এই মুহূর্তে জেলা

বিষ্ণুপুরে নতুন ফুটওভার ব্রিজ এবং নবনির্মিত ৩ নম্বর স্টেশনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে সৌমিত্র খাঁ।

বিষ্ণুপুর, ২৭ জানুয়ারি:- মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে শেষ পর্যন্ত বিষ্ণুপুর রেল স্টেশনে সহজভাবে পার হওয়ার জন্য নতুন ফুটওভার ব্রিজ এবং নবনির্মিত ৩ নম্বর স্টেশনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল। বুধবার ওই দুটি প্রকল্প আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করলেন বিষ্ণুপুর বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। ছিলেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিআরএম নবীন কুমার সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। পর্যটনকেন্দ্র বিষ্ণুপুরে আসার জন্য অধিকাংশ মানুষ নির্ভর করেন ট্রেনের উপর। এই স্টেশনেই আবার জড়িয়ে রয়েছে সারদা মায়ের স্মৃতি। বাঁকুড়া জেলার জয়রামবাটি থেকে কলকাতায় যাওয়ার জন্য সারদা মা এই স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে যাতায়াত করতেন। জয়রামবাটি থেকে দীর্ঘ পথ গরুর গাড়িতে আসার ধকল সামলাতেন স্টেশনের মাঝে একটি কাঠাল গাছের নিচে বসে। সেই পবিত্র কাঠাল গাছটিকে রেল দফতর থেকে সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছে এবং সেখানেই সারদা মায়ের একটি স্মৃতিসৌধ করা হয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি বিষ্ণুপুর রেল স্টেশনকে আধুনিক মানের গড়া হয়েছে। কিন্তু যাত্রীদের স্টেশনে যাওয়ার জন্য অত্যন্ত খাঁড়াই সাবেক কালের ফূট ওভার ব্রিজটির জন্য মানুষদের অত্যন্ত কষ্ট করে পারাপার করতে হচ্ছিল। বিশেষ করে বয়স্ক এবং অসুস্থ রোগীদের নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে মানুষদের চরম নাজেহাল হতে হত। তাই রেলের নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে সহজে ওঠার মত সিঁড়ি বা ফুট ওভার ব্রিজ তৈরির দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

এবার সেই বিস্তৃত সিঁড়ি যুক্ত নতুন ফুট ওভার ব্রিজ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হল। এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিজের উদ্বোধন করে সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বলেন ‘আমি সাংসদ হওয়ার পরেই লোকসভার অধিবেশনে বিষ্ণুপুর স্টেশনের জন্য একটি নতুন ফুট ওভার ব্রিজ তৈরির প্রস্তাব জানিয়ে ছিলাম। আমার প্রস্তাবকে মান্যতা দিয়ে রেল দফতর ব্রিজ তৈরির অনুমোদন দেয়। এই ফুট ওভার ব্রিজ দিয়ে বয়স্ক মানুষরাও সহজে উঠে যেতে পারবেন। এছাড়া টেরাকোটা নগরীর এই গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনটিকে সম্পূর্ণ টেরাকোটার কাজ দিয়ে সাজিয়্র তোলার পাশাপাশি এখানে একটি চলমান সিঁড়ি ও একটি লিফট নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি সেই কাজ শুরু করা যাবে। দীর্ঘ লকডাউনের পর রেল পরিষেবা চালু হলেও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনে পুরুলিয়া-কলকাতা রুটে মাত্র ১টি ট্রেন চালু করা হয়েছে। রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস সহ শালিমার আদ্রা আরন্যক এক্সপ্রেস, রাঁচি-হাওড়া ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, খড়্গপুর-রাঁচি প্যাসেঞ্জার, লালমাটি এক্সপ্রেস সহ একাধিক লোকাল ট্রেন এখনো বন্ধ করে রাখায় সাধারণ মানুষদের চরম অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। এছাড়াও দীর্ঘদিনের ট্রেন চক্রধরপুর-হাওড়া প্যাসেঞ্জার সহ বেশ কয়েকটি লোকাল ট্রেনকে মেল/এক্সপ্রেসের তকমা লাগিয়ে ৩ গুণ ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়ায় মানুষের ক্ষোভ বেড়েছে। আদিন সাংসদকে কাছে পেয়ে মানুষ সেই ক্ষোভ উগড়ে দেন। বিষয়টি নিয়ে সৌমিত্র খাঁ বলেন ‘করোনা পরবর্তী পর্যায়ে রেলের কিছু রদবদল হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। আর ১৫-২০ দিনের মধ্যে আদ্রা ডিভিশনের সমস্ত ট্রেন চালু হয়ে যাবে। চক্রধরপুর-হাওড়া ট্রেনটির বিষ্ণুপুর স্টেশনে স্টপেজ তুলে দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। এই স্টেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এখানে ফের স্টপেজ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আমি রেলের সঙ্গে আলোচনা করব’।