এই মুহূর্তে খেলাধুলা

আসানসোলের মেয়ের বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার

প্রসেনজিৎ মাহাতো , ২২ নভেম্বর:- এক দিনের রাজা হওয়া যায় এমন একখানা দিনে। বয়েসের হিসেবও হয় আবার এই দিন এলেই। সে হোক। তবু জন্মদিন তো! কিন্তু কেউ যদি মনে মনে চায়, এবার জন্মদিনটা না আসলেই ভাল হত। তাহলে তাঁকে কী বলবেন? জীবন বিমুখ? না, অনেক সময় পরিস্থিতি মানুষের জীবনের সব হিসেব গোলমাল করে দেয়। ঠিক যেমন হয়েছে আসানসোলের মেয়ে অদ্রিজা সরখেলের সঙ্গে। তিনি মনে মনে একদিনের আনন্দ থেকে এবার দূরে থাকতে চাইছেন। কারণ, এই একদিনের আনন্দ তাঁর গোটা জীবনের স্বপ্ন ভেঙে টুকরো করতে পারে। এবার জন্মদিনে ১৭ তে পা দিলেন অদ্রিজা। আর এই বয়েশের হিসাবটাই তাঁকে ঠেলে সরিয়ে দেবে তাঁর লড়াইয়ের ট্র্যাক থেকে। দেশের জার্সিতে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন। যে স্বপ্ন বাস্তবের আকার নিতে আর কয়েকদিনের অপেক্ষা ছিল। কিন্তু এখন সেই স্বপ্নপূরণ আর অদ্রিজার মাঝে কয়েক মাইলের কাঁটা বিছানো পথ। সেই পথে আবার নিষ্ঠুর প্রহরীর মতো দাঁড়িয়ে রয়েছে বয়সের গোলমেলে হিসেব।

বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন নিয়ে হাড়ভাঙা প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছিলেন। কিন্তু কোভিড সংক্রমণে সেই স্বপ্নের বিসর্জন। অনূর্ধ্ব–১৭ মেয়েদের বিশ্বকাপ ২০২২ সালে পিছিয়ে যাওয়ায় ভারতের মহিলা ফুটবলারের স্বপ্ন ভেঙে খানখান। ভারতের কোচ থমাস ডেনারবির প্রশিক্ষণাধীনে যে সমস্ত ফুটবলাররা শিবিরে অংশ নিয়েছিলেন, তারা একপ্রকার হতাশ। ফিফার ঘোষণা অনুযায়ী, ২০২২ সালে মেয়েদের বিশ্বকাপ হলে ভারতের নির্বাচিত দলের অনেকেই খেলতে পারবেন না। কারণ, ২০২২ সালে বয়স হয়ে যাবে ১৭+, অথবা ১৮। বিশ্বকাপ খেলতে না পারার যন্ত্রণা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে ঝাড়খন্ডের সুমতি কুমারি, দিল্লির অভিকা সিংদের। প্রকাশ্যে কিছু না বলতে চাইলেও বিশ্বকাপ খেলতে না পারার দুঃখ মেনে নিতে পারছেন না।

এআইএফএফ সচিব কুশল দাস বলেন, ‘খুব সম্ভবত এই মেয়েরা খেলতে পারবে না ২০২২ সালের বিশ্বকাপে। বয়স বেড়ে যাবে। তবে ফিফার তরফে সরকারিভাবে আমাদের এখনও কিছু জানায়নি।’ ভারতের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে বাংলা থেকে সুযোগ পাওয়া একমাত্র ফুটবলার অদ্রিজা সরখেলের জন্মদিন ছিল বৃহস্পতিবার। শুভ দিনেও তঁার যে কতটা মন খারাপ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মামা শুভেন্দু ভট্টাচার্য বলেন,‘এআইএফএফের তরফে আমাদের এখনও কিছু জানানো হয়নি। তাই, আশা ছাড়ছি না এখনও। দেখা যাক কী হয়। এর বেশি কিছু বলব না।’ লকডাউনে সমস্যায় পড়েছিলেন অদ্রিজা। রাজ্য সরকারের তরফে তঁাকে সহযোগিতার হাত বাড়ানো হয়েছিল। বিশ্বকাপ পিছিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েও নিজের অনুশীলনে খামতি রাখেননি। পাড়ার মাঠে প্রস্তুতি জারি রেখেছেন।