরেই তৃণমূলে আসেন। বাম আমলে হুগলী রবীন মুখার্জী, আকবর আলি খন্দকার আর তপন দাশগুপ্তের নেতৃত্বে জেলার রাজনীতিতে বহু বিরোধী আন্দোলন সংগঠিত হয়। ২০০৫ সালের ২৪শে এপ্রিল আকবর আলির প্রয়ানের পর সে বছরই ২৩ শে জুলাই শারিরীক অসুস্থতার কারনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন রবীন বাবু। ফলে ৯০ এর দশকে জেলা কংগ্রেসের ত্রিনয়নের মধ্যে আজ বর্তমান শুধু তপন দাশগুপ্ত। তৃণমূলে যোগদানের পর তপনবাবু ২০১১ সাল থেকে একদা রবীনবাবুর নির্বাচনী এলাকা বাঁশবেড়িয়া (অধুনা সপ্তগ্রাম) বিধানসভার বিধায়ক।
শেওড়াফুলিতে তৃণমূলের উদ্যোগে আকবর আলি খন্দকারের মূর্তি বসলেও রবীনবাবু কিন্তু ছিলেন তিমিরেই। যদিও জেলার বিভিন্ন প্রান্তে রবীন মুখার্জীর স্মরনে তৃণমূল বিভিন্ন কর্মসুচি করলেও আগামি প্রজন্মের কাছে রবীনবাবুকে বাঁচিয়ে রাখতে সেভাবে কোন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়নি। দীর্ঘ ১৭বছর পর হুগলীর সাহাগঞ্জে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের সামনে রবীনবাবুর মূর্তি প্রতিষ্ঠা হলো। উদ্বোধক তথা অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার (তপন)। এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রন না পেয়ে বৃহস্পতিবারই আক্ষেপ প্রকাশ করেছিলেন রবীনবাবুর সহধর্মিনী তথা বিগত নির্বাচনের আগে বিজেপিতে নাম লেখানো সুমা মুখার্জী। যদিও সেবিষয়ে চুঁচুড়ার বিধায়ক বলেছিলেন সুমাদেবী বিজেপিতে যোগদান করেছেন। তাই তৃণমূলের অনুষ্ঠানে তাঁকে জানানো হয়নি। কিন্তু শুক্রবার জানা গেলো রবীন মুখার্জীর মূর্তি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে সপ্তগ্রামের বিধায়ক তপন দাশগুপ্তকেও আমন্ত্রন জানানো হয়নি। এদিন সকালে চুঁচুড়া ঘড়ির মোড়ে বিগত দিনে রবীন মুখার্জীর পার্টি অফিস হিসাবে পরিচিত কার্যালয়ে গিয়ে রবীনবাবুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত।
তপনবাবু বলেন আমাকে মূর্তি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তাই সেখানে যাওয়ার প্রশ্নই নেই। পাশাপাশি তপন দাশগুপ্ত বলেন আমি হুগলি জেলায় রাজনীতি করা ছেলে, চুঁচুড়ায় আমি উড়ে আসেনি। এদিন বিকেলে রবীন মুখার্জীর মূর্তি উদ্বোধন করেন বিধায়ক অসিত মজুমদার। উপস্থিত ছিলেন দুই মন্ত্রী ডাঃ রত্না দে নাগ ও ইন্দ্রনীল সেন, তৃণমূলের হুগলী জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব সহ তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তপন দাশগুপ্তকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানো প্রসঙ্গে অসিত মজুমদারের বক্তব্য শনি পুজোয় সবাই যায়, যারা আমন্ত্রনের কথা বলেন তাঁরা রবীন মুখার্জীকে শ্রদ্ধা করেন না। এদিকে তপন দাশগুপ্তের চুঁচুড়ায় উড়ে না আসা প্রসঙ্গে অসিত মজুমদারের বক্তব্য কেউ উড়ে এসে জুড়ে বসেনি, ও (তপন দাশগুপ্ত) ইতিহাস কিছু জানেনা। সবাই বাংলার সন্তান, সবাই হুগলী জেলার সন্তান।