খড়্গপুর , ৩০ মার্চ:- দ্বিতীয় দফার ভোটের প্রচারে রেলশহর খড়্গপুরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনায় মুখর হলেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। মঙ্গলবার বিকেলে খড়্গপুরের গিরিময়দান স্টেশন সংলগ্ন একটি রেলের কমিউনিটি হলে প্রার্থী হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থনে সভা করেন রেলমন্ত্রী। সভার পোষাকি নাম ‘বিশেষ বৈঠক: ভিসন ফর বেঙ্গল’ রাখা হলেও আদতে তা ছিল রাজনৈতিক মঞ্চ। এদিন রেলমন্ত্রী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, ‘ উনি একটা নন্দীগ্রাম সামলাতে পারছেন না, পশ্চিমবঙ্গ কি ভাবে সামলাবেন? নন্দীগ্রামের মানুষ দিদিকে এবার মুহতোড় জবাব দেবেন।’ তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যখন নন্দীগ্রামে রয়েছেন সেইসময় সেখানে বিজেপি কর্মীর স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হচ্ছে। এটা বাংলার লজ্জা নয়? তিনি বলেন, বুয়া-ভতিজার সরকার আর চলবে না। বাংলার মহিলাদের সম্মান নিয়ে টানাটানি আর চলবে না, বেকারত্ব চলবে না, সিন্ডিকেট, তোলাবাজি, হিংসার রাজ চলবে না। তিনি মানুষকে নির্ভয়ে মতাধিকার প্রয়োগের আহ্বান করে বলেন, সমস্ত বুথে আধা সেনা রয়েছে। চিন্তা নেই, নিশ্চিতে ভোট দিন।পীযূষ বলেন, পিসি ভাইপোর সরকারের বিদায় ঘন্টা বেজে গিয়েছে। প্রথম দফার নির্বাচনে ৩০ আসনে মানুষ নিজেদের রায় দিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলায় বিজেপির সরকার প্রতিষ্ঠা হলে আপনাদের দুর্গাপুজো, সরস্বতী পুজোর জন্য আদালতে ছুটতে হবে না। এদিন ডাবল ইঞ্জিনের সরকারের পক্ষে সওয়াল করে রেলমন্ত্রী বলেন,
কেন্দ্রে বিজেপির সরকার আর পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সরকার। এই দুই ডাবল ইঞ্জিন মিলে ডাবল স্পিডে বাংলার উন্নয়নের কাজ করবে।’ তিনি বলেন, খড়্গপুর আইআইটির পরে রেলশহরের উন্নয়ন থমকে গেছে। কংগ্রেস, বামফ্রন্ট ও তৃণমূলের সদিচ্ছার অভাবে রেলশহর মডেল শহর হিসেবে গড়ে ওঠেনি। বিজেপি এই কাজ সম্পূর্ণ করবে।’ এদিন রেলমন্ত্রীর মুখে রাজ্য রাজনীতির পাশাপাশি রেল মন্ত্রকের কাজকর্মের খতিয়ানের কথা শোনা গিয়েছে। এদিন খড়্গপুরের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য হিরণ্ময়কে জয়ী করার আহ্বান করেন রেলমন্ত্রী। এদিন রেলমন্ত্রী অভিযোগ করেন, বিরোধীরা রেলের নামে মিথ্যা প্রচার করছে। তিনি বলেন, খড়্গপুরে বহু রেলবস্তি রয়েছে। সেখানে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন সহ জল, বিদ্যুৎ, পাকা বাড়ি তৈরি করা হবে। রেলবস্তি থেকে একজনকেও উচ্ছেদ করা হবে না। পিপিপি মডেলে বস্তি এলাকায় প্রধানমন্ত্রী আবাস প্রকল্পের বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। এজন্য রাজ্য সরকারের সহযোগিতা চাই। তাই বিজেপি ক্ষমতায় এলে এসব কাজে গতি আসবে বলে মন্তব্য করেন রেলমন্ত্রী। তিনি তৃণমূল সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে বলেন, রাজ্যে রেলের ৫৩ টি প্রকল্পের কাজ চলছে। এর মধ্যে ১৩ টি প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার জমি দিচ্ছে না। কাজ শুরু না হওয়ার জন্য উল্টে রেলকে দোষারোপ করা হচ্ছে। রেলকর্মীদের অাশ্বস্ত করে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘ রেল ভারতের সম্পত্তি। ভারত মাতার সম্পত্তি। রেল কোনও দিন বেসরকারি হাতে যাবে না।’ তবে রেলের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য পিপিপি মডেলে প্রকল্প গড়তেই হবে। ভালো প্লাটফর্ম, গতিসম্পন্ন ট্রেন, সুন্দর কোয়ার্টার প্রভৃতি তৈরির জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। এদিন খড়্গপুর ওয়ার্কশপের আধুনিকীকরণের আশ্বাস সহ বস্তি এলাকাগুলিকে পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রেলমন্ত্রী।