এই মুহূর্তে জেলা

“করোনা থেকে মুক্তি হোক বিশ্ববাসী” , এই মন্ত্রেই মহাসপ্তমী শুরু চন্দননগরে।


সুদীপ দাস , ২১ নভেম্বর:- মা মহামারী করোনা থেকে মুক্তি দাও, মহাসপ্তমীতে এই প্রার্থনাতেই জগৎজননীর কাছে আরাধনা শুরু করলো চন্দননগরবাসী। সেই ১৯৮৪ সাল, তৎকালীন ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী ইন্দীরা গান্ধীর মৃত্যুর পর, আর মাঝে একটি বছরে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো কিছুটা জৌলুস হারিয়েছিলো। কিন্তু ২০২০ যেন সবকিছুকে ছাপিয়ে গেলো। কোলকাতা বনাম চন্দননগর পুজোর ক্ষেত্রেও অনেকটা সেরকম। চন্দননগরের সৃষ্টি আলোর দূর্গা পুজো আলোকিত করলো। বিপুল বাজেটের সাহায্যে সাবেকিয়ানা ভূলে কলকাতা মন্ডপসজ্জার পাশাপাশি প্রতিমাতেও থিমের ছোঁয়া আনলো। কিন্তু চন্দননগর মন্ডপ সজ্জায় থিমকে হাতিয়ার করলেও এঁদের সিংহভাগই সবেকিয়ানার সাথে বন্দি। চন্দননগরের প্রতিমা মানেই সুদৃশ্য-সুবিশাল, ডাকের সাজ সমৃদ্ধ জগৎজননী বলতে যা বোঝায় ঠিক তাই।

বাজেটের বিচারে কলকাতার কাছাকাছি না হলেও জগদ্ধাত্রীতে চন্দননগরে মানুষের জনসমাগম অনেককেই হার মানায়। কিন্তু এবার বাঁধ সেঁধেছে করোনা। চন্দননগর থেকে ভদ্রেশ্বর পর্যন্ত মোট ১৪টি নামজাদা পুজো কমিটি ঘট পুজোকেই বেছে নিয়েছেন। বাকি যে সমস্ত পুজোগুলি হচ্ছে তা মোটামুটি বললেই চলে। নেই সেভাবে আলোর জৌলুস। মন্ডপে সেভাবে নেই শিল্পীয়ানা। তবে যেখানে প্রতিমা আছে সেখানে আছে সাবেকিয়ানা। চন্দননগর বাগবাজার এবার ৩ডির দ্বারস্থ। কারন আদালতের নিয়ম মেনে সামান্য লোকের দ্বারা বিসর্জনের দিন এখানের সুবিশাল প্রতিমা লরিতে তোলা সম্ভব নয়।

তাই তাঁরা ঘট পুজো করে সেই ঘটকেই বিসর্জন দেবে। তবে দর্শকদের দুধের সাধ ঘোলে মেটাতে বাগবাজারের মন্ডপে এলে তাঁরা ৩ডি প্রতিমার আয়োজন করেছে। চন্দননগর তেমাথা গোটা শহরে এই কমিটিই সর্বোচ্চ প্রতিমা করে থাকে বলে জানা। তবে করোনা আবহে তাঁরাও এবারে প্রতিমার উচ্চতা কিছুটা কম করেছে। মানকুন্ডু সার্বজনীন বরাবরই বড় পুজো হিসাবে খ্যাত। আলোকসজ্জা থেকে মন্ডপ কিংবা প্রতিমা সবকিছুতেই টেক্কা দিত অন্য বারোয়ারিকে। কিন্তু এবারে তার সিকিভাগও নেই। তবে এবারের পুজোয় গোটা চন্দননগরবাসীর জগৎজননীর কাছে একটাই প্রার্থনা “মা করোনা থেকে জগৎকে রক্ষা মা”!! তাহলেই তো আসছে বছর আবার হবে মা।