এই মুহূর্তে কলকাতা

আপাত শান্তিতে ষষ্ঠ দফা , তবুও এড়ানো গেলনা রক্তপাত।

সোজাসাপটা ডেস্ক , ২২ এপ্রিল:- বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া রাজ্যের ষষ্ঠ দফার নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পর্ব শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছে। দিনভর মেঘলা মনোরম আবহাওয়ায় মানুষ ভোট দিয়েছেন উৎসবের মেজাজে। এরই মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে হলেও কিছু অশান্তির অভিযোগ এসেছে নির্বাচন কমিশনের কাছে। হাবড়া, অশোকনগর বাগদায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে ভোটারদের মারধর, প্রভাবিত করা ভয় দেখানো এমনকি গুলি চালনারও অভিযোগ এসেছে। নির্বাচন কমিশন অবশ্য গুলি চালনার অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে।উত্তর ২৪ পরগণা ও পূর্ব বর্ধমান থেকে সবথেকে বেশি রাজনৈতিক সংঘর্ষ গুলি-বোমাবাজির অভিযোগ এসেছে।তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কাঁচরাপাড়া, খড়দা, টিটাগর এর মত এলাকা।৪ জেলার মোট ৪৩টি আসনে ভোট পড়েছে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত গড়ে ৮০ শতাংশের মতো। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানান। তবে দু একটি অশান্তির ঘটনা ঘটেছে বলেও জানান তিনি।

এদিন নির্বাচনে হিংসা ছড়ানো ও ১৪৪ ধারা ভঙ্গের জন্য মোট ১৯৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ জন ১৪৪ ধারা ভঙ্গের জন্য, অন্যান্য কারণের জন্য ১৬ জন, ও হিংসা ছড়ানোর জন্য ১৬২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদিকে ষষ্ঠ দফার নির্বাচনে হিংসা ছড়ানোর আশঙ্কায় আগে থেকেই ৩৯২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিন ব্যারাকপুরের খড়দা থানা এলাকার অন্তর্গত ১০৮ নম্বর বুথে বোমা ফেলার অভিযোগের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছে তারা হাসপাতলে ভর্তি। পাশাপাশি বাগদায় সেক্টর অফিস এর ওপর হামলার অভিযোগে রাজ্য পুলিশ তিন রাউন্ড গুলি চালিয়েছে বলেও জানায় কমিশন। এ বিষয়ে এডিজি আইন-শৃঙ্খলা পি জগমোহন জানান ৩৫ ও ৩৬ নম্বর বুথের বাইরে কোনো এক রাজনৈতিক দলের প্রায় আড়াইশ’ রাজনৈতিক প্রতিনিধি সেক্টর অফিসের ওপর হামলা চালায়। তাদের সরাতে গিয়ে ওসি ও একজন কনস্টেবল আহত হয়। অভিযোগ ওসি ও কনস্টেবল এর মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়।

তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যদিকে ওই ঘটনায় বুদ্ধ সাঁতরা নামে ব্যক্তির হাতে বুলেট লাগে। অন্যদিকে মৃত্যুঞ্জয় সাঁতরা নামে আর এক জন আহত হয়। কিন্তু সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। বুলেটের আঘাতে আহত হয়েছেন কিনা তা এখনও জানা যায়নি।ষষ্ঠ দফার ভোটে নির্বাচন কমিশনের পাখির চোখ ছিল ব্যারাকপুর। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সময় রাজ্যের নির্বাচনী হিংসার আঁতুড়ঘর ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বিধানসভা কেন্দ্রগুলোতে ভোট পর্ব শান্তিপূর্ন করা ছিল কমিশনের সামনে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ। সেই মত প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল। শুধুমাত্র ব্যারাকপুর এর জন্য মোতায়েন করা হয়েছিল ১০৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। নিয়োগ করা হয় একজন বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক। তা সত্ত্বেও ভোটের দিন অশান্তি পুরোপুরি এড়ানো গেল না। বিক্ষিপ্ত ভাবে হলেও সকাল থেকেই দফায় দফায় অশান্তির খবর মিলেছে এই অঞ্চল থেকে।

তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কাঁচরাপাড়া, খরদা টিটাগর এর মত এলাকা। কাঁচরাপাড়া তৃণমূল কংগ্রেসের ক্যাম্প অফিস ভাঙ্গা কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। একই অভিযোগে খরদার বন্দিপুরে দুই দল একে অপরের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলেছে। টিটা গড়ের মিলনগড়ে দু’পক্ষের মধ্যে বোমাবাজিতে আহত হয়েছেন তিনজন বিজেপি কর্মী। ব্যারাকপুরের শাঁখারী পাড়ায় তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষ আটকাতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে লাঠি চালাতে হয়। তবে তুলনামূলক শান্ত রয়েছে লোকসভা ভোটে অশান্তির শীর্ষে থাকা ভাটপাড়া, জগদ্দল বিধানসভা কেন্দ্র এলাকা। সেখানে ভোটঅনেকটাই নিরুপদ্রব এবং মসৃণ।
আমডাঙার রংমহলে বুথের কিছুটা দূরে দূরে ৩টি তাজা বোমা উদ্ধার হওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়ায়।