এই মুহূর্তে জেলা

মাধ্যমিকে ৬৯৪ নম্বর পেয়ে আরামবাগের মুখ উজ্জ্বল করলো কৌস্তভ।

মহেশ্বর চক্রবর্তী , ২০ জুলাই:- আরামবাগ শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দুরে একটি প্রত্যন্ত গ্রামে অবস্থিত কাপশীট হাইস্কুল। এই স্কুল থেকে এবার মাধ্যমিকে ৬৯৪ নম্বর পেয়ে পাশ করেছে কৌস্তভ কুন্ডু। তার এই সাফল্যে মুখ উজ্জ্বল হয়েছে স্কুল থেকে শুরু করে জেলাবাসী ও তার পরিবারের সদস্যদের। আরামবাগের একটি ছোট গ্রাম থেকে কৌস্বভ কুন্ডু মাধ্যমিকে এই রখম ফলাফল করায় তাক লাগিয়ে দিয়েছে এলাকায়। সাতশোর মধ্যে সে পেয়েছে ছশো চুরানব্বই নম্বর। ভালো ফল হবে এমনটা আশা করেছিলেন বাবা-মা থেকে শুরু করে স্কুলের শিক্ষকদের সকলেই। সবার সেই আশাকে সত্য প্রমাণ করে জেলার মুখ উজ্জ্বল করেছে কৌস্তভ। কৌস্তভের মার্কশিটে দেখা যাচ্ছে, তিনটি বিষয়ে সে একশোয় একশো পেয়েছে। পদার্থ বিদ্যায় সে একশোর মধ্যে একশ নম্বর পেয়েছে। একইভাবে জীবন বিজ্ঞান এবং ভূগোলেও সে একশো করে নম্বর পেয়েছে। ইংরেজিতে সে পেয়েছে সাতানব্বই। বাংলায় পেয়েছে নিরানব্বই নম্বর। ইতিহাসে সে পেয়েছে নিরানব্বই।গনিতে নিরানব্বই পেয়েছে কৌস্তুভ।

তার এই ফলাফলে খুশি স্কুলের শিক্ষকরা। ফল প্রকাশিত হওয়ার পরই আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গুনোধর খাঁড়া ও কর্মাধ্যক্ষ শুনিল সামন্ত তার বাড়িতে গিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান। এই ফলাফল কিভাবে হলো প্রশ্ন করাতে কৌস্তুভ হাসি মুখে জানায়, বাড়িতে প্রত্যেকদিন দশ ঘন্টা করে পড়াশোনা করতাম। করোনা পরিস্থিতি হওয়ায় সেই ভাবে পরীক্ষা না হলেও পড়াশোনার জন্য স্কুল শিক্ষক ও টিউশন শিক্ষকেরা সব সময় সাহায্য করতেন। বাবা ও মা সব সময় পড়াশোনার বিষয়ে নজর দিতেন ও অনুপ্রাণিত করতেন। অনলাইনে প্রতিটি ক্লাস আমি করেছি। প্রতিটি বিষয় খুঁটিয়ে পড়ারা পাশাপাশি প্রত্যক বিষয়ের শিক্ষকরা যেমন ভাবে গাইড করতেন সেই ভাবে পড়াশোনা করেছি।ভবিষ্যতে মেডিকেল দিয়ে ডাক্তার হতে চাই বলে জানায় কৌস্তব।পাঠ্য বইয়ের মধ্যে জীবন বিজ্ঞান পড়তে তার খুব ভালো লাগে। অবসর সময়ে মোবাইল না দেখে গল্পের বই, ছবি আঁকাতে ব্যস্ত থাকতো কৌস্তভ।অন্যদিকে এই বিষয়ে কৌস্তুভের বাবা সন্দীপ কুন্ডু জানান, বাবা হিসাবে ছেলের রেজাল্টে আমি গর্বিত। ওর দিদিও রাজ্যের মধ্যে ষষ্ঠস্থান পেয়েছিলো।সে ডাক্তারি পড়ছে। ছেলের ইচ্ছা আছে ডাক্তারি পড়ার।

আমি সময় ওর মনের জোর বাড়াতাম। স্কুল যেতে না পাড়লেও কাপশীট হাইস্কুলের শিক্ষকেরা অনলাইনে সব সময় গাইড করেছেন।পাশাপাশি কাপশীট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মুরারি মোহন ঘোষ জানান, এ বছর ৬৯৪ পেয়েছে কৌস্তুভ কুন্ডু, ৬৮৬ পেয়েছে কৌশিকী কুন্ডু ও ৬৭৩ নম্বর পেয়েছে তিন জন। কাপশীট হাইস্কুলে এবছর দশ জন ছয়শোর ওপর নম্বর পেয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম কৌস্তভ ভালো রেজাল্ট করবে। আমাদের আশা পুরন হয়েছে। ওর ভবিষ্যতে খুবই উজ্জ্বল। এই ভাবে পড়াশোনা করলে অনেক দুর এগিয়ে যাবে।স্কুলের সমস্ত শিক্ষকদের একটি সম্মেলিত প্রয়াসে কাপশীট হাইস্কুলের সামগ্রিক রেজাল্ট ভালো হয়েছে। অপরদিকে এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবী শুনিল সামন্ত বলেন, কৌস্তভের পরিবারে পড়াশোনার পরিবেশ অসাধারণ। ওর দিদিরাও মেধাবী ছাত্রী। ওর রেজাল্টে আমরা খুব গর্বিত। সবমিলিয়ে এদিন মাধ্যমিকে প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে কৌস্তভ ভালো রেজাল্ট করায় খুশির জোয়ার আরামবাগ জুড়ে।