কলকাতা, ১৭ জুলাই:- জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পেশ করা পক্ষপাত দুষ্ট রিপোর্টের মুখের মত জবাব দিতে প্রস্তুত হচ্ছে রাজ্য সরকার। কলকাতা হাইকোর্টে পেশ করা ওই দীর্ঘ রিপোর্টে যেভাবে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে নেতিবাচক ভাবে তুলে ধরা হয়েছে এবং রাজ্যের নেতা মন্ত্রীদের ও নজির বিহীনভাবে দুষ্কৃতী আখ্যা দেওয়া হয়েছে তাতে একই সঙ্গে বিস্মিত এবং ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার। তাই ওই রিপোর্ট পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করে তার ফাঁকফোকর গুলি চিহ্নিত করে মুখের মত জবাব দিতে প্রস্তুত হচ্ছে নবান্ন। সূত্রের খবর, এই রিপোর্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক স্তরে পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। শুক্রবার স্বরাষ্ট্রসচিব ভগবতী প্রসাদ গোপালিকা একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করে ওই রিপোর্টের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করেন।
তবে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পাতার দীর্ঘ ওই রিপোর্ট পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খতিয়ে দেখা সময়সাপেক্ষ। তাই কিছুটা সময় নিয়ে সবিস্তারে পর্যালোচনা করার পরেই এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের ঘুরে দেখে একটি রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রিপোর্টই বৃহস্পতিবার আদালতে জমা পড়ে। যা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহলে সাড়া ফেলে দিয়েছে। কেননা জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সেই রিপোর্টে উল্লেখ করে, “রাজ্যে আইনের শাসন নেই। শাসকের ইচ্ছাই এখানে আইন।” এমনকী, রাজ্যের একাধিক প্রথম সারির তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীদের ‘কুখ্যাত দুষ্কৃতী’ হিসেবেও উল্লেখ করা হয়।
সূত্রের খবর, এই রিপোর্ট পাওয়ার পরই রাজ্য সরকারও তৎপরতা শুরু করেছে। আগামী ২২ জুলাই রাজ্য সরকারকে আদালতে এই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে আদালতে সরকারপক্ষকে জবাবদিহি করতে হবে। যেহেতু হাতে সময় কম এবং অভিযোগের তালিকা সুবিশাল, তাই পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টের জবাব দিতে আদালতে কিছুটা অতিরিক্ত সময়ও চাওয়া হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। শুক্রবারের বৈঠকে স্বরাষ্ট্র সচিব দপ্তরের অন্যান্য শীর্ষকর্তা এবং জেলাস্তরে পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে এ প্রসঙ্গে মতবিনিময় করেন। সূত্রের খবর সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে মানবাধিকার কমিশনের তোলা প্রতিটি অভিযোগের যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ সহ মুখের মত জবাব দেওয়া হবে। স্বরাষ্ট্র সচিবের পৌরহিত্যে ওই বৈঠকের এই বিষয়টির রূপরেখা প্রস্তুত করা হয়েছে।