লোকনাথ সাহা , ১৪ মার্চ:- কথায় আছে, সকাল দেখেই দিনটা কেমন কাটবে তার একটা পূর্বাভাষ পাওয়া যায়। তবে সবক্ষেত্রে মনে হয় এটা সত্যি নয়। নইলে আইএসএল ২০২১ ফাইনালে এটিকে মোহন বাগান যেভাবে শুরু করেছিল, মুম্বই সিটি এফসির অতি বড় সমর্থকও বোধ হয় ভাবতে পারেননি যে, এই ম্যাচ জিতবে মুম্বই। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস, খানিক ভুল বোঝাবুঝি এবং একগাদা গোল নষ্টের খেসারত হিসেবে প্রায় জেতা ম্যাচ মাঠে রেখে এল এটিকেএম্বি। ম্যাচে আধিপত্য নিয়েই শুরু করে সবুজ মেরুন বাহিনী। নিজেদের মধ্যে একাধিক পাস খেলে প্রতিপক্ষ বক্সে বারবার হানা দিতে থাকে তারা। বারো মিনিটে জাভির অনবদ্য ফ্রি কিক ক্রসবারে লেগে বাইরে যায়। ১৮ মিনিটে কেবল প্রেসিং করেই মুম্বই ডিফেন্স কে ভুল করাতে বাধ্য করে কৃষ্ণারা। আহমেদ জাহুর থেকে বক্সের বাইরে ফাঁকায় বল পেয়ে যান ডেভিড উইলিয়ামস। তার নেওয়া ট্রেসার বুলেট শট অমর্রন্দরকে নড়তে না দিয়ে গোলে ঢুকে যায়।
এক গোলে এগিয়ে ম্যাচ নিজেদের কন্ট্রোলে নিয়ে নিয়েছিল হাবাসবাহিনী। কিন্তু ২৮ মিনিটে নিজেদের বক্স থেকে লম্বা বল পাঠান জাহু। সেই নির্বিষ বল বিপিন সিং এর চাপে বক্সের বাইরে থেকে লাফিয়ে ব্যাকহেড করেন তিরি। অরিন্দম খানিক এগিয়ে থাকায়, সেই হেড তার নাগাল এড়িয়ে চলে যায় গোলে। সমতায় ফেরে মুম্বই। এরপর মুম্বাই মুহুর্মুহু আক্রমণ শানাতে থাকে। দুটি ক্ষেত্রে অবধারিত গোল বাঁচিয়ে ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন এটিকে মোহনবাগানের গোলরক্ষক অরিন্দম। ১-১ ফলে শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা। দ্বিতীয় অর্ধের শুরু থেকে দুদলই রক্ষণ সামলে আক্রমণ করতে থাকে। এই সময় দুদলই বেশ কিছু গোলের সুযোগ তৈরী করলেও গোল পায়নি। জাভির একটি ফ্রিকিক গোলে গেলেও রেফারি অফসাইড দেন। সে সিদ্ধান্ত নিয়ে যদিও বিতর্ক রয়েছে।
ম্যাচের শেষ লগ্নে ৮৬ মিনিটে অরিন্দম ভট্টাচার্য মারাত্মক ভুল করে বসেন। বুক দিয়ে বল নামাতে গিয়ে তুলে দেন মুম্বই এর ওগবেচের পায়ে। ওগবেচে দুজন বাগান ডিফেন্ডার কে কাটিয়ে ঠান্ডা বল ব্যাকপাস দেন বিপিন সিং কে। ঠান্ডা মাথায় প্রায় ফাকা গোলে মাটিঘেষা জোরালো শটে গোল করেন বিপিন সিং। এটিকে মোহন বাগান এর চ্যাম্পিয়ন হবার যাবতীয় আশাও সেই সঙ্গে শেষ হয়ে যায়। পাঁচ মিনিট অতিরিক্ত সময়ে দুটি কর্নার আদায় করলেও তা থেকে গোল পায়নি এটিকেএম্বি। ফলস্বরূপ “ভালো খেলিয়াও পরাজিত” তকমা তেই সন্তুষ্ট থাকতে হল তাদের। ম্যাচের সেরা হন বিপিন সিং। ম্যাচে মাথায় গুরুতর চোট পেয়ে আহত হন মুম্বই এর রানাওয়ারে। তাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী তিনি স্থিতিশীল আছেন।