হুগলি, ১২ জুলাই:- করোনা পরিস্থিতিতে এ বছর হচ্ছে না মাহেশে ৬২৫ বছরের রথযাত্রা। টান পড়বে না রথের রশিতে। ঘুরবে না রথের চাকা। তবে নিয়মমেনে হচ্ছে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার পুজো অর্চনা। আজ থেকে ৬২৫ বছর আগে সর্বত্যাগী সন্ন্যাসী স্বামী ধ্রুবানন্দ মাহেশের যে রথের প্রবর্তন করেছিলেন তা আজও আবহমান কাল জুড়ে হয়ে আসছে মাহেশ ধামে। প্রতিবছর এই রথযাত্রা উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই পশ্চিমবঙ্গের বাইরে থেকেও লক্ষ লক্ষ মানুষ ছুটে আসেন এই রথযাত্রা প্রত্যক্ষ করতে প্রভু জগন্নাথের আশীর্বাদ নিতে যুগ যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই উৎসবে চৈতন্যদেব, ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, ঠাকুর রামকৃষ্ণদেব, মা সারদামনি, থেকে বহু মনীষীর পদধূলি পড়েছিল কোন না কোন সময়ে এই রথযাত্রা উপলক্ষে।
এই রথ উৎসবকে ঘিরে এখানে অনুষ্ঠিত হয় একমাস ব্যাপী বিশাল মেলা। দোকানিরা হরেকরকম পসরা নিয়ে এই মেলায় হাজির হন ব্যবসার উদ্দেশ্যে। প্রতিদিনই প্রচুর মানুষ এসে জমা হয় মেলা প্রাঙ্গণে। কিন্তু গত দু’বছর ধরে সারা পৃথিবী জুড়ে করোনার মহামারীর মানব সমাজকে গ্রাস করেছে, তা থেকে রেহাই পায়নি আমাদের দেশ এবং আমাদের রাজ্য ও ফলে সমস্ত কিছু থমকে গেছে। থমকে গেছে মাহেশের রথ উৎসবও। তাই বিগত বছরগুলির মতো নেই কোনও ব্যাস্ততা। স্নানপিঁড়ির মাঠে বসেনি কোনো মেলার স্টল। মন্দির ট্রাস্টের সম্পাদক পিয়াল অধিকারী জানিয়েছেন, নিয়ম রীতি মেনেই রথের দিন সকালে তিন বিগ্রহকে মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে বের করে মন্দিরের চাতালে রাখা হবে।
কোভিদ বিধি মেনেই মন্দিরে প্রবেশ অধিকার থাকবে ভক্তদের। বিকাল সাড়ে তিনটেয় জগন্নাথ বলরাম এবং সুভদ্রাকে মন্দিরের চাতাল থেকে মূল মন্দিরের পাশেই অস্থায়ী মাসির বাড়ি করে নিয়ে যাওয়া হবে প্রভু জগন্নাথ বলরাম এবং সুভদ্রাকে। সেখানেই ৯ দিন অবস্থান করবেন তাঁরা। বেলা চারটের সময় জগন্নাথ দেবের প্রতিভূ হিসেবে নারায়ণ শিলাকে রথের চারিদিকে তিনবার প্রদক্ষিন করিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে জগন্নাথ মন্দির থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে মূল মাসীর বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর নয়দিন সেখানেই চলবে নারায়ণ শিলার পূজা অর্চনা এর পর উল্টোরথের দিন পুনরায় নারায়ণ শিলাকে যথাযথ মর্যাদায় মাহেশের মূল মন্দিরে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হবে।